'তেরা মুঝসে হ্যায় পহলে...', অসম লড়াই, কর্কশ বাস্তবের সামনে থমকে যাচ্ছেন ডা. দীপশিখা-রা

Published : May 13, 2021, 04:55 PM ISTUpdated : May 13, 2021, 05:00 PM IST
'তেরা মুঝসে হ্যায় পহলে...', অসম লড়াই, কর্কশ বাস্তবের সামনে থমকে যাচ্ছেন ডা. দীপশিখা-রা

সংক্ষিপ্ত

শিফটের শেষদিকে মরণাপন্ন এক রোগীর ছেলেকে ফোন করেছিলেন ভিডিও কলে মায়ের জন্য গান গাইলেন ছেলে চোখে জল চলে এল ডাক্তার ও নার্সদেরও অসম লড়াই লড়তে গিয়ে তাঁরা থমকে যাচ্ছেন কর্কশ বাস্তবের সামনে

সকাল থেকেই পরণে পিপিই, একের পর এক রোগীকে সামলাচ্ছিলেন ডাক্তার দীপশিখা ঘোষ। ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিন-এর ডাক্তার। তাই একের পর এক কোভিড রোগীকে সামলাতে হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু, এই লড়াই যে বড় অসম। শিফটের প্রায় শেষের দিকে তাঁর চোখ পড়ল এক বৃদ্ধা রোগীর দিকে। অভিজ্ঞতা থেকে তিনি ওই রোগীকে দেখেই বুঝতে পারলেন, খুব বেশিক্ষণ আর শ্বাস পড়বে না তাঁর।  

ওই বৃদ্ধার ছেলেকে ভিডিও কল করলেন ডাক্তার দীপশিখা। তাঁদের হাসপাতালে এটা চালু আছে, মরণাপন্ন রোগীর বাড়ির লোককে ভিডিও কল করে শেষবারের মতো কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া। ওপাশ থেকে ফোন তুলতেই ওই রোগীর পুত্রকে ডাক্তার সবটা খুলে বললেন। রোগীর পুত্র তাঁকে অবাক করে কয়েকটা মিনিট চেয়ে নিলেন। মরণাপন্ন মা-কে তিনি একটি গান গেয়ে শোনাতে চান। ডাক্তার দীপশিখা ঘোষ ফোনটা সেই রোগীর সামনে ধরলেন।

কোভিড রোগীদের একটু শ্বাসের জন্য হাহাকারে ভরা ধুসর ওয়ার্ডে ডাক্তার দীপশিখার হাতে ধরা মোবাইল ফোন থেকে ভেসে এল ওই রোগীর পুত্রের কন্ঠস্বর, 'তেরা মুঝসে হ্যায় পহলে কা নতা কোই'। অস্ফুটে গেয়ে উঠলেন ডাক্তারও। ওয়ার্ডে আর সব শব্দ তখন থেমে গিয়েছে। নার্সরা সকলে কাজ ছেড়ে সেখানে এসে চুপ করে দাঁড়িয়ে। গাইতে গাইতে গলা ধরা এল পুত্রের। কয়েকটা শব্দ কান্না জড়ানো গলায় পরিষ্কার হল না। কিন্তু, তাও গানটি শেষ করলেন তিনি। তাঁর মা তখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।

ফোনটা ডাক্তার দীপশিখা নিজের দিকে ঘোরালেন। তাঁকে মায়ের ভাইটালস, অর্থাৎ অক্সিজেনের ঘনত্ব, রক্তচাপ, ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করলেন। তারপর তাঁকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে ফোন কেটে দিলেন। ডাক্তার এবং নার্সরা কয়েক মুহূর্ত সেখানে দাঁড়িয়ে রইলেন। তাঁদের সকলের চোখ তখন ভিজে গিয়েছে। তবে ওই একটুক্ষণই। পর মুহূর্তেই নার্সরা একে একে তাঁদের নিজ নিজ রোগীদের কাছে ফিরে গেলেন। আবার শুরু হল ওয়ার্ডের বিভিন্ন কাজকর্মের আওয়াজ, বেজে উঠল ভেন্ট বা ডায়ালাইসিস ইউনিটের অ্যালার্ম।

উপরের লেখাটা পড়লে মনে হবে গল্প বোধহয়। গল্পই, তবে কল্পনা থেকে নয়, ডাক্তার দীপশিখা ঘোষের দুটি টুইট অবম্বন করে লেখা। এইরকম গল্প এখন প্রতিদিন, ভারতের প্রায় প্রতিটা হাসপাতালে ঘটে চলেছে। অসম লড়াই লড়তে লড়তে কখনও কখনও এরকম কিছু 'তেরা মুঝসে হ্যায় পহলে কা নতা কোই'-র সামনে থেমে যাচ্ছেন তাঁরা, থমকে দাঁড়াচ্ছেন কর্কশ বাস্তবের সামনে। আবার নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে নেমে পড়ছেন লড়াইয়ের ময়দানে।

 

 

PREV
click me!

Recommended Stories

Bangladesh India : 'ভারতকে চোখ রাঙালে বরবাদ হবে বাংলাদেশ' হুঁশিয়ারি ভারতীয় মুসলিম সমাজের
২০২৫ না ২০২৬ কবে DA মামলার রায় ঘোষণা? সুপ্রিম কোর্ট থেকে জানা গেল নতুন আপডেট