জলসা থেকে মনসা, মুম্বই নগরীতে আজ অমিতাভের পাঁচ ঠিকানা, এক সময় যা ছিল স্বপ্ন

  • একসময় অমিতাভেতর কাছে জলসা ছিল স্বপ্ন
  • আজ সেই স্বপ্নপুরীতেই ৫ বাড়ির মালিকানা
  • দীর্ঘ সফরে একের পর এক মাইল স্টোন
  • বিগ বি-র আজ মুম্বই রাজ

তপন বক্সি, মুম্বই- মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার তাহিতি দ্বীপে  ১,৪৪৫ একর জমি কিনেছিলেন মার্লন ব্র‍্যান্ডো।১৯৬৭ সালে। আর বলিউডের  আইকন অমিতাভ বচ্চন উত্তর পূর্ব মুম্বইয়ের জুহু আর জুহু ভিলে পার্লে ডেভেলপমেন্ট স্কিমে পাশাপাশি পাঁচ পাঁচটি বাংলোর মালিক এখন। এই পাঁচটি বাংলোর মোট জায়গার আয়তন কিছু কম নয়।

বিগ বি-র এই পাঁচটি বাংলো হল, 'প্রতীক্ষা', 'আম্মু', 'জলসা', 'মনসা' আর  'জনক'। জুহু ভিলে পার্লে ডেভেলপমেন্ট স্কিমের এই অঞ্চলকে 'বচ্চন আইল্যান্ড ' নাম দেওয়া যেতেই পারে। 

Latest Videos

আরও পড়ুন- কে হবেন আমিরের তৃতীয় - বিয়ে ভাঙ্গার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই উঠছে প্রশ্ন, জোরালো ৪ বছর আগের গুঞ্জন

আরও পড়ুন- রিনাকে ছেড়ে বিদেশিনীর সঙ্গে গোপনে সঙ্গম, এবার কিরণকে ছেড়ে কার সঙ্গে সহবাসে লিপ্ত হবেন আমির


এরমধ্যে ১৯৭৬ সালে কেনা 'প্রতীক্ষা' মুম্বইয়ে অমিতাভর নিজের প্রথম বাংলো। জুহুর ১০ নম্বর রাস্তায় কোনাকুনি অবস্থিত 'প্রতীক্ষা' মুম্বই দর্শনার্থীদের জন্য একটি ল্যান্ডমার্ক। '৯০ -এর মাঝামাঝি আর্থিক সমস্যায় পড়া অমিতাভ  ব্যাঙ্কের বকেয়া মেটানোর জন্য কাছের বন্ধুদের থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তবু এই বাংলো ক্রোক হতে দেননি। এখন পরিবার 'জলসা'-য় থাকলেও  'প্রতীক্ষা ' অমিতাভর হৃদয়ে এক বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে। থেকেও যাবে। 


এই বাংলোয় অমিতাভর একটি স্পেশাল রুম আছে। অমিতাভর বেশিরভাগ বাংলোর নামকরণ করে  গিয়েছিলেন বাবা হরিবংশ বচ্চন। 'প্রতীক্ষা' নামকরণও ওনারই করা। শুধু তাই নয়, মুম্বইয়ের এই বাংলোতেই বাবা-মাকে নিয়ে থাকতেন অমিতাভ। বাংলোর ভেতরে ঘনসবুজ  বিস্তৃত লন আর বাগান। যেদিন শুটিংয়ের লেট শিডিউল থাকত অথবা  ব্যতিক্রমী কোনও অবসর পেতেন, সেদিন বাগানের ঠিক মাঝখানে চেয়ার টেবিলে  বসে মর্নিং-টি আর খবরের কাগজ পড়তেন শাহেনশা। এখনও কখনও কখনও পড়েন। আর ওই জায়গায় বসে বাবা-মার সঙ্গে গল্পও করতেন। অভিষেক ওই লনে, কখনও বাগানের খোলা জায়গায় ফুটবল খেলতেন। ও আবার ছোট থেকেই ফুটবল পাগল।

আরও পড়ুন- স্বামীকে কাঁধে তোলা থেকে শেষকৃত্য, চরমে ট্রোলড মন্দিরা বেদী, নেটিজেনদের একহাত নিলেন সোনা মহাপাত্র


যতদিন বাবা হরিবংশ রাই, মা তেজি বেঁচে ছিলেন, রোজ শুটিং থাকুক আর নাই থাকুক, অমিতাভ নিজে গাড়ি চালিয়ে 'জলসা' থেকে 'প্রতীক্ষা'-য় আসতেন। এই 'প্রতীক্ষা' -তেই শ্বেতা আর অভিষেকের বিয়ে হয়েছে। এখানেই দেহ রেখেছেন অমিতাভর বাবা-মা।  সব মিলিয়ে 'প্রতীক্ষা' বচ্চন  পরিবারের কাছে 'মন্দির'-এর মত। 

'জলসা'-র ঠিক পাশেই  গাছপালা ঘেরা 'আম্মু' বাংলো বাইরে থেকে প্রায় চোখেই পড়ে না। নিচু পাঁচিল দেওয়া এই বাংলোর গ্রাউন্ড ফ্লোরে ভাড়া দেওয়া হয়েছে একটি ব্যাঙ্ককে। তার ওপরের তলার ফ্যাল্টগুলিতে অভিষেক, ঐশ্বর্য, আরাধ্যারা এসে সময় কাটিয়ে যান। 

 

