ভার্চুয়াল শুনানিতে এনসিবি-র 'ভালোমানুষি', রিয়াকে পাঠানো হল বিচার বিভাগীয় হেফাজতে

  • সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্য়ুর পর কেটে গিয়েছে ৮০ দিন
  • এই জটিল মৃত্যু রহস্যে গ্রেফতার হলেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী
  • সুশান্তের একটা সময়ের লিভ-ইন পার্টনার ছিলেন তিনি 
  • অভিযোগ, এই সময়ে তিনি সুশান্তকে মাদকের নেশায় জড়িয়ে দেন

১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতেই থাকতে হবে। এমনই নির্দেশ দিলেন বিচারক। ভার্চুয়াল শুনানিতে এই নির্দেশ দেন তিনি। এনসিবি অফিস থেকেই ভার্চুয়াল শুনানিতে যোগ দেন রিয়া। তাঁর আইনজীবীও ভার্চুয়াল এই শুনানিতে অংশ নেন। এনসিবি-র আইনজীবী জানান, রিয়াকে তারা নিজেদের হেফাজতে চাইছেন না। তাঁর কাছ থেকে অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। রিয়া নিজেও স্বীকার করেছেন যে তিনি সুশান্ত সিং রাজপুত-এর জন্য মাদক চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এবং লাগাতার মাদক আনিয়েছেন। সুতরাং, এদিক থেকে রিয়া নিজের সঙ্গে মাদক চক্রের যোগ থাকার কথা অস্বীকার করেননি। মাদক আইন অনুযায়ী এটা অপরাধ। তাই রিয়াকে আপাতত হেফাজতেই রাখতে হবে। তবে, বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রিয়া-কে রাখলেও এনসিবি-র অসুবিধা নেই। এনসিবি-র এমন অবস্থান জানার পর বিচারক রিয়াকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

ভার্চুয়াল শুনানিতে সবচেয়ে অবাক করে দেয় এনসিবি-র ভালোমানুষি। এনসিবি জানায় তদন্তে রিয়া ভালোমতোই সহযোগিতা করছেন। এমনকী, তিনি সুশান্তের জন্য যে মাদক কিনেছিলেন তাও স্বীকার করে নিয়েছেন। এনসিবি এটাও বিচারককে জানায় যে রিয়া-র মাদকের নেশা নেই এবং তিনি নিয়মিত মাদকও নেন না। যদিও, সুশান্তের জন্য তিনি মাদক চক্রের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন এবং অর্থ দিয়ে সেই মাদক কেনেন। মাদক আইন অনুযায়ী এটা অপরাধ। রিয়াকে এনসিবি একদিকে নির্দোষ আবার প্রেমিকের জন্য মাদক কেনার জন্য অপরাধী ঠাওরে দেয় বিচারকের সামনে। এই মাদক চক্রের সঙ্গে যোগাসাজোশ নিয়ে রিয়া আরও কিছু তথ্য সরবরাহ করতে পারবে বলেও দাবি করে এনসিবি। কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে যে শুধুমাত্র নিজের প্রেমিকের জন্য মাদক কিনতো, অন্য কোথাও সেই মাদক পাচারের প্রমাণও মেলেনি, তাঁকে কী করে মাদক চক্রের অন্যতম সঙ্গী বলে দাবি করা হচ্ছে? এই বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। 

Latest Videos

টানা দিন ধরে জেরার পর রিয়াকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করে এনসিবি। যদিও, জাতীয় মাদক প্রতিরোধক সংস্থার বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয়েছেন অনেকে। ১০ গ্রাম মাদক কেনার জন্য কীভাবে একজনকে মাদক চক্রের সঙ্গে যোগসাজোশ থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বেশকিছু আইপিএস অফিসার থেকে প্রাক্তন এনসিবি কর্তা। তবে, এদের কারোর মতে মাদক রাখাটা অপরাধ এবং কারোর জন্য অর্থ দিয়ে মাদক কেনাটাও অপরাধ বলে গণ্য হয়। কিন্তু, এর জন্য কাউকে ড্রাগ বিক্রেতা সাজিয়ে দেওয়াটা ঠিক নয় বলেও মনে করছেন অনেকে। রিয়ার ক্ষেত্রে এনসিবি অতি সক্রিয়তা অবলম্বন করেছে বলেও মনে করা হচ্ছে। 

