জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা যা সাধারণত জেইই নামে পরিচিত, একটি জাতীয় স্তরের ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা। IIT JEE সাধারণত ২টি ধাপে পরিচালিত হয়- JEE Main এবং JEE Advanced। JEE মেইন হল একটি এন্ট্রি-লেভেল স্ক্রীনিং পরীক্ষা। এর স্কোর এনআইটি, আইআইআইটি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ভর্তির জন্য নির্ণিত হয়।
IIT JEE (মেইন + অ্যাডভান্সড) এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পড়ুয়াদের জীবনে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এই পরীক্ষার ওপরেই নির্ধারণ করে ভবিষ্যতে তারা কোন কলেজে ভর্তি হবেন৷ এই পরীক্ষাটি ভারতের কিছু সেরা এবং শীর্ষ প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান যেমন IITs, NITs ইত্যাদির প্রবেশদ্বার।
আমরা ফিজিক্যাল কোচিং ইনস্টিটিউট বা সেন্টারে গিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলছি না। হ্যাঁ বাড়িতে বসেই জেইই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। যেহেতু লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তাই অন্যরা কেমন প্রতিযোগী হবেন সেই চিন্তা না করে নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু করতে হবে। কিন্তু IIT JEE প্রস্তুতি শুরুর আগে এই বিষয়ে জেনে নেওয়া ভালো।
আরও পড়ুন - UPSC Exam Prep- বাড়িতে বসেই ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি, কীভাবে সম্ভব-জানুন
আরও পড়ুন - Medical Student-ইউটিউব দেখে প্রস্তুতি,মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ জহিরুদ্দিন
জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা যা সাধারণত জেইই নামে পরিচিত, একটি জাতীয় স্তরের ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা। IIT JEE সাধারণত ২টি ধাপে পরিচালিত হয়- JEE Main এবং JEE Advanced। JEE মেইন হল একটি এন্ট্রি-লেভেল স্ক্রীনিং পরীক্ষা। এর স্কোর এনআইটি, আইআইআইটি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ভর্তির জন্য নির্ণিত হয়। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা একবার JEE মেইন ক্লিয়ার করলে JEE Advanced-এর জন্য যোগ্য হবেন। এটি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা, যা সাধারণত IIT নামে পরিচিত।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশন সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য -
• জেইই মেইন পেপার ১ অনলাইনে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিত বিষয়ে ৩ ঘন্টার সময়সীমায় অনুষ্ঠিত হয়।
• প্রতিটি বিষয় থেকে ২৫টি করে মোট ৭৫টি প্রশ্ন থাকে। এর মধ্যে ৬০টি MCQ ধরনের প্রশ্ন।
• MCQ ধরনের প্রশ্নের জন্য প্রতিটি সঠিক উত্তরে ৪ নম্বর দেওয়া হয় এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ১ বাদ দেওয়া হয়। অপ্রত্যাশিত প্রশ্নের জন্য কোন নম্বর কাটা হয় না।
• জেইই মেইন পেপার ১ এর জন্য মোট নম্বর ৩০০ থাকে।
কিভাবে IIT JEE প্রবেশিকা পরীক্ষা সহজে ক্র্যাক করা সম্ভব
সিলেবাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিতের সিলেবাসটি ভালো করে পড়লেই প্রায় সমস্ত বিষয় কভার করা সম্ভব।
NCERT দিয়ে শুরু করুন
এনসিইআরটি বইগুলি জেইই প্রবেশিকা পরীক্ষার ভিত্তি তৈরি করে, বিশেষত জেইই মেইন-এর জন্য। NCERT বইগুলি আপনাকে যে কোনও বিষয়ের ওপর ধারণা তৈরিতে সহায়তা করবে। এও লক্ষণীয় যে JEE মেইন পেপারের ৬০-৭০% প্রশ্ন NCERT বইগুলির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়।
প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া
