একের পর এক সদস্য করোনা আক্রান্ত। সেই আতঙ্কে এবার দল ছেড়ে পালাচ্ছে মাওবাদীরা। এক রুটিন নজরদারি চালানোর সময় এমনই তথ্য হাতে এসেছে যৌথবাহিনীর। ছত্তিশগড়ের বস্তার পুলিশের আইজি সুন্দররাজ পি এই তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন বিজাপুরে একটি অপারেশন চালানোর সময়ে যৌথবাহিনীর আধিকারিকরা একটি চিঠি খুঁজে পান। সিপিআই(মাওয়িস্ট)য়ের এক নেতা কে লেখা এক ক্যাডারের চিঠি সেটি। সেখানে লেখা মাওবাদী দলের সাত থেকে আট জন ক্যাডার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। আরও ১৫ থেকে ২০ জন ক্যাডার গুরুতর ভাবে করোনা আক্রান্ত। ফলে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছে দলের অন্যান্য সদস্যরা।
সুন্দররাজ পি জানিয়েছেন এই আতঙ্ক থেকেই দল ছেড়ে কার্যত পালাতে শুরু করেছে মাওবাদীরা। করোনা আতঙ্ক গ্রাস করছে গোটা মাওবাদী দলকে। বেশ কয়েকজন মাওবাদী ইতিমধ্যেই দলত্যাগ করেছে বলে খবর মিলেছে।
এদিকে, মঙ্গলবার ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসজনিত কারণে একক দিনের মৃত্যুর সংখ্যার সর্বকালীন রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বুধবার সকালে, তাদের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪,২০৫ জন নাগরিকের।
মঙ্গলবার বিকালেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ দাবি করেছিলেন ভারতে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের শক্তি কমার প্রাথমিক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
এদিনের পরিসংখ্য়ান অনুযায়ী ইতিবাচকতার হার বা পজিটিভিটি রেট কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবে, প্রাণহানীর ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। মঙ্গলবার সকালে জানানো হয়েছিল, সোমবার ভারতে মোট ৩৮৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এদিন সেই সংখ্যাটা আরও বাড়ল।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বড় মাপের মহামারী মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত ছিল না ভারত। আর এই কারণে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থায় যে অপ্রত্যাশিত চাপ পড়েছে, তার জন্য়ই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। সব মিলিয়ে এদিন ভারতের করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও আড়াই লক্ষ ছাড়িয়ে, ২,৫৪,১৯৭-এ দাঁড়িয়েছে।
তবে, এদিনও ভারতের নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৪ লক্ষের নিচেই রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ৩,৪৮,৪২১টি নতুন সংক্রমণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে ভারতে। ফলে দেশের সামগ্রিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৩৩,৪০,৯৩৮-এ। মঙ্গলবার সারাদেশে হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিৎসা সুবিধা থেকে ৩,৫৫,৩৩৮ জনকে করোনা মুক্ত হিসাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতে করোনাজয়ীর সংখ্যা এখন ১,৯৩,৮২,৬৪২। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৩৭,০৪,০৯৯ জন করোনা রোগী।