সংক্ষিপ্ত
কে হবেন আমির খানের তৃতীয় স্ত্রী
দ্বিতীয় বিয়ে ভাঙ্গার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই উঠছে প্রশ্ন
৪ বছর আগের গুঞ্জন জোরালো হচ্ছে
আমিরের পাশে এবার কার অবয়ব দেখা যাচ্ছে
তপন বক্সি: ২০২১-এর ৩ জুলাই, শনিবারের বারবেলায় আমির-কিরণের বিয়ে ভাঙ্গার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কে হবেন আমিরের তৃতীয়? তা নিয়ে গুঞ্জন জোরালো হয়ে উঠছে। প্রথম কথা, সেপারেশনের চুক্তিতে আমির-কিরণ যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে স্পষ্ট তাদের দুজনের সন্তান বা কর্মকাণ্ডের মধ্যে এই সেপারেশন কোনরকম দূরত্ব তৈরি করবে না। দূরত্ব শুধু তৈরি হল আমির খান এবং কিরণ রাওয়ের দাম্পত্যের বেলায়। আর ঠিক তখনই খুব স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে,যদি সন্তান নিয়ে দূরত্ব তৈরি না হয়, যদি কর্মক্ষেত্রে দূরত্ব তৈরি না হয়, আর যদি দাম্পত্য নিয়েই দূরত্ব তৈরি হয়, তাহলে সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে নিশ্চয়ই কেউ আছেন। এই মুহূর্তে যাঁর অবয়ব সামনে প্রকাশিত নয়।
প্রকাশিত নয় মানেই, তার অস্তিত্ব নেই একথা মানাও কঠিন। সত্যিই কি কঠিন? এই প্রশ্ন চিহ্নটা রাখতেই হচ্ছে যেহেতু বাস্তবে সেই অবয়বহীন মানুষটি এখনও প্রকাশিত নন। আমজনতার কাছে তিনি এখনও প্রকাশিত না হলেও বলিউডের খবর রাখা, উৎসাহী মানুষদের কাছে, সেই অবয়বের একটি পরিচয় তো প্রায় সামনে এসেই পড়েছে।
আমির খানের সেপারেশনের ঐতিহাসিক কালানুক্রমের কী অদ্ভুত কাকতালীয় মিল। পাশের বাড়ির হিন্দু মেয়ে রিনা দত্তকে ঘরের জানালা দিয়ে যখন প্রেম করলেন আমির, তখন তিনি ক্লাস টেন পাশও করেন নি। শুনেছি রিনার বাবা বাঙালি। রিনাকে বিয়ে করলেন ১৯৮৬ সালে। ছেলে মেয়ে হল। দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্যে ঝাঁকুনি খেলেন রিনা। ২০০১-এর অক্টোবর মাস থেকে আমির-রিনা সেপারেশনে গেলেন। আমির-রিনার অ্যামিকেবল ডিভোর্স হল ২০০২ সালে। ১৯৯৮ সাল থেকে আমির ব্রিটিশ মহিলা ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জেসিকা হাইন্সের সঙ্গে বিশেষ রিলেশনশিপে জড়িয়ে ছিলেন।( আমির নিজে কোনওদিন প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি। তাঁর 'লাভ চাইল্ড' বা হাইন্সের ছেলে 'জান'-এর বাবা হওয়ার ফেয়ারি টেলের খবর যখন বড় করে ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তিও করেননি। আর এবার ২০০৫ সালে বিয়ে করা কিরণ রাওয়ের সঙ্গে বিয়ে ভাঙ্গার ঘটনা। যে দাম্পত্যেরও ১৫ পূর্ণ হয়েছে। এখানেও তাঁদের এক সন্তান। আজাদ।
প্রশ্ন হল, আমির বারবার ইন্টেলেকচুয়াল, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, নারীর প্রেমে পড়েছেন। 'বাজি' ছবি করতে গিয়ে মমতা কুলকার্নির সঙ্গে প্রেমে পড়ে রিনার সঙ্গে উত্তাল অশান্তির ঝড়ে পড়ে নানাবতী হাসপাতালে দিন কয়েক ভর্তির ঘটনা তো এখনই মনে পড়ছে।
'দঙ্গল' রিলিজ হয়ে সুপারহিট হল ২০১৬-র ডিসেম্বরে। আর সেই ছবির শুটিং থেকেই আমির- ফতিমা সানা শেখের গভীর বন্ধুত্ব। ফতিমা তার আগে থেকেই মুম্বইতে। মা জম্মুর বাসিন্দা, রাজ তবাস্সুম আর বাবা শ্রীনগরের, বিপিন শর্মা। 'চাচি ৪২০'-তে ফতিমা শিশু শিল্পী ছিলেন। আমিরের নজরে এলেন 'দঙ্গল' -এর কাস্টিংয়ের সময়। ঠিক যেভাবে ২০০০ সালে 'লগান' ছবির সেটে আশুতোষ গোয়ারিকরের অ্যাসিস্ট্যান্ট হায়দরাবাদি কিরণ রাওকে মনে ধরেছিল আমিরের। জেসিকা তখন খুব কাছের অতীত।
শুনেছি জুহুর ফ্ল্যাটে মা-বাবা, বোনদের সঙ্গ ছেড়ে রিসেন্টলি ফতিমা আন্ধেরিতে নিজের নতুন ফ্ল্যাটে এসেছেন। নতুন নতুন ছবির লোকেদের মিট করতে হয় বলে। নিন্দুকেরা বলেন, এটা নাকি আমিরের দান। বছর চারেক আগে আমিরের জন্মদিনে আমিরের বান্দ্রার নতুন এপার্টমেন্টে বলিউডের এক পুরনো ফোটোগ্রাফার থেকে আমিরের পার্সোনাল স্টাফ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি আমাকে বলেছিলেন, 'ফতিমার ইন্টারভিউয়ের দরকার হলে আমাকে বোলো।' আর ঠিক তখন থেকেই আমির-ফতিমার রিলেশনশিপ নিয়ে গুঞ্জন বাতাসে বেশ জোরদার। এরপর আমির ফতিমাকে একসঙ্গে দেখা গেছে অনেক জায়গায়। শুনেছি আদিত্য চোপড়ার কাছে 'থাগস অফ হিন্দুস্তান'- এর জন্য আমির নিজে রেফার করেছিলেন ফতিমার নাম। শোনা গিয়েছিল আমির-ফতিমা একসঙ্গে গ্রিস বেড়াতে গিয়েছিলেন। ২০২১-এর ৩ জুলাই, শনিবারের বারবেলায় আমির-কিরণের অফিসিয়াল সেপারেশনের খবর সামনে আসতেই, তাই চার বছর আগের সেই গুঞ্জন এখন আরও অর্থবহ হয়ে ফিরে আসছে সামনে।