
বিশের দশকেই আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক, বন্ধুত্বের সম্পর্ক সবই এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করে। অনেক নতুন জিনিস শেখা এবং বাস্তবায়ন করা হয় এই সময়ে। সর্বোপরি, অর্থ ব্যবস্থাপনার এই বয়সে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ভবিষ্যতে আপনার আর্থিক অভ্যাসের একটা রূপরেখা তৈরি হয় আপনি কীভাবে আপনার উপার্জিত অর্থ ব্যয় করেন তার উপর। তাই পরিকল্পনা করে, খুব সাবধানে এই সময়টা পার করতে হবে। বিশের দশকে অর্থ ব্যবস্থাপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখে নেওয়া যাক...
ভালো আর্থিক অভ্যাস গড়ে তোলা
ভালো আর্থিক অভ্যাস শেখা এবং তা অনুশীলন করা উচিত বিশের দশকে। কেনাকাটা করার সময় শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড সাবধানে ব্যবহার করা, ইএমআই সময়মত পরিশোধ করা, অপ্রয়োজনীয় জিনিস এবং বিলাসিতার জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না করা ইত্যাদি বিষয়গুলি শুরু থেকেই অভ্যাস করতে হবে।
নিজস্ব বাজেট
নিজের জন্য একটি বাজেট তৈরি করুন। আপনার প্রথম বেতন পাওয়ার পর থেকেই এটি করা উচিত। অতিরিক্ত বিলাসিতা বা অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়িয়ে চলুন। তবে ছোট ছোট আনন্দগুলিকেও এড়িয়ে যাবেন না। সঞ্চয় আপনার আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে। বিনিয়োগও শুরু করে দিতে হবে।
খরচের হিসাব রাখা
খুব অল্প বয়সে শুরু করলে সারা জীবন আপনার উপকারে আসবে এমন একটি অভ্যাস হল খরচের হিসাব রাখা। আপনি কীভাবে অর্থ ব্যয় করছেন তা ট্র্যাক করে রাখার পদ্ধতি এটি। প্রতিদিনের হিসাব লিখে রাখার প্রথাগত পদ্ধতি আমাদের সবার বাড়িতেই ছিল। বর্তমানে ফোনের অ্যাপের মাধ্যমে এটি সংরক্ষণ করার সুবিধা রয়েছে। এই ধরনের অ্যাপ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
জরুরি তহবিল
কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য এই তহবিল। আপনার সঞ্চয় বা বিনিয়োগের সাথে এটিকে মিশিয়ে ফেলবেন না। এটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য। প্রতি মাসে বেতন পেলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এই তহবিলে রাখুন।
বিনিয়োগ
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হল বিনিয়োগ শুরু করা। শুধুমাত্র একটি বিনিয়োগে মনোযোগ না দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করুন। স্টক, ইকুইটি, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড, এফডি, আরডি ইত্যাদি বিনিয়োগের মাধ্যমগুলির মধ্যে আপনার জন্য উপযুক্ত কোনটি তা নির্বাচন করুন। বাজারের ঝুঁকিগুলি সঠিকভাবে বুঝে বিনিয়োগ করুন। এর জন্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।
আর্থিক লক্ষ্য
আপনার প্রথম বেতন পেয়ে জীবন শুরু করার সাথে সাথেই আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী, দীর্ঘমেয়াদী হিসাবে এগুলিকে ভাগ করুন। আপনার বিনিয়োগ এবং সঞ্চয়ের উপর ভিত্তি করে আর্থিক লক্ষ্যগুলি পরিকল্পনা করুন। এর সাথে সাথে কোন বয়সে নিজের গাড়ি কিনবেন, কত বছর বয়সে বাড়ি করবেন, বাবা-মায়ের দেখাশোনা, বিয়ে ইত্যাদি কীভাবে পরিচালনা করবেন তার একটি ধারণা তৈরি করুন।
ক্যারিয়ার
আপনার চাকরি বা আয়ের উৎস উন্নত করার দিকে সর্বাধিক মনোযোগ দিতে হবে। আপনার ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে আপনার চাকরি। কর্মক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পারফর্ম করুন। নতুন জিনিস শিখুন। পেশাদারিত্ব বিকাশ করুন। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে যাচ্ছেন তা নির্বাচন করার সময় শুধুমাত্র আর্থিক উন্নতির দিকে নজর না দিয়ে ভবিষ্যতে আপনার বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ কিনা তাও বিবেচনা করুন।
বিমা
বেশিরভাগ কোম্পানিতেই বর্তমানে বেতনের সাথে অতিরিক্ত সুবিধা হিসাবে চিকিৎসা বীমা দেওয়া হয়। তবে এটি বিভিন্ন ধরণের বীমার মধ্যে একটি মাত্র। আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য উপযুক্ত কোন ধরণের বীমা তা নিজেই আলাদাভাবে নেওয়া ভালো। ব্যয়বহুল সময়ে, হঠাৎ করে কোনও বড় খরচ হলে বীমা আপনাকে সাহায্য করবে।
অর্থ ব্যবস্থাপনা একটি দক্ষতা। এটি পরিস্থিতি মোকাবেলা করে অর্জন করতে হয়। আর্থিক নিয়মানুবর্তিতা থাকলেই এটিকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।