জন্মাষ্টমী হিন্দু ধর্মের একটি প্রধান উত্সব। এই দিনে কৃষ্ণ ভক্তরা উপবাস রাখেন। ঘরে ঘরে বিভিন্ন ধরণের খাবার তৈরি হয় গোপালের জন্য। পাশাপাশি বাড়ি এবং মন্দিরগুলি সাজানো হয়। শুধু দেশেই নয় দেশের বাইরেও মহাসমারোহে পালিত হয় এই জন্মাষ্টমী উৎসব। এই দিনটিতে শ্রীকৃষ্ণকে ৫৬ভোগ উত্সর্গ করার প্রথাও রয়েছে। এই ঐতিহ্যটি কবে থেকে শুরু হয়েছিল, সেই বিষয়ে উপযুক্ত কোনও তথ্য নেই। তবে যুগ যুগ ধরে এই ঐতিহ্য চলে আসছে। ধর্মীয় বিশ্বাস হ'ল ভগবান কৃষ্ণ ছাপ্পান ভোগে সন্তুষ্ট হন এবং ভক্তদের সমস্ত ইচ্ছা পূর্ণ হয়।
জনশ্রুতি অনুসারে, যখন ইন্দ্র ব্রজবাসীর উপর ভারী বৃষ্টিপাত করেন, তখন ভগবান কৃষ্ণ ব্রজবাসীদের রক্ষার জন্য গোবর্ধন পর্বতটিকে আঙ্গুলের উপরে তুলেছিলেন। শ্রী কৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতটিকে আঙ্গুলের উপরে সাত দিন ধরে রেখেছিলেন, এই সময়ে ব্রজ এবং প্রাণী পাখিরা গোবর্ধনের অধীনে আশ্রয় নেন। সাত দিন পরে, যখন বৃষ্টিপাত শেষ হয়েছিল, তখন তারা সকলেই গোবর্ধনের পর্বত থেকে বেরিয়ে আসেন।
এরপর মা যশোদা ভগবান কৃষ্ণকে দিনে আটবার খাবার দিতেন। একবার, কৃষ্ণ আটবারই খাবার খেয়ে খেতেন। মা যশোদা এবং সকলে মিলে আট ঘন্টা অনুসারে কৃষ্ণের জন্য জন্য ৫৬ রকমের ভোগ করেছিলেন। কথিত আছে যে এর পর থেকেই ৫৬ টি ভোগ দেওয়ার রীতি শুরু হয়েছিল।
এই ছাপান্ন ভোগে ভক্তরা তাঁদের নিজস্ব সাধ্য বা পছন্দ অনুযায়ী ভোগের সিদ্ধান্ত নেন। এই ৫৬ টি ভোগের মধ্যে মাখন মিশ্রি, ক্ষীর, বাদাম দুধ, টিক্কি, কাজু, বাদাম, পিঠা, রসগুলা, জালেবি, লাড্ডু, রাবড়ি, মালপুয়া, মোহনভোগ, চাটনি, মুং ডাল হালওয়া, পাকোড়া, খিঁচুড়ি, বেগুনী, নানা ধরণের শাক-সবজি রয়েছে , এছাড়াও ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। আবার অনেকে ভগবান কৃষ্ণকে ২০ ধরণের মিষ্টি, নানান ধরণের খাদ্য যেমন তালের বড় এবং নানা ধরণের শুকনো ফলও দেওয়া হয়।