আজকাল প্রচুর বিনামূল্যের অধ্যয়ন সামগ্রী অনলাইন এবং অফলাইন উভয় মাধ্যমেই সহজেই পাওয়া যায়। পড়ুয়ারা IIT JEE এর প্রস্তুতির জন্য এই সংস্থানগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
মাল্টিপল সলিউশন টেকনিকের ব্যবহার
যখনই একটি নির্দিষ্ট অধ্যায়ের প্রশ্নগুলি সমাধান করা হচ্ছে তখন প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ১০০টি প্রশ্ন সমাধান না করে বরং একাধিক উপায়ে একটি নির্দিষ্ট প্রশ্ন সমাধান করতে পারলে ভালো। এতে পড়ুয়াদের মধ্যে সমস্যা সমাধানের বিকল্প পদ্ধতি শেখার আগ্রহ বাড়বে।
বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সমস্যা সংশোধন
শিক্ষার্থীরা সাধারণত হয় খুব বেশি সংশোধন করেন বা আদেও করেন না। একটি অধ্যায় শেষ করার পরে প্র্যাক্টিসে ২-৩ ঘন্টা সময় ব্যয় করা উচিত। এতে যে বিষয়গুলি পড়া হয়েছে তা বুঝতে সুবিধে হবে।
দক্ষতার সঙ্গে সময় পরিচালনা করা
বিভিন্ন অধ্যায় পড়া, পুনর্বিবেচনা এবং অনুশীলনের জন্য নির্দিষ্ট ভাবে সময় বরাদ্দ করা এবং তা মেনে চলা উচিত। সময়ের সঠিক ব্যবহার আমাদের অনেকদূর নিয়ে যেতে সক্ষম। এ ক্ষেত্রে Google Calendar ব্যবহার করা যেতে পারে।
মক টেস্টে অংশ নেওয়া
বাড়িতে জেইই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হলে মক টেস্টে অংশ নেওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। পড়ুয়ারা এভাবে নিজেদের ভুলগুলিও সংশোধন করে নিতে পারবেন। টেস্ট দেওয়ার সময় যে ৫০% প্রশ্ন সহজ মনে হবে তা আগে করে নেওয়া উচিত।
সঠিক রেফারেন্স বই নির্বাচন করা
পড়ুয়ারা প্রথম ধাপে NCERT-র বইগুলির সঙ্গে পরিচিত হয়ে গেলে রেফারেন্স বইয়ের দিকে এগিয়ে যেতে পারেন। রেফারেন্স বইয়ের নিয়মিত অনুশীলন পড়ুয়াদের জটিলতার পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। সাধারণত জেইই অ্যাডভান্সড এবং মেইন প্রস্তুতির জন্য প্রচুর অধ্যয়ন সামগ্রী আমরা অনলাইন, স্থানীয় বইয়ের দোকান থেকেই পেতে পারি। তাই স্টাডি ম্যাটেরিয়াল নিয়ে ভাবনার কিছু নেই।
পড়ুয়ারা নিজেদের স্কোর বাড়াতে নিম্নলিখিত বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারেন
১. প্রথম ২-৩ সপ্তাহের জন্য নিজের সমস্যার জায়গাগুলোতে প্রতিদিন ৪-৫ ঘন্টা ব্যয় করুন। এই ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে দিনের অবশিষ্ট সময়ে, আপনি যে বিষয়গুলিতে নিজেকে দুর্বল বলে মনে করেন সেই বিষয়গুলো ঝালিয়ে নিন।
২. পরবর্তী ২০ দিনের মধ্যে, প্রতিদিনে একটি সম্পূর্ণ সিলেবাস সংক্রান্ত জেইই মেইন বা অ্যাডভান্সড মক টেস্টে অংশ নিন।
৩. ১৪-১৫ দিনে পড়ুয়ারা নিজেদের কাছে উপলব্ধ সমস্ত বিষয় থেকে সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
লাস্ট মিনিট টিপস
১. কোনো নতুন বিষয় নিয়ে না পড়াই ভালো। শুধুমাত্র সিলেবাস অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি দেখে যাওয়া।
২. দীর্ঘ সময় ধরে অধ্যয়ন না করা, ভাল এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, তাড়াতাড়ি ঘুমানো।
৩. পরীক্ষার কেন্দ্রে ৪৫ মিনিট আগে পৌঁছনো।
৪. পরীক্ষার আগে এবং পরীক্ষার দিনে কিছু অধ্যয়ন না করা
৫. সাবধানে প্রশ্ন পড়া
৭. একটি প্রশ্নে খুব বেশি সময় নষ্ট না করা
৮. প্রথমে সাবজেক্ট অর্ডার সেট করা
৯. নিজেকে ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী রাখা।
সবশেষে পড়ুয়াদের একটাই কথা মনে রাখতে হবে, হতাশ হলে চলবে না। জেইই-র মতো কঠিন পরীক্ষায় একবারে মনমতো সাফল্য নাও আসতে পারে। কিন্তু চেষ্টা, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস থাকলে শিক্ষার্থীরা নিশ্চয়ই নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছবেন।