বেতন স্লিপ ছাড়া ব্যক্তিগত ঋণ পাওয়া কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু এটি অসম্ভব নয়। সাধারণত বেতনভোগীরা তাদের বেতন স্লিপের মাধ্যমে আয় সহজেই প্রমাণ করতে পারেন। তবে, অবসরপ্রাপ্ত, স্ব-উদ্যোগী, ফ্রিল্যান্সারদের বেতন স্লিপ নাও থাকতে পারে। তাদের টাকার প্রয়োজন হতে পারে। তাদের জন্য একটি সুখবর। বর্তমানে ব্যাংকগুলি বেতন স্লিপ ছাড়া বিকল্প কাগজপত্র গ্রহণ করে ব্যক্তিগত ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও নমনীয় হয়ে উঠেছে।
বেতন স্লিপ ছাড়া ভারতে কীভাবে ব্যক্তিগত ঋণ পাবেন, বিকল্প কাগজপত্র কী কী? ঋণ মঞ্জুর করার সময় ব্যাংকগুলি কী দেখে? এখন জেনে নেওয়া যাক।
বেতন স্লিপ ঋণগ্রহীতার স্থিতিশীল মাসিক আয় প্রমাণ করে। এর মাধ্যমে ঋণদাতারা ঋণগ্রহীতার আর্থিক সামর্থ্য নির্ধারণ করতে পারেন। এটি চাকরির স্থায়িত্ব সম্পর্কেও ধারণা দেয়। সঠিক ঋণের পরিমাণ, ফেরত দেওয়ার সময়কাল নির্ধারণে সাহায্য করে। দুর্ভাগ্যবশত, সবাই বেতন স্লিপ বাধ্যতামূলক এমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন না। ঋণদাতারা এই বাস্তবতা দ্রুত উপলব্ধি করছে। তাই বর্তমানে কাজের ধরণের পরিবর্তনের পর, নিয়মিত বেতন স্লিপ ছাড়াও আয় সম্পূর্ণ বৈধভাবে দেখানো যায়।
প্রথাগত বেতন স্লিপবিহীনদের মধ্যে রয়েছে:
• স্ব-উদ্যোগী পেশাদার (ডাক্তার, স্থপতি, ফ্রিল্যান্সার)
• ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী
• পরামর্শদাতা, চুক্তিভিত্তিক কর্মী
• অসংগঠিত খাতে কর্মরত
• গিগ অর্থনীতির কর্মী (ডেলিভারি অংশীদার, রাইড-শেয়ার ড্রাইভার ইত্যাদি)
এই ধরনের আবেদনকারীদের জন্য, আয়ের ধারাবাহিকতা এবং নির্ভরযোগ্যতার বিকল্প প্রমাণ ব্যবহার করে ঋণদাতারা ঋণযোগ্যতা নির্ধারণ করেন।
বেতন স্লিপ ছাড়া ব্যক্তিগত ঋণ পেতে বিভিন্ন কাগজপত্র সাহায্য করতে পারে। যেমন:
• ব্যাংক স্টেটমেন্ট: অনেক ঋণদাতা ৬ থেকে ১২ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট চান নিয়মিত লেনদেন পরীক্ষা করার জন্য।
• আয়কর রিটার্ন (ITR): স্ব-উদ্যোগী এবং ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ITR আয়ের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।
• ফর্ম ১৬ বা নিয়োগপত্র: কিছু ক্ষেত্রে, নিয়োগকর্তা কর্মচারীকে ফর্ম ১৬ বা নিয়োগপত্র প্রদান করেন।
• GST রিটার্ন বা ব্যবসায়িক প্রমাণপত্র: ব্যবসায়ীরা GST রিটার্ন, ব্যবসায়িক নিবন্ধন এবং আর্থিক বিবরণী আয়ের প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারেন।
• অন্যান্য সম্পদ বা জামানত: স্থায়ী আমানত, সম্পত্তি বা বিনিয়োগ জামানত হিসেবে জমা দেওয়া ঋণের আবেদনকে শক্তিশালী করে।
বেতন স্লিপ ছাড়া ঋণের আবেদন করার সময় মনে রাখবেন:
• স্বাস্থ্যকর ক্রেডিট স্কোর বজায় রাখুন।
• সীমিত ঋণ নিন।
• সব কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন।
• আয়ের উৎস সম্পর্কে সৎ থাকুন।
দ্রুত ঋণের জন্য ঋণগ্রহীতারা ব্যক্তিগত ঋণ অ্যাপ ব্যবহার করেন। অনেক অ্যাপ শুধুমাত্র বেতনভোগীদের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তবে, সম্প্রতি কিছু অ্যাপ বিকল্প আয়ের প্রমাণ গ্রহণ শুরু করেছে। অ্যাপ ব্যবহারের আগে তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।
বেতন স্লিপ না থাকলে ব্যক্তিগত ঋণ অ্যাপগুলিও ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ITR বা অন্যান্য আয়ের প্রমাণ চাইতে পারে।
• জরুরি তহবিলের প্রাপ্যতা।
• ব্যাংক স্টেটমেন্টের মাধ্যমে দ্রুত অনুমোদন।
• ক্রেডিট গড়ে তোলার সুযোগ।
• একসাথে অনেক ঋণদাতার কাছে আবেদন করা - এটি আপনার ক্রেডিট স্কোর কমিয়ে দেয়।
• অনিয়মিত আয় গোপন করা - আর্থিক রেকর্ডে সবসময় স্বচ্ছ থাকুন।
• EMI পরিকল্পনা উপেক্ষা করা - আবেদনের আগে আপনি প্রতি মাসে কতটা বহন করতে পারবেন তা হিসাব করুন।
বর্তমানে বেতন স্লিপ ছাড়া ঋণ নেওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। আপনি যদি সঠিক কাগজপত্র প্রদান করেন, ভালো ক্রেডিট ইতিহাস থাকে এবং আপনার আয় সঠিকভাবে রিপোর্ট করেন, তাহলে আপনার ঋণ অনুমোদনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। আপনি প্রথাগত ঋণদাতা থেকে বা ব্যক্তিগত ঋণ অ্যাপ থেকে ঋণ পান না কেন, সময়মতো ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য প্রমাণ করা গুরুত্বপূর্ণ।