সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু কোনভাবেই যেন মেন নিতে পারছেন না গোটা বিশ্ব। তার মৃত্যুর এত দিন পার হয়ে গেলেও একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত। এই খবর নিয়ে ধোঁয়াশা ক্রমশ বাড়ছে। সত্যিই কি মানসিক চাপ থেকেই আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পনা মাফিক খুন? এই নিয়ে সকলের মনে দানা বেঁধেছে হাজারো রহস্য। সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার ঘটনায় এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী।
আরও পড়ুন-টিকটক বন্ধ করে রোজগার কেড়ে নিল সরকার, টুইটারে ফুঁসে উঠলেন নুসরত...
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মনোজ নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পেশাগত কারণেই বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী। তিনবার ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় সুযোগ না পেয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন অভিনেতা। নিজের জীবনের ব্যক্তিগত কথাই তুলে ধরেছেন অভিনেতা। দেখে নিন পোস্টটি।
অভিনেতা মনোজ জানিয়েছেন, বিহারের এক কৃষক পরিবারের ছেলে তিনি। তারা পাঁচ ভাই। ছোট থেকেই অমিতাভের বচ্চনের ফ্যান ছিলেন তিনি। মাত্র ৯ বছর বয়সেই অভিনেতা হবেন বলে ঠিক করেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার জন্য তিনি দিল্লি যান। সেখানে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন। নিজের স্বপ্নের কথা বাড়িতে জানিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন বাবা রাগ করবেন, কিন্তু উল্টে বাবা ২০০ টাকা দিয়েছিলেন। তারপরই ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় যোগ দেওয়ার কথা ভাবেন তিনি। সেই সময় থেকে শুরু হয় মনোজের হতাশা। একবার নয়, তিনবার চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। আর সেই সময়েই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অভিনেতা। মনোজ আর জানিয়েছিলেন, আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতেই বন্ধুরা চোখে চোখে রাখতেম। কেউ তাকে একা ছাড়তেন না। বন্ধুরা সবসময় তার পাশে থাকতেন।
আরও পড়ুন-শাহিদ-করিনার বিচ্ছেদের পিছনে কি হাত ছিল কাপুর পরিবারের, ১২ বছর পর প্রকাশ্যে এল সত্য...
মনোজ জানিয়েছেন, একবার আমি একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলাম। তখন তিগমাংশু ধুলিয়া স্কুটার নিয়ে আমাকে খুঁজতে এসেছিলেন। শেখর কাপুরের ছবি ব্যান্ডেট কুইন-এর জন্য কাস্ট করতে চেয়েছিলেন আমায়। তখনই আমি স্থির করি আমি মুম্বই চলে আসব। তবে মুম্বইয়ের যাত্রাপথ অতটাও সহজ ছিল না। মুম্বইয়ে আসার পর পাঁচজনের সাথে একটি বস্তিতে থাকতাম। একবার এক বিজ্ঞাপন সংস্থা আমার ছবিও ছিঁড়ে ফেলে দেয়। এমনকী একদিনে তিনটে প্রজেক্ট হাতছাড়া হয়েছিল। প্রথম শট দেওয়ার পরই শুনতে হয়েছিল গেট আউট। তার নায়োকচিত চেহারা না থাকার কারণে বড়পর্দায় তার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। ঘর ভাড়া দেওয়াই খুব কষ্টের ছিল। অনেক দিন তো খাবারও জুটত না। অবশেষে চার বছরের লড়াইয়ের পরেই দূরদর্শনে মহেশ ভাটের একটি টিভি সিরিজে কাজ পান মনোজ। প্রতি এপিসোডের জন্য ১৫০০ টাকা করে পেতেন মনোজ। এরপর থেকেই সকলের নজরে পড়েন মনোজ এবং একে একে বলিউড ছবির অফারও আসতে থাকে তাঁর কাছে। এখন তিনি বি-টাউনে স্বপ্রতিষ্ঠিত। নিজের অভিনয় দিয়েই সকলের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ৬৭ টিরও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি।