কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট জোগাড় করে একসময় সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছিলেন, কিন্তু অপরাধ করে ধরা পড়ে এখন জেলে—এমন বেশ কয়েকজন সৌদিবাসী রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছে ঢাকা সরকার। বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকা ওই রোহিঙ্গারাই শুধু নয়, পাসপোর্ট নেই—এমন রোহিঙ্গাদেরও ফিরিয়ে আনতে সৌদি সরকার বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী রবিবার বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে ভার্চুয়াল বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা যাচ্ছে, সৌদি সরকার একদিকে যেমন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চাইছে, একই সঙ্গে সৌদিতে অবস্থানরত প্রায় ৫৪ হাজার রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য হাসিনা সরকারকে চাপ দিচ্ছে। ওই ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে না আনা হলে সৌদি আরবে বসবাসরত বৈধ ২২ লাখ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর হুমকিও দিচ্ছে সৌদি প্রশাসন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘৩০-৪০ বছর আগে, ১৯৭৭ সালের দিকে যখন রোহিঙ্গারা নির্যাতিত হচ্ছিল, তখন তৎকালীন সৌদি বাদশাহ ঘোষণা করেন যে তিনি অনেককে আশ্রয় দেবেন। তাই অনেক রোহিঙ্গা সৌদি আরবে যায়। এটি আশির দশকের প্রথম দিকে। এরা আজকে ৩০-৪০ বছর ধরে ওখানে আছে। ওদের ছেলে-মেয়ে ওই দেশে জন্ম হয়েছে, বড় হয়েছে। ওই দেশের সংস্কৃতি জানে, আরবি বলে। তারা কেউ বাংলা জানে না। বাংলাদেশে কোনো দিন আসেওনি। কিন্তু ওদের কোনো পাসপোর্ট নেই। ওখানেই আছে।’
এই বিষয়ে সৌদি আরহ মায়ানমারকে কেন বলছে না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট না দিলে ২২ লাখ বাংলাদেশিকে বহিষ্কারের হুমকির যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।