মাধুরী বনাম জুহি, শয্যাদৃশ্যে নারাজের জন্যই কি 'ধক ধক গার্ল'-এর থেকে পিছিয়ে পড়েছিলেন বলি 'সুন্দরী'

  • নিখুঁত সৌন্দর্য আর অভিনয়ে সকলেই একসময়ে মুখিয়ে থাকতেন জুহি চাওলার জন্য
  • একটানা ২০ বছর বলিউডের অন্যতম স্বনামধন্য নায়িকা ছিলেন জুহি চাওলা
  • গ্ল্যামারাস হয়েও কেন মাধুরীকে টক্কর দিতে পারলেন না সুন্দরী জুহি
  • সলমনের নায়িকা হতে না পেরেই কি এক নম্বরের তালিকার দৌঁড়ে পিছিয়ে পরেন জুহি
     

Riya Das | Published : Aug 20, 2020 12:23 PM IST / Updated: Aug 20 2020, 06:03 PM IST

বলিউডের প্রথমসারির অভিনেত্রী দুজনেই। একজন নাচে -অভিনয়- সৌন্দর্য সকলকে পাগল করে দিয়েছিলেন তিনি হলেন বলিউডের ধক ধক গার্ল মাধুরী দীক্ষিত। আর অন্যজন মুক্তোর মতো মলিন হাসি, অভিনয় দক্ষতা, গ্ল্যামার, সৌন্দর্যে সকলকে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন তিনি হলে বলি অভিনেত্রী জুহি চাওলা। নিখুঁত সৌন্দর্য আর রূপের ছটায় সকলেই একসময়ে মুখিয়ে থাকতেন জুহি চাওলার ছবি দেখার জন্য। এমনকী বলিউডের প্রথম সারির পরিচালক-প্রযোজকরাও তার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন।

 

বলিউড কেরিয়ারঃ

সালটা ১৯৮৪। 'মিস ইন্ডিয়া'র মুকুট উঠেছিল জুহি চাওলার মাথায়। তারপর যেন বলি ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন জুহি চাওলা। মিস ইন্ডিয়া হওয়ার সুবাদে যেন চাহিদাও বাড়তে থাকে রাতারাতি। ঠিক ২ বছর পর ১৯৮৬ সালে 'সালতানত' ছবি দিয়ে বলিউডে ডেবিউ করেন জুহি চাওলা। ব্যাস তারপরেই বলিউডের প্রথম সারির নায়কদের সঙ্গে একের পর এক ছবিতে জুটি বাঁধতে শুরু করেন জুহি চাওলা। ঠিক তার ২ বছর পর 'কেয়ামত সে কেয়ামক তক ' ছবিতে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠেন জুহি চাওলা। বলিউডের মি. পারফেকশনিস্ট আমির খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফাটিয়ে অভিনয় করে দর্শকমন জিতে নেন এই সুন্দরী নায়িকা। তারপরই যেন তার দর আঁকাশছোয়া হতে থাকে। 

 

 

টপমোস্টদের সঙ্গে তুলনাঃ

ইন্ডাস্ট্রিতে একটানা ২০ বছর বলিউডের অন্যতম স্বনামধন্য নায়িকা ছিলেন জুহি চাওলা। কিন্তু বলিউডের এক নম্বরে যেন নিজেকে নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। তবে নিয়ে যেতে পারেননি না হওয়ার কখনও চেষ্টা করেননি, এই নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। কারণ তিনি বরাবরই নিজের শর্তে, নিজের পছন্দে বাঁচতে চেয়েছেন।  সেই সময়ের একাধিক টপমোস্ট নায়িকা যেমন কাজল, করিশ্মা, শ্রীদেবীর সঙ্গে তুলনায়  তার নাম উঠে আসলেও বলিউডের ধক ধক গার্লের সঙ্গে যেন তার টক্করটা একটু বেশিই ছিল।

 

মাধুরী-জুহি টক্করঃ

নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকেই কড়া টক্কর শুরু হয়েছিল মাধুরী-জুহির। বেশিরভাগ সময়েই বক্স অফিসে এগিয়ে থাকতেন মাধুরী। তার পাগল করা কোমরের হিল্লোলে সকলেই মুগ্ধ হয়েছিল। কিন্তু কেরিয়ারের মধ্যগগণে সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে নাম জুড়ে কিছুটা  পিছিয়ে গেছিলেন মাধুরীও।

 


 

নিজের শর্তঃ

কেরিয়ারের শুরু থেকেই নিজের শর্তে বাঁচতে পছন্দ করেন। নিজের ইচ্ছেটাই সবথেকে বেশি প্রয়োজনীয়। বলিউডের নিজের জায়গা তৈরি করেও স্বাচ্ছন্দে নবাগতদের বিপরীতে দেখা গেছে জুহিকে। ছবি হিট হবে কিনা, তার থেকেও বেশি গুরুত্ব ছিল নিজের পছন্দের উপর। ছবির চিত্রনাট্যের উপর সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিতেন জুহি। বাকি কোনওদিকেই তিনি অত গুরুত্ব দিতেন না। আর এই অবহেলার কারণেও তাকে পরে মাসুল দিতে হয়েছে। নিজের মনের মতো চিত্রনাট্য পছন্দ করেও বক্সঅফিসে বহুবার মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছিল জুহিকে।

