
কেরলে পালিত হচ্ছে ওনাম উৎসব। প্রতি বছর অগস্ট- সেপ্টেম্বর মাসে পালিত হয় এই উৎসব। এ রাজ্যের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় উৎসব হল ওনাম। ওনাম থ্রু ওনাম বা থিরুভোনাম নামেও পরিচিত। দক্ষিণ ভারতের ক্যালেন্ডার অনুসারে, এটি চিংহাম মাসের মালয়াসি মাসে পড়ে। রাজা মহাবীর এই উৎসবের প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।
টানা ১০ দিন ধরে চলে এই উৎসবে। এই ১০ দিনের আলাদা আলাদা নাম আছে। তা অথম, চিথিরা, চেদি, বিশাকম, আনিজহাম, থ্রিকেটা, মুলম, পুরদাম, উথরাডম ও তিরুভোনাম নামে পরিচিত। সব কয়টি দিন পালিত হয় আলাদা আলাদা ভাবে। এবছর ওনাম উৎসব শুরু হয়েছে ৩০ অগস্ট। তা চলবে আজ অর্থাৎ ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
ওনাম উৎসবে খাওয়া দাওয়ার এক বিশেষ রীতি প্রচলিত আছে। কলা পাতায় করে এই সময় খাবার পরিবেশন করা হয়। এই সময় ২৬ প্রকার খাবার পরিবেশন করা বয়। সেই বিশাল ভোজ সকলের সঙ্গে বসে খাওয়ার রীতি আছে। এই উৎসবের দিন মহিলারা সাদা ও সোনালী পাড়ের শাড়ি পরেন। এটাই এই পুজোর রীতি।
পুরাণ মতে, অতীতে এক অসুররাজ মহাবলী কেরালায় রাজত্ব করতেন। তিনি ছিলেন বীর ও অত্যন্ত দানশীল, কর্তব্য পরায়ণ। রাজ্যের প্রতিটি মানুষের সুখ, দুঃখের দিকে তিনি খেয়াল রাখতেন। রাজ্যে কোনও অভাব ছিল না। রাজ্যের প্রতিটি মানুষ তাদের ভালোবাসতেন। এই সময় সকল দেবতারা বিষ্ণুর শরনাপন্ন হয় সেই অসুররাজতকে হত্যা করার জন্য। ভগবান বিষ্ণু বামন অবতারে মহাবলীর কাছে সাহায্য চাইতে আসেন। তিনি তিন পদক্ষেপ মাপের জমি চান। অসুর বিষ্ণুকে চিনতে না পেরে সেই প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। বিষ্ণু প্রথম পদক্ষেপে গোটা পৃথিবী অতিক্রম করেন। দ্বিতীয় পদক্ষেপে স্বর্গ ও পাতাল প্রদক্ষিণ করেন। তৃতীয় পদক্ষেপ ফেলার জায়গা না থাকায় মহাবলী নিজের মাথা পেতে দেন। বিষ্ণু পায়ে পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয় মহাবলীর। কিন্তু, মৃত্যু আগে বিষ্ণু তাঁকে বর দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, প্রতি বছর মহাবলী কেরলায় আসতে পারবেন। সেই থেকে মহাবলীর আগমন উপলক্ষ্যে পালিত হয় ওনাম উৎসব। এই সময় মহাভোজের আয়োজন, ফুলের আলপনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলা ও আরানামুলার বোট রেসে মধ্যে দিয়ে দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। সকলেই নিজের মতো করে পালন করেন এই উৎসব।
আরও পড়ুন- অসুর দমনের জন্য মা দুর্গা এই রূপেও আবির্ভূত হয়েছিলেন, জেনে নিন এই রূপের উপাসনা বিধি
আরও পড়ুন- পূর্বপুরুষ কত প্রকার, জেনে নিন পিতৃ দোষের লক্ষণ, প্রতিকার ও সম্পূর্ণ তথ্য