দুদিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটে থমকে গেল ২০ লক্ষ ৪০ হাজার চেকের ক্লিয়ারেন্স। এটিএমে টাকা তুলতে গিয়ে সঙ্কটে পড়তে হয়েছে বহু মানুষকে।
বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ককে বেসরকারিকরণের(Privatization of Bank) সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নন ব্যাঙ্ক কর্মীরা(Bank Employee)। আর সেই জন্যই দুদিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের (bank strike)ডাক দিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার -এই দুদিন ব্যাঙ্ক বন্ধের জেরে বেশ অনেকটাই সমস্যার মুখে সাধারণ মানুষ। সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল টাকা লেনদেনের পরিষেবা। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছি এটিএম পরিষেবাতেও(ATM Service Disrupted)। দুদিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটে থমকে গেল ২০ লক্ষ ৪০ হাজার চেকের ক্লিয়ারেন্স(Fully Stopped Check Clearence Service) । সেই হিসাব মত থমকে রইল ১৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকার লেনদেন। ফলে বিপাকে পড়লেন লক্ষ লক্ষ গ্রাহক। একইসঙ্গে এটিএমে টাকা তুলতে গিয়ে সঙ্কটে পড়তে হয়েছে বহু মানুষকে। দুদিনের দুর্ভোগের পর আজ শনিবার খোলা রয়েছে ব্যাঙ্ক। তবে দুদিনের ধর্মঘট করেই কিন্তু ক্ষান্ত হতে চান না ব্যাঙ্কের কর্মী ও অফিসাররা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, যতক্ষণ না সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের পথ থেকে সরে আসছে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। প্রয়োজন পড়লে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের পথেও হাঁটতে পারেন ব্যাঙ্ক কর্মী ও অফিসাররা। কর্মী ও অফিসার মিলিয়ে মোট ৯ টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস(UFBU) বা ইউএফবিইউ এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।
এই মঞ্চের অন্যতম সংগঠন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজেন নাগর বলেন, ২ দিনের এই ধর্মঘটের জন্য গ্রাহকদের যে অসুবিধা হল, তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন,এই ২ দিনের ধর্মঘটে কোন ব্যাঙ্ক কর্মী বা অফিসাররা কিন্তু বেতন নেননি। আর কর্মীদের বেতন না নেওয়ার পরিমান হল ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। গত ১৩ বছরে ২৪ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ অনাদায়ী ছিল। তার মধ্যে মাত্র ৫ লক্ষ কোটি টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। অন্যদিকে সেই ১৩ বছরে ব্যাঙ্কগুলি কার্যকরী মুনাফা করেছে ১৫ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে থেকে অনাদায়ী ঋণের জন্য সরিয়ে রাখতে হয়েছে ১৪ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকা। এর থেকেই স্পষ্ট, ব্যাঙ্কের মুনাফার পরিমান ঠিক কোথায় যাচ্ছে। এরপরও যদি ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ হয়, তাহলে আরও বেশি পরিমাণ টাকা লুট করে নেবে বেসরকারি সংস্থাগুলো। তাই ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাতে সামিল হয়েছে।
আরও পড়ুন-Bank Strike: ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের জেরে স্তব্ধ ATM পরিষেবা, রাজ্যে জুড়ে ঘোরতর সমস্যায় গ্রাহকেরা
আরও পড়ুন-Bank Strike : টানা ২ দিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘট, আজ থেকেই বন্ধ ATM, ব্যাহত হবে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা
আরও পড়ুন-Bank Strike: বেসরকারীকরণ রুখতে ধর্মঘটের ডাক UFBU-এর, দুদিন ব্যাপি ধর্মঘটের ডাক দেশজুড়ে
অন্যদিকে অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, ২ দিনের ধর্মঘটের পর ব্যাঙ্ক খোলা হল ঠিকই কিন্তু আন্দোলন চলবে। এই ধর্মঘটে বেশ ভালোই সাড়া মিলেছে। তাই আগামী দিনে প্রতিটি গ্রামে গঞ্জে পৌঁছে সেখানের মানুষদেরও গোটা বিষয়টি বোঝানো হবে। প্রয়োজনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটকেও হাতিয়ার করতে পারে। যে মুহূর্তে সরকার বেসরকারিকরণ সংক্রান্ত বিল আনার উদ্যোগ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।