তাপস দাস, প্রতিনিধি, নন্দীগ্রামের ভোট মমতা বনাম শুভেন্দু কেবল, এমন ধরে নিলে পুরোটা ঠিক হবে না। মনে রাখতে হবে, তৃণমূল জমানার আগে এখানে একটা সংহত বামপন্থী শক্তি ছিল। নন্দীগ্রামের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের নীতি এই বাম ভোটারদের বিমুখ করে। কিন্তু ১০ বছরের তৃণমূল রাজ তাঁদের মধ্যে বিরক্তি উৎপাদনও করেছে। এই পরিস্থিতিতেই সংযুক্ত মোর্চা, অর্থাৎ বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট এখানে প্রার্থী করেছে ডিওয়াই এফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জিকে।
মীনাক্ষী ফায়ারব্র্যান্ড নেত্রী। কলেজ থেকেই তিনি এসএফআইয়ের সঙ্গে। ২০১৮ সালে তিনি যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী নির্বাচিত হন। ওই বছরেই তিনি সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য হন।
বাম রাজনীতি ক্রমশ বৃদ্ধতন্ত্রে পরিণত হয়ে যাচ্ছে বলে যাঁরা অভিযোগ বা আক্ষেপ করেন, তার ঠিক উল্টোদিকের বাস্তবতা মীনাক্ষী। তাঁর জন্ম ১৯৮৬ সালে। ডাকাবুকো তো বটেই, একই সঙ্গে তিনি সুর চড়াতে পারেন জনসভায়, রাজনৈতিক সমাবেশে। সুবক্তা হিসেবে তাঁর গুণগ্রাহীর পরিমাণ বড় কম নয়। ফেব্রুয়ারি মাসে নবান্ন অভিযানের দিন তিনি পুলিশি হামলার শিকারও হয়েছিলেন।
তবে শুরু হয়ে গেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গ, ৫ মাস পর দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়াল ...
সংযুক্ত মোর্চার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ঘোষণা হবার পর শোনা যাচ্ছিল, নন্দীগ্রাম আসনটি দেওয়া হবে আইএসএফ-কে। সেক্ষেত্রে ওই অঞ্চলের মুসলিম ভোট আইএসএফের ভাগে পড়ত এবং তাতে সুবিধা হতে পারত শুভেন্দুর। সেদিক থেকে দেখলে নন্দীগ্রামে মীনাক্ষীকে প্রার্থী করার মাধ্যমে বড় ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়েছে বামেরা। অন্যদিকে মমতার বিরোধী ফায়ারব্র্যান্ড ইমেজকে মনে করাচ্ছেন এই আসানসোল নন্দিনী। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্সের স্নাতকোত্তর এই নেত্রী ভোটের ফলে কী করবেন তা বলা মুশকিল। তবে এই কেন্দ্রে ভোটের প্রচারে গিয়ে তাঁর মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস দেখা গিয়েছে, তাতে সকলেই মনে করছেন, লম্বা রেসের এক ঘোড়া পেয়ে গিয়েছে বামেরা, সে তিনি ডার্ক হর্স হলেও।