রিয়ার আইনজীবী-ও গোটা পদ্ধতিতে প্রচণ্ডভাবে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ, একটি নিরীহ মহিলাকে কীভাবে মাটিতে পিষে ফেলে টুটি চিপে ধরা যায় তার জন্য একসঙ্গে তিন-তিনটি সরকারি তদন্তকারী সংস্থা উঠে পড়ে লেগেছে। এটা লঘুপাপে গুরুদণ্ড বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, মিডিয়ায় একাংশ থেকেও দাবি উঠেছে যে রিয়া-কে যে তেন প্রকারে জেলে পোড়াটা লক্ষ্য ছিল সিবিআই থেকে ইডি এবং এনসিবি-র। আর সেই কারণেই সিবিআই থেকে শুরু করে ইডি, এনসিবি-র এত বাড়াবাড়ি। 

এই সব প্রশ্ন এই মুহূর্তে কিছুটা হলেও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তার কারণ বিহারের নির্বাচন। যেভাবে বিহারের ভোটে বিজেপি সুশান্তের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে ইস্যু করেছে এবং রিয়াকে ভিলেনে পরিণত করেছে তাতে ইতিমধ্যে অনেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। অভিনেত্রী টিসকা চোপড়া থেকে শুরু করে তাপসী পান্নু, স্বরা ভাস্কর সকলেই রিয়ার সমর্থনে মুখ খুলেছেন। এদের সকলেরই মতে, বিষয়টি মানবিকতা এবং পরিস্থিতির উপর বিচার করে বিবেচিত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হচ্ছে না এই অভিনেত্রীদের অভিযোগ। বলিউডে শিল্পীদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও মিডিয়ার একাংশের বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেখানে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে তাঁদের এক মহিলা সহকর্মীর বিরুদ্ধে যে বিদ্বেষাগার মিডিয়া থেকে ছড়ানো হচ্ছেতা নিন্দনায় এবং একজনের সম্মানকে ক্ষুণ্ণ করার সামিল। রিয়ার আইনজীবীও ফের জানিয়েছেন, যে ভাবে সিবিআই, ইডি এবং এনসিবি রিয়ার পিছনে পড়েছে তাতে আশ্চর্য লাগছে যে এরা কেউই এটা ভাবছে না সুশান্ত একজন মানসিকবিকারগ্রস্থ ও মাদকাসক্ত মানুষে পরিণত হয়েছিলেন এবং পরে তিনি আত্মঘাতী হন। অথচ এহেন একজনের মানুষের মৃত্যুর জন্য তাঁর কাছের মানুষদের কাঠগড়ায় তুলে দেওয়া হচ্ছে।  

Share this article
click me!

Latest Videos

'মাননীয়া আপনার শাড়িতে দুর্নীতির কালো ছোপ ছোপ দাগ' মমতাকে (Mamata) এ কী বললেন অগ্নিমিত্রা ?
‘অনেকদিন পর কেষ্টদা ফিরেছে তাই একটু বিশৃঙ্খলা হচ্ছে’ অদ্ভুত ব্যাখ্যা Satabdi-র! | Satabdi Roy News
ছয় Bidhan Sabha কেন্দ্রের ছটিতেই এগিয়ে TMC, আবির খেলায় মাতলেন গঙ্গাসাগরের তৃণমূল কর্মীসমর্থকরা
ট্যাব কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে শিক্ষকদের জোরদার বিক্ষোভ! দাবি সঠিক তদন্তের! | Bengal Tab Scam
'কয়লার ৭৫ ভাগ তৃণমূলের (TMC) পকেটে যায়' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)