করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বেসামাল বাংলাদেশ, ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড মৃত্যু

  • করোনার প্রভাব বাড়ার পরই বাংলাদেশে প্রশ্ন উঠেছিল
  • মোকাবেলায় দেশটির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঠিক কতটা প্রস্তুত
  • সরকারি তথ্য জানাচ্ছে চিকিতসক ও পরিকাঠামোর অভাব যথেষ্ট 
  • গত চব্বিশ ঘণ্টায় বাংলাদেশে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর রেকর্ড
     

Tapan Malik | Published : Jun 13, 2020 2:33 PM IST

গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে নতুন করে আরও ৩,৪৭১ জন করোনায় আক্রান্ত, এই নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১,৫২৩, মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,০৯৫। এই তথ্য  জানিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ। 
বাংলাদেশের হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত শয্যা ও আইসিইউর অভাব রয়েছে। করোনার প্রভাব বাড়ার পরই তাই প্রশ্ন উঠেছিল জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় দেশটির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঠিক কতটা প্রস্তুত তা নিয়ে।  
 ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চের অন্যতম উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন জানান, ‘রোগীরা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এটা চরম হয়রানি। স্বাস্থ্য দফতর বলেছে, যদি কোনও হাসপাতাল রোগীকে ভর্তি না করে, তাহলে তারা সমাধান করবে। কোভিড হাসপাতাল হওয়ায় নন–কোভিড রোগীকে ঢাকা মেডিকেল ভর্তি করাতে পারবে না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তো অন্য হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই সব রোগীকে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করবে’। 
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যালাইড মেডিসিন ডিপার্টমেন্টকে করোনায় রুপান্তরিত করার পরিপ্রেক্ষিতে যাঁরা করোনা রোগী নন, সেই সব রোগীকে তো আমরা নিচ্ছি না। এটা অনেক আগের সরকারি নির্দেশনা।  তাদের সোরওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-সহ অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে’। 
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে ঢাকায় ৮টি হাসপাতালের নাম বলা হয়েছিল, কিন্তু ওই সব হাসপাতালি করোনা চিকিৎসা দেওয়ার মতো প্রস্তুতি এখনো পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি। ঢাকার বাইরে প্রতিটা জেলা শহরের হাসপাতালগুলিতেও নামেই আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রস্তুতির অভাব রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের প্রাক্তন পরিচালক বেনজীর আহমেদ বিবিসিকে বলেন, ‘ধরুন বাংলাদেশে ষোল কোটির মানুষের ১০ শতাংশের মধ্যেও যদি রোগটি ছড়ায়, আর তাদের মধ্যে যদি পয়েন্ট ফাইভ, পয়েন্ট ফোর বা পয়েন্ট ওয়ান পার্সেন্ট মানুষের অবস্থা গুরুতর হয়, তাহলে আমরা হাসপাতালে আর চিকিৎসা করতে পারবো না’। 
১৬ কোটি ৪৬ লক্ষ জনসংখ্যার দেশে স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৬৫৪টি, সেখানে মোট শয্যার সংখ্যা ৫১,৩১৬ আর বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৫,০৫৫টি, যেখানে মোট শয্যার সংখ্যা ৯০,৫৮৭।
হিসাব অনুযায়ী প্রতি ১,১৫৯ জনের জন্য হাসপাতালে একটি শয্যা থাকলেও সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট আইসিইউ মাত্র ১,১৬৯টি। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসকের সংখ্যা বর্তমানে ২৫,৬১৫ জন। সরকার যদিও বলছে, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় তারা সব প্রস্তুতি নিয়েছেন, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। 

Share this article
click me!