ভারত বায়োটেকের (Bharat Biotech) তৈরি কোভ্যাক্সিনকে (Covaxin) ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য জরুরী অবস্থায় ব্যবহারের ছাড়পত্র দিল ডিসিজিআই (DCGI)। এর আগে জাইডাস ক্যাডিলার (Zydus Cadila) তিন-ডোজের ডিএনএ ভিত্তিক করোনা টিকাকেও (Coronavirus Vaccine) শিশুদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
২০২১ সালের ক্রিসমাসের দিনটা ভারতের করোনা মোকাবিলার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ (Vaccine for Children) এবং বুস্টার ডোজ (Booster Dose) দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন বলেই নয়, একইদিনে ভারত বায়োটেকের (Bharat Biotech) তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন (Covid-19 Vaccine) কোভ্য়াক্সিনকে (Covaxin) ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য জরুরী অবস্থায় ব্যবহারের অনুমোদনও দিল ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল বা ডিসিজিআই (DCGI)। আগেই ডিসিজিআইকে, সাবজেক্ট এক্সপার্টস কমিটি বা এসইসি (SEC) কোভ্যাক্সিনকে শিশুদের জন্য ব্যবহারের অনুমোদন দিতে সুপারিশ করেছিল।
ফলে, এই নিয়ে ভারতে দ্বিতীয় করোনাভাইরাস টিকা (Coronavirus Vaccine) শিশুদের ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র পেল। গত অগাস্ট মাসেই, জাইডাস ক্যাডিলার (Zydus Cadila) তিন-ডোজের ডিএনএ ভিত্তিক করোনা টিকা, প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১২ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ব্যবহারের করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এদিন কোভ্যাক্সিনকে শিশুদের ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দিয়ে ডিসিজিআই জানিয়েছে, ভারত বায়োটেকের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে যে ক্লিনিকাল ট্রায়াল সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা অনুযায়ী, কোভ্য়াক্সিনের দুই ডোজের ব্যবধানের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। অর্থাৎ, শিশুদের টিককরণের ক্ষেত্রেও, কোভ্যাক্সিনের প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে ব্যবধান হবে ২৮ দিন।
ডিজিসিআই, কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দেওয়ার পরপরই, জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরুর সরকারি ঘোষণা করেন। এখনও পর্যন্ত শিশুদের জন্য ছাড়পত্র পাওয়া দুটি টিকাকেই ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী সকলের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সংসদে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, কোভিড-১৯ টিকাকরণ পরিচালনার জাতীয় বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী (The National Expert Group on Vaccine Administration for COVID-19) এবং টিকাকরণ সংক্রান্ত জাতীয় প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা গোষ্ঠী (National Technical Advisory Group on Immunization) - উভয়ই ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক প্রমাণগুলি বিবেচনা করছে। কেন ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের বাদ দেওয়া হল টিকাকরণের এই পর্যায় থেকে, তার কারণ এখনও জানা যায়নি।
ভারত বায়োটেক সংস্থার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে প্রকাশ করে বলা হয়েছে, কোভ্যাক্সিনকে এমন অনন্যভাবে তৈরি করা হয়েছে, যে একই পরিমাণ ডোজ প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়। করোনার মূল রূপ এবং পরবর্তী রূপান্তরগুলির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতার দিক থেকে এই টিকা রেকর্ড স্থাপন করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তাদের সংগৃহীত তথ্যে দেখা গিয়েছে, শিশুদের ক্ষেত্রেও প্রাপ্তবয়স্কদের সমান স্তরের অনাক্রম্যতা তৈরি হচ্ছে। গত অক্টোবর মাসে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা সিডিএসসিও-র (CDSCO) কাছে কোভ্যাক্সিনের ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের তথ্য জমা দিয়েছিল ভারত বায়োটেক।