রাজ্যে ব্যতিক্রমী মেলা। যেখানে বিক্রেতারা সবাই সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। জেলের ভিতর কাটিয়েছেন কেউ কুড়ি বছর, কেউ তারও কম। বিভিন্ন জিনিসের পসরা সাজিয়ে স্টলে রয়েছেন তারা। তাদের নিজেদের হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে। জেলের ভিতর তৈরি করেছেন ব্যাগ, সার্ট, পাঞ্জাবি, অলংকার আরও কত কী। আমার হাতে গরম খাবারও তৈরি করছেন তারা। ক্রেতারা সাধারণ মানুষ। বন্দিদের তৈরি জিনিস কিনতে ভিড় জমিয়েছেন।
এই প্রথম বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দি আবাসিকদের কর্মকাণ্ড নিয়ে হচ্ছে মেলা। সমাজের মূল স্রোতে ফেরার সুযোগ করে দিতেই এই উদ্যোগ। অনেক বছর পর কিছুটা হলেও মুক্তির স্বাদ অনুভব করছেন তারা। সংশোধনী প্রশাসন বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রচেষ্টায় বন্দি আবাসিকদের প্রতিভা এবং শিল্প সত্তার বিকাশ ঘটাতে এই অভিনব উদ্যোগ। তাদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার তারই অঙ্গ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার প্রাঙ্গণে শীতকালীন এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে,উইন্টার কার্নিভাল।
সংশোধনাগারের বন্দি আবাসিকদের হাতে তৈরি বিভিন্ন জিনিস রয়েছে। শুধুমাত্র বর্ধমান নয় কলকাতা, মেদিনীপুর, বহরমপুর, বারুইপুর এবং আরো বিভিন্ন জেলার বন্দি আবাসিকদের হাতে তৈরি মধুবনী শাড়ি, টেরাকোটার গহনা, ফ্যাশন ব্যাগ,বাটিক, বাঁধনী, কুর্তি, কামিজ , পাঞ্জাবি, শার্ট, কুকিজ, সর্ষের তেল, মুড়ি, গামছা, বিছানার চাদর পাটের রকমারি জিনিস।এছাড়া খাদ্যদ্রব্যের আয়োজন রয়েছে। বন্দিরাাই তৈরি করছে বিরিয়ানি থেকে মিষ্টান্ন। এছাড়াও রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যেখানে জেলবন্দিরা পরিবেশন করছেন নাচ,গান,আবৃত্তি,নাটক। বন্দিরা জেলের বাইরে এসে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে পারে খুশি। আজীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরা বলেন, সরকার যদি তাদের কাজে খুশি হয়ে সাজা মকুব করেন, সেই আশায় রয়েছেন।
বিভিন্ন সময়ে সংশোধনাগারের বন্দিদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তাদের যুক্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে তারা। এই মেলা সেই উদ্য়োগের অংশ। শুধু তাই নয় সংশোধনাগারের ভিতরে মনোরঞ্জনের জন্য প্রখ্যাত শিল্পী আসবেন সংগীত পরিবেশনের জন্য। বর্ধমানের ৬১ জন ও অনান্য জেলের ৫০জন বন্দি এই মেলায় অংশ নিয়েছে।