শেষ পর্যন্ত মুরারই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী পরিবর্তন করতে চলেছে কংগ্রেস। সব ঠিকঠাক থাকলে ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের মন্ত্রী সভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত মোতাহার হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেন।
দিন কয়েক আগেই বীরভূমের মুরারই কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। দলের তরুণ নেতা পাইকরের বাসিন্দা আসিফ ইকবাল ওরফে রাসেলের নাম ঘোষণা করে দল। নাম ঘোষণার পর প্রচারেরও নেমে পড়েন রাসেল। কিন্তু মঙ্গলবার দলের মুরারই কার্যালয়ে কর্মীদের বিক্ষোভ এবং ভাঙচুরের ঘটনার পর দলের নির্দেশে প্রচার বন্ধ করেন রাসেল। তিনি বলেন, “আমি দলের সক্রিয় কর্মী। দল যে নির্দেশ দেবে তাই করব”। কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ বলেন, “শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোশারফ হোসেন প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন প্রদেশে। কিন্তু তিনি চিকিৎসক। ফলে তাঁকে সরকারি চাকরি ছাড়তে হবে। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রদেশ সিদ্ধান্ত নেবে”।
মোশারফ হসেন বলেন, “আমার মা অসুস্থ। তিনি এখন কোমায় রয়েছেন। তাঁকে বাড়িতেই আলাদা ভাবে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। ২৮ নভেম্বর বাবার মৃত্যু বার্ষিকীতে মুরারইয়ে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে আমি উপস্থিত হয়ে ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু মায়ের চিকিৎসার জন্য পিছিয়ে আসতে হয়েছিল। আমি দলকে বলে ছিলাম আমার ভাগ্নিকে প্রার্থী করার জন্য। কিন্তু দল তাকে টিকিট না দিয়ে আসিফ ইকবালকে প্রার্থী করে। এই নিয়ে এলাকার কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বহু কর্মী আমাকে ফোন করেছেন। মুরারইয়ে কংগ্রেসকে বাঁচাতেই আমি প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করেছি। চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যভবনে আবেদন করেছি। দু-এক দিনের মধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের ছাড়পত্র পাব আশা করি”।
প্রসঙ্গত, মুরারই বিধানসভা কেন্দ্রে ১৯৭২ সাল থেকে পর পর ছয়বার জয়ি হয়ে বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন মোশারফ হোসেনের বাবা মোতাহার হোসেন। ২০০১ সালে কংগ্রেস এবং ২০০৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে পরাজিত হন। মোতাহার হোসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন মুরারই বিধানসভা এলাকা সাজিয়ে তুলেছিলেন। ফলে এলাকার মানুষের কাছে মোতাহার হোসেন মুরারইয়ের রুপকার। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর ছেলে মোশারফ সেভাবে রাজনীতিতে আসেননি। এবার কংগ্রেসকে বাঁচাতে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।