২০২৬ সাল থেকে ভারতে একাধিক নতুন আর্থিক নিয়ম কার্যকর হতে চলেছে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করবে। অষ্টম বেতন কমিশন लागू হওয়ার ফলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি পাবে, এবং নতুন আয়কর বিল করদাতাদের স্বস্তি দেবে।
২০২৫ সাল শেষ হতে চলেছে, এবং ২০২৬ সাল একেবারেই কাছে। নতুন বছরের আগমন কেবল ক্যালেন্ডারের বিষয় নয়, বরং ব্যাঙ্কিং, বেতন কাঠামো এবং দৈনন্দিন ব্যয় সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনও নিয়ে আসে। ২০২৬ সালে কার্যকর হওয়া এই নিয়মগুলি সরাসরি আপনার আর্থিক এবং জীবনযাত্রার উপর প্রভাব ফেলবে। সরকার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি নতুন বছরের জন্য একটি বিস্তারিত রোডম্যাপ তৈরি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ট্যাক্স স্ল্যাব সংস্কার থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ম। এই পরিবর্তনগুলির লক্ষ্য সাধারণ মানুষকে স্বস্তি প্রদান এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদার করা। আসুন নতুন বছরে পরিবর্তন হতে যাওয়া মূল নিয়মগুলি ঘনিষ্ঠভাবে দেখে নেওয়া যাক।
27
কর্মচারীদের জন্য সুখবর
আগামী বছর বেতনভোগী ব্যক্তি এবং করদাতা উভয়ের জন্যই কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনতে পারে। সবচেয়ে বড় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু অষ্টম বেতন কমিশন। এটি ১ জানুয়ারি, ২০২৬ থেকে কার্যকর হওয়ার আশা করা হচ্ছে, যা সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে। প্রাথমিক অনুমান অনুসারে, বেতন ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। সপ্তম বেতন কমিশনে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল ২.৫৭, এখন তা বৃদ্ধি করে ৩.০ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
37
করদাতাদের বোঝা লাঘব করা হবে
এছাড়াও, নতুন আয়কর বিল করদাতাদের বোঝাও লাঘব করবে। সরকার পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) হার হ্রাসের ইঙ্গিত দিয়েছে, যার ফলে জিনিসপত্র সস্তা হতে পারে। নতুন কর বিলে কর স্ল্যাবগুলিতেও পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা সরাসরি বেতনভোগী শ্রেণী এবং ছোট ব্যবসাগুলিকে উপকৃত করবে। অতিরিক্তভাবে, কর দাখিল সহজ করার জন্য একটি নতুন 'প্রি-ফিলড আইটিআর ফর্ম' চালু করা হবে।
ইপিএফও নিয়মে পরিবর্তনগুলি বেসরকারী খাতের কর্মচারীদের জন্য উপহারের চেয়ে কম নয়। পিএফ তহবিল তোলা এখন আগের চেয়ে সহজ হবে। পূর্ববর্তী ১৩টি পৃথক শর্তের পরিবর্তে, টাকা তোলার নিয়মগুলিকে এখন তিনটি প্রধান বিভাগে ভাগ করা হয়েছে: প্রয়োজনীয় চাহিদা, পারিবারিক ব্যয় এবং বিশেষ পরিস্থিতি। এটি চিকিৎসা জরুরি অবস্থা বা বিবাহের জন্য টাকা তোলার সময় অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র দূর করবে।
57
ব্যাঙ্কিং বিধিমালা কঠোর করা হবে
অন্যদিকে, ব্যাঙ্কিং জালিয়াতি রোধে নিয়মকানুন কঠোর করা হচ্ছে। ১ জানুয়ারি থেকে, প্রায় প্রতিটি আর্থিক পরিষেবার জন্য প্যান এবং আধার কার্ড লিঙ্ক করা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। যদি আপনি এখনও এগুলি লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হতে পারে। অনলাইন জালিয়াতি রোধে ইউপিআই এবং ডিজিটাল পেমেন্ট নিরাপদ করার জন্য সিম যাচাইকরণ এবং ডিজিটাল শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা হবে।
67
মুদ্রাস্ফীতি থেকে মুক্তি সম্ভব
নতুন বছরে রান্নাঘর এবং ভ্রমণ ব্যয় কিছুটা কমতে পারে। ইউনিফাইড ট্যারিফ সিস্টেমে পরিবর্তনের কারণে সিএনজি এবং পিএনজির দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, সিএনজি প্রতি কেজি ২.৫০ টাকা এবং পিএনজির দাম ১.৮০ টাকা পর্যন্ত সস্তা হতে পারে। তবে, দূষণের কারণে, বড় শহরগুলিতে পুরানো পেট্রোল-ডিজেল যানবাহন এবং বাণিজ্যিক যানবাহনের উপর আরও কঠোর নিয়ম আরোপ করা হবে, যা লজিস্টিক পরিষেবাগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে।
77
সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন
সরকার শিশুদের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন। এটা সম্ভব যে ২০২৬ সালে, ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের উপর নতুন নির্দেশিকা কার্যকর করা হবে, যার মধ্যে পিতামাতার নিয়ন্ত্রণ এবং বয়স যাচাইয়ের মতো বৈশিষ্ট্যগুলি বাধ্যতামূলক করা হবে। এদিকে, কৃষকদের PM-KISAN প্রকল্পটি গ্রহণের জন্য একটি "অনন্য কিষাণ আইডি" তৈরি করতে হতে পারে, যা প্রকল্পে স্বচ্ছতা আনবে।