Biggest Bank Fraud: ১৭ ব্যাঙ্কের গোষ্ঠীর কাছ থেকে ৩৪৬১৫ কোটি টাকার ঋণ, কোথায় অর্থ সরাল ডিএইচএফএল

ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে ডিএইচএফএল-এর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ। ১৭টি ব্যাঙ্কের গোষ্ঠীর কাছ থেকে ৩৪৬১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল দিওযান হাউসিং ফিনান্স লিমিটেড। অভিযোগ ডিএইচএফএল-এর ব্যাঙ্ক প্রতারণায়  ১৭টি ব্যাঙ্ক অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির সামনে পড়েছে। 

১৭টি ব্যাঙ্কের মিলিত গোষ্ঠীর কাছ থেকে ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল থেকে ৪২,৮৭১ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ডিএইচএফএল বা দিওয়ান হাইসিং ফিনান্স লিমিটেড। এই ১৭টি ব্যাঙ্কের মিলিত গোষ্ঠী বা কনসোরটিয়াম-এর নেতৃত্বে ছিল ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। কিন্তু, সম্প্রতি ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অভিযোগ করে যে ডিএইচএফএল তাদের প্রতারিত করেছে। এমনকি, এই হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণে আস্থা ভেঙে এক অপরাধ করেছে, যাকে ব্যাঙ্কিং দুনিয়ায় ক্রিমিনাল বিচ অফ ট্রাস্ট বলা হয়। সেই সঙ্গে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আরও অভিযোগ ছিল যে কনসোরটিয়ামের অর্থ আত্মৎসাৎ করে আসলে ডিএইচএফএল সাধারণ জনগণকেই প্রতারিত করেছে। কারণ, যে অর্থ ডিএইচএফএল-কে ঋণ হিসাবে দেওয়া হয়েছিল তা আসলে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত থাকা সাধারণ মানুষের অর্থ। 

ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ারও অভিযোগ, ডিএইচএফএল যে পরিমাণ অর্থ আত্মৎসাৎ করেছে তার পরিমাণ ৩৪,৬১৫ কোটি টাকা। এই ব্যাঙ্ক প্রতারণা এখন পর্যন্ত ভারতবর্ষে হওয়া সবচেয়ে বড় ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে। ২০ জুন ডিএইচএফএল-এর বিরুদ্ধে এই বিশাল ব্যাঙ্ক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপরই সিবিআই-এর ৫০ সদস্যের একটি দল বুধবার মুম্বইয়ের ১২টি স্থানে তল্লাশি চালায়। ডিএইচএফএল-এর বিরুদ্ধে এফআইআর-এ যে ব্যক্তিদের নাম ছিল যেমন অমরইলিশ রিয়ালটরস-এর   সুধাকর শেট্টি-সহ আরও ৮ বিল্ডার, সিবিআই-এর তল্লাশি চালানো জায়গাগুলোর সঙ্গে এদের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে ২০১৯ সালে ব্যাঙ্ক ঋণ মেটানোর কথা ছিল ডিএইচএফএল-এর। কিন্তু তা হয়নি। এরপর অনেক আলাপ-আলোচনা এবং আইনি নোটিস থাকলেও ডিএইচএফএল ঋণ মেটায়নি। 

Latest Videos

ডিএইচএফএল-এর ব্যালান্স শিটের উপর অডিট করা হয়েছিল। সেখানেও দেখা যায় অসংখ্য অর্থনৈতিক আত্মৎসাৎ-এর ঘটনা ঘটেছে। যেমন- ঋণের অর্থ বেআইনিভাবে বিভিন্ন গন্তব্যে পাঠানো থেকে শুরু করে, হিসাবের খাতায় ভুল তথ্য ভরে দেওয়া, রাউন্ড ট্রিপড ফান্ডস  তৈরি করা-এর উদ্দেশ্য ছিল কপিল ও ধীরজ ধওয়ানের জন্য সম্পদ বাড়ানো। যদিও, বহু আগে থেকেই জেলে রয়েছেন কপিল ও ধীরজ ধওয়ানরা। তাদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই প্রতারণার অভিযোগ ছিল। ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলি ইতিমধ্যেই ডিএইচএফএল দ্বারা পরিচালিত অ্যাকাউন্টগুলিকে নন-পারফরমিং অ্যাসেটের তালিকায় নথিভুক্ত করেছে। 

