
বুধবার, ফক্সকনের (Foxconn India) শ্রীপেরামবুদুরের (Sriperumbudur) কারখানাটির কাজকর্ম আপাতত স্থগিত করে দিল অ্যাপল (Apple) সংস্থা। তারা জানিয়েছে, কারখানায় কাজের পরিবেশ নিয়ে তদন্ত হবে। শ্রীপেরামবুদুরে ফক্সকনের কারখানায় কর্মীদের খাদ্য নিরাপত্তা এবং বাসস্থানের দুরবস্থার বিষয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। এরপরই কারখানাটির বিষয়ে বিশদ মূল্যায়নের জন্য স্বাধীন নিরীক্ষক নিয়োগ করল অ্যাপেল। সংস্থার এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইটি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর (Rajeev Chandrasekhar)।
কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী এদিন টুইট করে বলেন, কাজের পরিবেশের বিষয়ে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় আপেল সংস্থা ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ফক্সকনইন্ডিয়া দ্রুত এই ত্রুটি সংশোধন করবে এবং ইলেক্ট্রনিক ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগ করবে এবং তাদের ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে।
তার আগে অ্যাপেলের এক মুখপাত্র এই বিষয়ে বলেন, শিল্পের সর্বোচ্চ মানদণ্ড যাতে বজায় থাকে, তার জন্য অ্যাপেল সংস্থা তাদের সরবরাহকারীদের নিয়মিত মূল্যায়ন করে। সে মূল্যায়নে ধরা পড়েছে, শ্রীপেরামবুদুরে ফক্সকনের কারখানায় কর্মীদের জন্য ব্যবহৃত কিছু দূরবর্তী ডরমিটরি থাকার জায়গা এবং ডাইনিং রুম, অ্যাপেল নির্ধারিত প্রয়োজনীয় মান পূরণ করছে না। সেই মান পূরণ নিশ্চিত করতে কী কী সংশোধনমূলক কাজ করতে হবে, তার একটি বিস্তৃত তালিকা তৈরির জন্য ফক্সকনইন্ডিয়ার সঙ্গে আলোচনা করছে অ্যাপেল। সেই মান পূরণ হলে, তবেই ফের কারখানার কাজকর্ম চালু করা হবে।
কর্মীদের যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তার জন্য অ্যাপেল সংস্থা অত্যন্ত দুঃখিত বলে জানিয়েছে। ফক্সকন বলেছে, দূরবর্তী ডরমিটরিগুলিতে সুযোগ সুবিধা এবং পরিষেবার মান বাড়ানোর জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কারখানা বন্ধ খাকলেও, সমস্ত কর্মচারীকেই বেতনের অর্থ প্রদান করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) রাজধানী চেন্নাইয়ের (Chennai) নিকটবর্তী শহর শ্রীপেরামবুদুরে ফক্সকনের কারখানায় অ্যাপেল সংস্থার আইফোন (iPhone) তৈরি করা হয়। চলতি মাসের শুরুতে কারখানার ২৫০ মহিলা কর্মীকে নিয়ে তৈরি এক ডরমিটরিতে খাদ্যে বিষক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। এতে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, ১৫৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে তীব্র বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন কর্মীরা। তারপর থেকে কারখানাটি বন্ধই রয়েছে। নতুন বছরে শুরুতে কারখানাটি খুলবে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে, অ্যাপলের এই পদক্ষেপের ফলে, কারখানা খুলতে আরও দেরি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই কারখানাটিতে প্রায় ১৭,০০০ জন পুরুষ ও মহিলা কাজ করে।