
আজ শুক্রবার সপ্তাহের শেষ ট্রেডিং দিনে বাজার ছিল অত্যন্ত অস্থির এবং অনিশ্চয়তা ছিল চরমে। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স ৮৮০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে গেছে। ভারত-পাকিস্তান ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব কাজ করেছে। কিছু কিছু সেক্টরে শক্তি দেখা গেলেও সামগ্রিকভাবে বাজারে পতন হয়েছে। সেনসেক্স সূচক আজ ১.১০ শতাংশ পড়ে ৭৯,৪৫৪-এ বন্ধ হয়েছে এবং নিফটি ৫০ সূচক ১.১০ শতাংশ পড়ে ২৪,০০৮-এ বন্ধ হয়েছে।
নিফটি সূচকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে আইসিআইসি ব্যাঙ্ক, পাওয়ারগ্রিড কর্পোরেশন, আল্ট্রাটেক সিমেন্ট, শ্রীরাম ফিনান্স, এবং গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারে। অন্যদিকে, টাইটান, টাটা মোটরস, লারসেন অ্যান্ড টুব্রো, ভারত ইলেকট্রনিক্স, এবং হিরো মোটোকর্প আজকের বাজারের শীর্ষ লাভকারী শেয়ারগুলির মধ্যে ছিল। বিএসই মিডক্যাপ এবং বিএসই স্মলক্যাপ সূচকেও আজ বেশ চাপ ছিল। মিডক্যাপ সূচক আজ ০.২ শতাংশ এবং স্মলক্যাপ সূচক ০.৫ শতাংশ পড়ে গেছে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে।
সেক্টরের দিক থেকে বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। আজ সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স করেছে রিয়েল এস্টেট সেক্টর, যেখানে নিফটি রিয়েলটি সূচক ২.৫ শতাংশ পড়ে গেছে। প্রাইভেট ব্যাঙ্কিং সেক্টরেও ১.৩ শতাংশের পতন হয়েছে। তবে মিডিয়া, কনজিউমার ডিউরেবলস, এবং পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক সেক্টরে ০.৮ থেকে ১.৬ শতাংশের উত্থান দেখা গিয়েছে।
আজকের বাজারের পতনের প্রধান কারণ হল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করেছে। এই ভারত-পাক উত্তেজনার কারণে বাজারে কতটা কারেকশন আসবে, তা বিশেষজ্ঞরাও সঠিকভাবে ধারণা করতে পারছেন না।
দ্বিতীয়ত, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির কোনও প্রত্যাশিত ফলাফল না পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ইকুইটিতে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না।
তৃতীয়ত, অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি অনেকটা কমে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রুড অয়েলে ভ্যালু বাইং চলছে, ফলে বাজারে আগ্রহ কমে গেছে।
চতুর্থত, মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার দাম পড়ে যাওয়ায় দালাল স্ট্রিটে ব্যাপক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে।
পঞ্চমত, বৈশ্বিক বাজারেও শক্তিশালী উত্থানের কোনও ইঙ্গিত নেই। আজ সকাল থেকেই সাংহাই ও হ্যাংসেং সূচক লাল ছিল, যা ভারতের বিনিয়োগকারীদের মনোভাবকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে।