
HS Semester: উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ইতিমধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে। আর সেই নতুন নিয়মানুযায়ী, প্রতিটি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের তিনটি ইলেকটিভ বিষয়ে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ নম্বর পেতেই হবে।
এর আগে সাধারণত ৩টি ইলেকটিভ সাবজেক্টের (Subject) মধ্যে যেকোনও একটিতে ৩০% নম্বর পেলেই পাশ করা যেত। তবে এখন প্রতিটি বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে ৩০% নম্বর না পেলে তা ফেল হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কিন্তু এই পরিবর্তন ছাত্রছাত্রীদের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা একাধিক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের।
উচ্চমাধ্যমিকে মোট নম্বর রয়েছে ৫০০। এই নম্বরের ভিতিত্তেই ফলাফল নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এবার তার মধ্যে প্রথম ভাষা বাংলা এবং দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি বাধ্যতামূলক। তারপর ছাত্রছাত্রীরা মোট ৪টি ইলেকটিভ বিষয়কে বেছে নিতে পারেন। কিন্তু ফলাফল (result) নির্ধারণের ক্ষেত্রে সর্বাধিক নম্বর পাওয়া তিনটি ইলেকটিভ সাবজেক্টের নম্বরকেই যোগ করা হয়ে থাকে (higher secondary semester system))।
কিন্তু এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, (higher secondary) প্রতিটি সেমিস্টারে বাংলা এবং ইংরেজিতে ন্যূনতম ৩০% করে নম্বর পেতেই হবে। আর ইলেকটিভ বিষয়ের মধ্যে যেকোনও তিনটি সাবজেক্টের প্রতিটিতে সেমিস্টারে ন্যূনতম ৩০% নম্বর পেতেই হবে পাশ করতে গেলে। নাহলে ফেল। অর্থাৎ, যদি কোনো ছাত্র বা ছাত্রী সেই ৩ বিষয়ের মধ্যে একটিতেও ৩০ শতাংশের কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তাহলে সে ঐ সেমিস্টারে ফেল করবে।
অনেকের মতে, এই নিয়ম আদতে প্রতিটি বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে ভালো ফলাফল করার জন্য তাদের উৎসাহিত করবে। কিন্তু আরেকটি মহলের ধারণা, এটি তাদের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৪ সালে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীরা হল উচ্চমাধ্যমিকে সেমিস্টার পদ্ধতির প্রথম ব্যাচ। আর এই পদ্ধতির আওতায় একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম সাধারণত চারটি সেমিস্টারে বিভক্ত রয়েছে। আর প্রতিটি সেমিস্টারে লিখিত পরীক্ষা, প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে। আগামী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পদ্ধতি পুরোপুরিভাবে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে সংসদ।
তবে নতুন এই নিয়ম চালু হলে সিলেবাসেও পরিবর্তন আসবে। সেক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে আবার বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। কারণ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সবথেকে বড় বিষয়, স্কুলগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং সেমিস্টার পরীক্ষা ও প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।
জানা যাচ্ছে, সংসদ ইতিমিধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য কর্মশালা এবং স্কুলগুলোর জন্য নির্দেশিকা জারি করার কাজ শুরু করে দিয়েছে। এই নতুন নিয়ম বাস্তবে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটি বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে পড়াশোনা করতে উৎসাহিত করবে বলেই ধারণা তাদের।
শিক্ষকদের মতে, “এই নিয়ম শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে সহায়ক। তবে তার আগে শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রস্তুতি এবং টাইম ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে।"
এখন আগামী শিক্ষাবর্ষে এই নিয়ম কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, তার উত্তর দেবে সময়।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।