চেনা পথে ব্যর্থ, করোনা ধরতে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আমদানী করছেন ভারতীয় গবেষকরা

Published : Apr 01, 2020, 04:17 PM IST
চেনা পথে ব্যর্থ, করোনা ধরতে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আমদানী করছেন ভারতীয় গবেষকরা

সংক্ষিপ্ত

ভারত এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে করোনা রোগীর সংখ্যা প্রাথমিক সনাক্তকরণে থার্মাল স্ক্যানার ব্যবহার হচ্ছে কিন্তু তার রয়েছে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে কাজে লাগাচ্ছেন একদল ভারতীয় গবেষক

ভারত ক্রমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবচেয়ে তীব্রতম অবস্থার দিকে এগোচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে রোগীর সংখ্যা। এই অবস্থায় দেশে করোনভাইরাস রোগীদের সঠিক এবং দ্রুত সনাক্তকরণের প্রয়োজন। প্রাথমিক সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে ইনফ্রারেড থার্মাল স্ক্যানার। কিন্তু, তার বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক টেরাহার্টজ রেডিয়েশন বা টি-রে স্ক্যানিং ইউনিট তৈরির কাজ করছেন একদন ভারতীয় গবেষক।

ডিআরডিও-র সেন্চার অব এক্সেলেন্স-এর প্রাক্তন সিনিয়র বিজ্ঞানী তথা বর্তমানে কলকাতার অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটির ডিন মৌমিতা মুখোপাধ্যায় এবং এবং শিলংয়ের নর্থ-ইস্ট হিল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক দীনেশ ভাটিয়ার নেতৃত্বে একদল গবেক এই স্ক্যানিং ইউনিট তৈরির কাজ করছেন। দীনেশ ভাটিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অন্তর্ভুক্ত করে বায়োমেডিক্যাল চিত্রগুলির বিশ্লেষণ করা এবং তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় তোলার র কাজ করছেন আর ডিভাইসটির নকশা এবং বাস্তবায়নের কাজ করছেন মৌমিতা মুখোপাধ্যায়।

এক সাক্ষাতকারে দীনেশ ভাটিয়া জানিয়েছেন, যে ইনফ্রারেড থার্মাল স্ক্যানার ব্যবহার করে এখন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তাতে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। প্রথমত, রোগীর দেহে তাপমাত্রার পরিবর্তন না হলে এই স্ক্যানার দিয়ে রোগীকে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁদের দেহে রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে থার্মাল স্ক্যানারে তাদের রোগ ধরা পড়ছে না। তাদের কোভিড-১৯ টেস্ট কিট দিয়ে পরীক্ষাও করা হচ্ছে না। চার-পাঁচদিন পর যখন তাঁদের কোভিড-১৯ ধরা পড়ছে, ততদিনে তাঁরা সমাজে অনেকের সঙ্গেই মেলামেশা করছেন, এবং এরফলে রোগটি আরও ছড়িয়ে যাচ্ছে। এছাড়া এটি আয়ন-ভিত্তিক বলে দীর্ঘদিন ধরে কাছাকাছি থাকলে ডাক্তার থেকে নিরাপত্তাকর্মীদের দেহে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।

অন্যদিকে তাদের প্রস্তাবিত স্ক্যানারে যে টি-রে ব্যবহার করা হচ্ছে ফুসফুসে তার বিকিরণের ফলে আঙুলের ছাপের মতো অনন্য সনাক্তকারী চিহ্ন তৈরি হয়। সেই সঙ্গে তাঁরা আক্রান্ত এবং স্বাস্থ্যবান ফুসফুসের তুলনামূলক থার্মাল চিত্র তাঁরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাথায় ভরে দিচ্ছেন। এতে করে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই কোভিজ-১ আক্রান্তদের সনাক্ত করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, যেসব রোগীর দেহে সংক্রমণের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, তাদেরও সহজেই প্রথম পর্যায়েই চিহ্নিত করা যাবে। সেই সঙ্গে এটি আয়ন-ভিত্তিক নয় বলে শরীরে খারাপ প্রবাব পড়ার ভয়-ও নেই।  

তিনি জানিয়েছেন কোষ এবং জৈব অনুতে জলীয় উপাদান কীভাবে বিতরণ হচ্ছে তার উপর নির্ভর করেই টি-রে দিয়ে বায়োমেডিকাল রোগ নির্ণয় করা হয়। ফলে এটি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য ফুসফুসের মতো শরীরের অঙ্গগুলির পরীক্ষা করার জন্য উপযুক্ত। পৃথিবীতে এই রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন ধরণের গবেষণা চলছে। কিন্তু, টেরাহার্টজ ইমেজিং সরঞ্জাম প্রয়োগ করে রোগ নির্ণয়ের বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও গবেষণা দল কাজ করেনি। দীনেশ বাটিয়া ও মৌমিতা মুখোপাধ্যায়ের দলই এই বিষয়ে প্রথম।

দীনেশ ভাটিয়া আরও জানিয়েছেন এই যন্ত্রটি এখন বিকাশের পর্যায়ে রয়েছে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসের ছবি পাওয়া নিয়ে সামান্য সমস্যা হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের বিষয়ও রয়েছে। সব মিলিয়ে আরও মাস দুয়েক লাগবে এই যন্ত্র তৈরিতে।

 

PREV
click me!

Recommended Stories

8th Pay Commission: অষ্টম বেতন কমিশন নিয়ে সরকার জানাল সাফ কথা! ২.৮৬ হারে বৃদ্ধি পেতে পারে বেতন?
যোগী সরকারের উত্তরপ্রদেশ ডিজিটাল পাওয়ারহাউস: স্টার্টআপ, আইটিতে রেকর্ড বৃদ্ধি