এই পোর্টালটি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিনামূল্যে মাতৃভাষায় শিক্ষাবিষয়ক সামগ্রী প্রদান করবে। এটি 'Geneo'-এর বিশেষ বাংলা-ভাষা সংস্করণ। স্কুলনেট গোটা ভারতবর্ষে অন্যতম পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান যারা বৈদ্যুতিন শিক্ষাব্যবস্থাকে সহজ-সরল, নির্ভরযোগ্য এবং কার্যকরী করতে বদ্ধপরিকর।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এবং ভারতের অন্যতম এডুকেশন টেকনোলজি সার্ভিস প্রোভাইডার স্কুলনেট এদিন শিক্ষার উন্নয়ন-কল্পে চুক্তিবদ্ধ হয়। গভর্মেন্টের সহযোগিতায় গোটা রাজ্যে সকল সরকারি এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলে ডিজিটাল লার্নিং এবং কেরিয়ার ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালু করা হবে। আশা করা হচ্ছে এই উদ্যোগের ফলে ছাত্রছাত্রীদের কাছে পার্সোনালাইজড লার্নিং সলিউশন পৌঁছে দেওয়া সহজতর হবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট 'বাংলার শিক্ষা', এতে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য 'Geneo eSekha' নামের একটি অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম খোলা হয়েছে। এই পোর্টালটি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিনামূল্যে মাতৃভাষায় শিক্ষাবিষয়ক সামগ্রী প্রদান করবে। এটি 'Geneo'-এর বিশেষ বাংলা-ভাষা সংস্করণ। স্কুলনেট গোটা ভারতবর্ষে অন্যতম পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান যারা বৈদ্যুতিন শিক্ষাব্যবস্থাকে সহজ-সরল, নির্ভরযোগ্য এবং কার্যকরী করতে বদ্ধপরিকর।
বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বতঃস্ফূর্ত শিক্ষা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিচ্ছে। 'Geneo eSekha' কে তাই পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্ষদের পাঠ্যসূচির কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে। এই ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল লার্নিং প্ল্যাটফর্মটি পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত গণিত, বিজ্ঞান এবং ইংরেজি পড়াবে। নবম এবং দশম শ্রেণীর জন্য পড়ানো হবে ইংরেজি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান ইতিহাস এবং ভূগোল । পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যবইগুলি এতে ডিজিটাল ফরম্যাটে পাওয়া যাবে যা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্কুল শিক্ষার পুনর্পাঠে সাহয়তা করবে।
বর্ষিয়ান এক সরকারি আধিকারিক এদিন জানান, "গত এক-বছরে অনলাইন পড়াশুনার এই দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি শিক্ষা-ক্ষেত্রের আধুনিকীকরণের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রতিপদে সচেতন যাতে আমরা পশ্চিমবঙ্গের সকল ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সঠিকমানের শিক্ষা পৌঁছে দিতে পারি। স্কুলনেটের এই সহযোগিতায় আমরা খুশি। আশা করা যায় এটি সকল স্কুলপড়ুয়ার জন্য একটি বহুভাষিক, ইন্টারেক্টিভ লার্নিং সলিউশন পৌঁছে দেবে এবং স্কুল শিক্ষার পরিপূরক হয়ে উঠবে।"
Geneo eSekha -এর মৌলিক বিশেষত্ব হল যে এটি মাল্টি মোডাল অর্থাৎ পড়ুয়াদের সর্বাঙ্গীণ শিক্ষার জন্য বিভিন্ন সুবিধাজনক বিকল্পের ব্যবস্থা রেখেছে। যেমন সিস্টেমের রেকমেন্ডেশন অনুযায়ী ইয়ুজারকে গাইডেড লার্নিং দেয়। এমনকি অফলাইন অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে সাজুয্য রেখে শিক্ষার্থীর গতিবিধি নজরে রাখা যায়। পড়াশুনার প্রতিটি ধাপেই ছাত্ররা বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে পারে। এরই পাশাপাশি কোনো বিষয় বুঝতে অসুবিধা হলে সেটিকে ফের স্পষ্টভাবে ঝালিয়ে নেবার বন্দোবস্তও রয়েছে। যা তাদের জ্ঞানের পরিসরকে বিস্তৃত করবে। এছাড়াও সেলফ অ্যাসেসমেন্ট, রিভিশন এবং পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগও রয়েছে।
বাংলার শিক্ষা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে 'CareerPath' নামের একটি বিশেষ গাইডেন্স এবং কাউন্সেলিং সলিউশন দেবে, অষ্টম থেকে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরদের জন্যই উপলব্ধ। ২০২০ সালের নয়া শিক্ষানীতি অনুযায়ী CareerPath পেশাগত এবং শিক্ষাগত কাউন্সেলিং-এর সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেবে সব স্কুলপড়ুয়াদের কাছে। ছাত্র-ছাত্রীদের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে বেশকিছু কাউন্সিলর নিয়োজিত থাকবে।
স্কুলনেটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট গৌতম মাইতি, সরকারের সঙ্গে এর সঙ্গে এই যৌথতা সম্পর্কে বলেন-
"রাজ্যের প্রতিটি শিক্ষার্থী যাতে সফল হতে পারে সেই উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আমরা একটি দূরদর্শী প্রকল্পে সহযোগিতা করতে চলেছি। পিরামিডের মাঝারি এবং নিচ তলায় থাকা মানুষজনের জন্য ডিজিটাল লার্নিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সমাজের সকল স্তরের মানুষজনের কাছে সঠিক মানের শিক্ষাকে পৌঁছে দেওয়া এবং সুযোগের সমবন্টন সুনিশ্চিত করতে আমাদের এই উদ্যোগ। আমি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আন্তরিকভাবে ঋণী, তার প্রত্যক্ষ সহায়তায় আমরা আমাদের লক্ষ্যের দিকে অবিচলভাবে এগিয়ে চলেছি। আশা রাখি ভবিষ্যতে সরকারি সহযোগিতার হাত আমাদের সঙ্গে একই ভাবে থাকবে।"
অডিও-ভিসুয়াল মাধ্যমের সাহায্যে এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্রিটিকাল থিংকিং এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করতে 'Geneo eSekha' ফলপ্রসূ হবে। এই অনলাইন প্লাটফর্ম শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষাব্যবস্থাকে অনেকাংশে উপভোগ্য করে তুলবে বলে আশা করা যায়।
আরও পড়ুন- নার্সের সংকট, নার্স খুঁজে দিলেই মিলবে ১২ হাজার ডলার কমিশন