 


 

সলমন গুঞ্জনঃ

নিজের ডিসিশনকে এতটাই গুরুত্ব দিতেন জুহি যে কোনওদিনই সলমন খানের বিপরীতে অভিনয় করতে রাজি হয়নি। সেলিম খানের ছেলে সলমন, সবটা জেনেও কোনওদিন চাননি তার বিপরীতে স্ক্রিন শেয়ার করতে চাননি জুহি চাওলা । ১৯৯২ সালে 'ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া'র সাফল্যের পর  এক বলিউড অভিনেত্রীর প্রেম পড়ে সলমন। এমনকী তাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেয় ভাইজান। কিন্তু সেই অভিনেত্রী সলমনের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। আর তিনিই হলেন নব্বইয়ের দশকের সুপারহিট বলি অভিনেত্রী জুহি চাওলা। 'আন্দাজ আপনা আপনা'  ছবির শ্যুটিং চলাকালীন ট্যুরে গিয়েই জুহিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সলমন। কিন্তু শুরুতেই জুহি না করে দিয়েছিলেন। তবে শুধু জুহিতেই থেমে ছিলেননা সলমন। জুহির বাবাকেও বিয়ের কথা জিজ্ঞাসা করেছিলেন অভিনেতা। এমনকী সেখান থেকেও প্রত্যাখ্যান হয়েছিলেন অভিনেতা। তারপর থেকেই আরও কোনও ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেননি সলমন। শুধুমাত্র  'দিওয়ানা মস্তানা ' ছবিতে সলমন ক্যামিও চরিত্রে  অভিনয় করেছিল । কিন্তু নেটিজেনরা আজও মনে করেন সলমনের নায়িকা হতে না পেরেই এক নম্বরের তালিকার দৌঁড়ে পিছিয়ে পরেন জুহি।

 

বৃষ্টিস্নাত হিট নম্বরঃ

আশি ও নব্বইয়ের দশকে হিন্দি ছবির গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রেন্ড ছিল বৃষ্টিস্নাত নাচ। সেই নাচের তালিকায় বলিউডের টপমোস্টরা সকলেই গা ভাঁসিয়েছেন। বলিউডের চাঁদনি থেকে, কাজল, রানি মুখার্জি,  করিশ্মা কাপুর, রবিনা টন্ডন সকলেই সেই ট্রেন্ডে বাজিমাত করেছেন। সেখানেও অনেকটা পিছিয়ে ছিলেন বলি সুন্দরী জুহি।

 

 

ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে নারাজঃ

কেরিয়ারের শুরুতে 'দয়াবান' ছবিতে বিনোদ খান্নার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়  করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন মাধুরী দিয়েছিলেন। নিজের বলি কেরিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক বলি অভিনেত্রীরাই ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু জুহি সেই দলেও পড়েন না। কারণ কেরিয়ারের শুরু থেকেই কোনওভাবেই খোলা পোশাক, উদ্দাম যৌনতা, শয্যাদৃশ্যে অভিনয়, কোনটাতেই তিনি রাজি ছিলেন না। আর এই অন্তরঙ্গতায় অন্যদের মতো নিজেকে মেলে ধরতে না পারায় অনেক বড় প্রজেক্টও হাতছাড়া হয়েছিল জুহির।

 

 

বিবাহবন্ধনঃ 

জুহি চলেছে নিজের নিয়মে। বলি কেরিয়ারে প্রথম জায়গা দখলের ঘোড়দৌঁড়ে কোনওদিনই তিনি ছোটেন নি। বরং নিজের মতোন করে অভিনয় করে গেছেন দীর্ঘ বছর। শেষমেশ অভিনয় ছেড়ে ১৯৯৫ সালে গাটছড়া বাঁধেন বলিউডের গসিপ থেকে শত যোজন দূরে থাকা শিল্পপতি জয় মেটার সঙ্গে। একদম সাদামাটা ভাবে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বিয়ে সারেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা। বর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে ব্যস্ত সংসারে। জুহির মেয়ে জাহ্নবীও চায় না রূপোলি পর্দায় আসতে, লেখিকা হওয়া দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। বিয়ের পর সেভাবে আর বি-টাউনের ক্যামেরার ফ্ল্যাশে দেখা মেলেনি জুহির। টিনসেল টাউনে সেভাবে মুখ না দেখালেও  অভিনয় ক্ষমতা ও সৌন্দর্যই ছিল জুহির 'তুরুপের তাস'।

Share this article
click me!