জুহুর 'জে. ডব্লিউ.ম্যারিয়ট' হোটেলের ঠিক তির্যক বিপরীতে অমিতাভর বর্তমান বাসস্থান। 'জলসা'। ১০ হাজার ১২৫ স্কোয়্যার ফিটের এই বাংলো অমিতাভকে গিফট করেছিলেন প্রযোজক এন.সি.সিপ্পি। ১৯৮২ সালে। যে বছর অমিতাভর  'সত্তে পে সত্তা' রিলিজ করেছিল। নিন্দুকেরা বলেন, প্রযোজক এন.সি.সিপ্পি অমিতাভকে তাঁর বকেয়া পারিশ্রমিক দিতে পারেননি বলে নিজের এই বাংলো দিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর অমিতাভ এই বাংলো বিক্রি করে দেন। পরে জয়ার অনুরোধে আবার কেনেন। 'জলসা' জয়ার খুব পছন্দের। এই বাংলোয় অমিতাভের সঙ্গে জয়া নিজেও শুটিং করেছেন। 'চুপকে চুপকে'-র। চুপকে চুপকে ছবির শুটিংয়ের সময় জয়া বচ্চন দ্বিতীয়বারের জন্য অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন। তার কিছুদিন পরে অভিষেক বচ্চনের জন্ম হয়। 'চুপকে চুপকে' ছাড়াও এই বাংলোয় আরও অনেক ছবির শুটিং হয়েছে। 'সত্তে পে সত্তা', 'আনন্দ', 'নমক হারাম' 'গোলমাল'-এর মত আরও অনেক ছবির। এই বাংলোর প্রথম নাম ছিল 'মনসা'। বাংলোটিকে দ্বিতীয় বার কিনে নতুন করে নির্মাণ করেছিলেন বচ্চন। নাম পালটে নাম রেখেছিলেন 'জলসা'। শোনা যায়, বাস্তুশাস্ত্র মেনেই এই  বাংলোর নাম 'মনসা' থেকে পাল্টে  'জলসা' রাখা হয়।

'জলসা' প্রথম বার কেনার পর  কিছুদিন ওই বাংলোয় কিছুদিনের জন্য  বাস করেছিলেন অমিতাভর ছোট ভাই অজিতাভ, স্ত্রী রমলা আর ওদের তিন মেয়ে। অজিতাভ আর ওঁর ফ্যামিলি ওই বাংলো ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অমিতাভ ওই বাংলো বিক্রি করে দেন। পরে জয়ার অনুরোধে দ্বিগুণ দামে আবার কিনে নেন। এই 'জলসা' বাংলো থেকে ভোর পাঁচটায় অমিতাভ শরীরচর্চার জন্য জে. ডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেলে আসেন। কোনও কোনও দিন দেহরক্ষীদের কিছুটা দূরে থাকতে বলে নিজে পায়ে হেঁটেই ম্যারিয়ট হোটেলের লবিতে ঢুকে পড়েন। এই জলসা বাংলোর মূল ফটকের বাইরে রাস্তার ওপর ফি রবিবার শয়ে শয়ে অমিতাভর ভক্তরা ভিড় জমান৷ বাড়ি থাকলে এবং হাতে সময় থাকলে বিকেলের দিকে ভক্তদের সামনে এসে দেখা দেন বিগ-বি। 

'জলসা'-র ঠিক পিছনেই লন সমেত একটি বাংলো ছিল। সেটি কিনে অমিতাভ নাম রাখেন 'মনসা'। এই লনে দিওয়ালি বা হোলি পার্টি রাখেন বচ্চনরা। আর বছরের অন্যান্য সময় এই লনে খেলে বেড়ায় আরাধ্যা। 

'মনসা'-র  ঠিক পরেই জুহুর ১১ নম্বর রাস্তায় রয়েছে  অমিতাভর আর একটি বাংলো। যার নাম 'জনক'। এই বাংলো অমিতাভর পরিবারের যাবতীয় অফিসিয়াল কাজকর্ম হয় এই বাংলোয়। অমিতাভর স্টাফেরা বসেন। ওই বাংলোয় অফিসিয়াল কাজ, বৈদ্যুতিন, ইলেকট্রনিক অথবা প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এখানেই মিলিত হন বিগ বি। এই বাংলোর ওপরের তৃতীয় ও চতুর্থ ফ্লোরে অমিতাভ মিউজিক শোনেন। এবং নিজের অত্যন্ত প্রিয়  ইন্সট্রুমেন্ট পিয়ানো বাজান। যদি এই ব্যাপারটা কেউ খুব সচেতন থেকে ওই রাস্তা পার করতে গিয়ে খেয়াল করেন এবং যদি তিনি ভাগ্যবান হন, তাহলে তিনি শুনতে পেলেও পেতে পারেন।  আর শুনে কেউ যদি বিগ-বি-কে প্রশংসা করেন, তার উত্তরে তিনি বলবেন, 'এটা কিন্তু একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছ। আমি বাজনা বাজানো শিখি। তাতেই আমার আনন্দ।'

Share this article
click me!

Latest Videos

'জঙ্গিরা ধরা তো পড়ছে, তাহলে আর চিন্তার কি আছে?' হাসতে হাসতে উত্তর রচনার | Rachna Banerjee News
Suvendu Adhikari Live : বিধানসভার বাইরে বিস্ফোরক শুভেন্দু অধিকারী, সরাসরি | Bangla News
মমতা হারবে, DA ন্যায্য অধিকার, জয় আপনাদের দোরগোড়ায়, ঐক্যবদ্ধ থাকুন : শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
'এই CBI মানুষের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে' CBI-র গেটে প্রতীকী তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ ডাক্তারদের | RG Kar
মাননীয়া জঙ্গিদের ঢুকতে দিচ্ছেন, কিন্তু চাকরি দিচ্ছেন না, শিল্প আনছেন না : Suvendu Adhikari