দীপিকা সরকার, দুর্গাপুর: করোনার আতঙ্ক! মৃত্যু পরেও রেহাই নেই বৃদ্ধের। প্রায় ঘণ্টা দশেক বাড়িতে পড়ে রইল দেহ। এমনকী, অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে যখন বাড়িতে যান খোদ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, তখন তাঁর হাতে দেহ তুলে দিতেও অস্বীকার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরে।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে ফতোয়ার মুখে পুলিশকর্মীরা, বিতর্কে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন
বিরাশি বছরের ওই বৃদ্ধের বাড়ি দুর্গাপুর শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদপুর এলাকায়। পেশায় তিনি অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দিন কয়েক আগে ওই বৃদ্ধের বড় ছেলে ও বউমা করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। দুর্গাপুরের কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু'জনেই। এরপর নিয়মাফিক চারজন শিশু-সহ পরিবারের আটজন সদস্যের লালারস সংগ্রহ করে নিয়ে যান স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা। কিন্তু ছ'দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও রিপোর্ট আসেনি। এরইমধ্যেই শুক্রবার সকালে অসুস্থ হয়ে মারা যান ওই বৃদ্ধ। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।
আরও পড়ুন: শহরে হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস, শনিবার ভাসতে চলছে আলিপুরদুয়ার-কোচবিহার
জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধের মৃত্য়ুর পর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনকে খবর দিয়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু দেহ সৎকারের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত বিকেলের দিকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁর সঙ্গে ছিল পুলিশও। কিন্তু তখন আবার বেঁকে বসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না জানানো পর্যন্ত দেহ নিয়ে যাওয়া যাবে না। রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ার রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় প্রশাসন ও পুরসভা আধিকারিকদের। দুর্গাপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট উদয় নারায়ণ জানিয়েছেন, করোনায় মৃত্যু হলে যেভাবে দাহ করা হয়, সেই একই নিয়ম প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ওই বৃদ্ধের দেহ সৎকার করা হবে। পরিবারে এক-দু'জনকে শশ্মানে থাকতে পারবেন।