'হোয়েন লাইফ গিভস ইউ লেমন, মেক আ লেমনেড', যার অর্থ জীবন যখন তোমার দিকে লেবু ছুড়ে দেয়, তখন লেবুর সরবত বানিয়ে ফেল। এই কথাটা শুনতে ভাল লাগে, তবে বাস্তবে করাটা খুব কঠিন। এইভাবে নিজের শেষ বার্তা আরম্ভ করেছিলেন ইরফান খান। আংরেজি মিডিয়াম ছবির ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার ঠিক আগেই নিজের তরফ থেকে এক বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন অভিনেতা। যা আজ ভেসে আসছে সকলের কানে। চোখের কোনায় যেন জলের বিন্দু জমে যাচ্ছে তাঁর প্রতিটি কথায়।
ভিডিওতে তিনি প্রত্যেক সিনেপ্রেমীদের এক বার্তা দিয়েছিলেন। সেটাই ছিল ইরফানের শেষ অডিও ক্লিপ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আজ আমি আপনাদের সঙ্গে থেকেও নেই। আংরেজি মিডিয়াম ছবিটির প্রচার খুব ভালবেসে করতে চেয়েছিলাম। আমার খুব কাছের একটা ছবি। কিন্তু আমার শরীরে কিছু অপ্রত্যাশিত অথিতিরা বাসা বেঁধেছেন। ওনাদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। দেখা যাক কী হয়। আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে পজিটিভ থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই। আশা করছি আপনাদের এই ছবিটি আপনাদের শেখাবে, হাসাবে, কাঁদাবে আবার হয়তো হাসাবে। একে অপরের খেয়াল রাখবেন। ছবিটি দেখবেন। আর হ্যাঁ, আমার জন্য অপেক্ষা করবেন।"
শেষ কথাটাই যেন বারে বারে বিঁধছে। তিনি একজন অভিনেতার চেয়েও অনেক বেশি ছিলেন সকলের কাছে। সকল খান ভক্তরা যতই লড়ুকনা কেন, ঠিক ইরফানের খানের কাছে এসেই তাদের লড়াই মিটে যায়। ইরফানের এই শেষ অডিও ক্লিপটি গাঁয়ে কাটা দিচ্ছে বলে নানা পোস্ট শেয়ার করে চলেছে নেটিজেনরা। বিনদন জগতের এই ক্ষতি মেনে নিতে পারছে না কেউই।
আংরেজি মিডিয়াম ছবিটির শ্যুটিং শেষ করেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন অভিনেতা। ফিল্মের পোস্ট প্রোডাকশনে চলাকালীন তাঁর অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসে। নিউরোএন্ডোক্রাইন ক্যান্সার ধরা পড়ে তাঁর। আংরেজি মিডিয়ামই তাঁর জীবনে শেষ ছবি হয়ে রয়ে গেল। অনেকেই বলছেন, গন টু সুন। অর্থাৎ খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন অভিনেতা। তাড়াতাড়ি হোক বা দেরিতে, তথাকথিত মৃত্যুর বয়স তাহলে কত। ইরফান খান আর নেই। যে শিল্পী আমাদের এক ভিন্ন শিল্প জগৎকে চিনিয়েছেন তাঁর চলে যাওয়া কখনই মেনে নেওয়া যায় না।