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম ডিএইচএফএল-এর বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার তদন্ত শুরু হয়েছিল। একাধিক মিডিয়া রিপোর্টে সেই সময় উঠে এসেছিল যে কীভাবে ডিএইচএফএল-এর হাত দিয়ে ঋণ নেওয়া অর্থ নয়ছয় হয়ে গিয়েছে। এরপর ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে বসেছিল ঋণ দেওয়া ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা। সেই বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত থেকে কেপিএমজি-কে দিয়ে ডিএইচএফএল-এর ঋণ নেওয়া অর্থের উপরে অডিট করানো হয়। আর সেখানেই আরও পরিস্কার করে সামনে আসে ৩৪৬১৫ কোটি টাকা প্রতারণার বিষয়টি। এরপর ঋণদাতা ব্যাঙ্ক গুলো লুক আউট সার্কুলার জারি করে কপিল ও ধীরজ দেওয়ানের বিরুদ্ধে। এর উদ্দেশ ছিল যাতে তারা দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে। 

কেপিএমজি-র অডিট রিপোর্টে সামনে এসেছিল যে ডিএইচএফএল-এর ডিরেক্টররা ঋণ নেওয়া অর্থ হয় তাঁদের নিজস্ব কোনও লোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন অথবা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কৃত অন্য সংস্থার অ্যাকাউন্টেও ওই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে। যা ঋণ নেওয়া শর্তের বিরুদ্ধে এবং একটা অপরাধ। অডিট রিপোর্টে আরও সামনে আসে যে ডিএইচএফএল-এর সঙ্গে জুড়ে থাকা ৬৬টি সংস্থায় ২৯১০০ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়েছিল। আর এই সংস্থাগুলোকে এই অর্থ দেওয়া হয়েছিল জমি কেনার জন্য অথবা রিয়ালএস্টেটে বিনিয়োগ করার জন্য। এর সঙ্গে সঙ্গে সামনে আসে যে ঋণ নেওয়ার ১ মাসের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, অর্থ স্থানান্তরের কারণ হিসাবে বিভিন্ন অপ্রদেয় ঋণ এবং অপ্রদেয় সুদ-এর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, এই সব স্থানান্তরের সময় নন পারফরমিং অ্যাসেট-এর নিয়ম কানুন মানাই হয়নি। ১০০০ কোটি টাকার উপরে আগে থেকে নেওয়া ঋণের সুদ মেটানো হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। কিন্তু, এর কোনও সত্যিকারের যুক্তি নেই। অনৈতিকভাবে হয় সুদের অর্থ মেটানোর কথা বলেছে ডিএইচএফএল অথবা অনৈতিকভাবে ঋণের মূল অর্থ ফেরানোর কারণ দর্শানো হয়েছিল। অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী এটা পুরোপুরি সাজানো।  

আরও পড়ুন-গতকালের তুলনায় ফের বাড়ল সোনার দাম, রূপোর দর কত জানেন

আরও পড়ুন-জ্বালানি তেলের দাম কমাতে বড় ঘোষণা নির্মলার, রাজ্যগুলিকেও মধ্যবিত্তকে স্বস্তি দিতে আর্জি

Share this article
click me!

Latest Videos

Mamata Banerjee-র ভুল সিদ্ধান্ত আলু চাষীদের শেষ করে দিয়েছে!' বিস্ফোরক Suvendu Adhikari #shorts
‘একধারে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার একধারে বিষ!’ Mamata Banerjee-কে কড়া তোপ Agnimitra Paul-এর, দেখুন
‘হত্যার মামলা হওয়া উচিত স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বিরুদ্ধে’Suvendu Adhikari-র তীব্র গর্জন
Live : MahaKumbh 2025 | শুরু মহাকুম্ভ ২০২৫, শুরু পুণ্য স্নান, দেখুন সরাসরি | Makar Sankranti
দায়ী কে? কেমন আছে ৩ প্রসূতি মাম্পি, মিনারা ও নাসরিন? দেখুন | Kolkata News | Saline Controversy