
এবার মহারাষ্ট্রে ছড়ালো ওমিক্রন (Omicron) আতঙ্ক। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) থেকে মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) থানে (Thane) জেলার ডম্বিভালি (Dombivali) ফেরত আসা এক ব্যক্তির করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল ইতিবাচক এসেছে। তবে, ওই ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন রূপান্তর রয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। গত ২৪ নভেম্বর তিনি কেপটাউন (Cape Town) শহর থেকে ডোম্বিভালিতে এসেছিলেন। ওমিক্রন রূপান্তরের উত্থানের ফলে মহারাষ্ট্রে নতুন করে কোভিড জনিত লকডাউন (Coronavirus Lockdown) জারি করার সম্ভাবনা মাথা চাড়া দিচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) অবশ্য বলেছেন, রাজ্য আরেকটি লকডাউনের ক্ষতি বহন করার মতো অবস্থায় নেই। তাই লকডাউন যাতে না জারি করতে হয়, সেই জন্য রাজ্য়ের প্রত্যেককে অবশ্যই কোভিড-১৯ মহামারির উপযুক্ত আচরণ অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ফেস মাস্কের নিয়মিত ব্যবহার, ভিড় এড়ানো, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিষয়গুলি অনুসরণ করলেই আরেকটি লকডাউনের হাত থেকে মহারাষ্ট্রকে রক্ষা করা যাবে বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে, রাজ্যবাসীকে করোনার নতুন রূপ থেকে রক্ষা করার জন্য, যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আগাম প্রস্তুতি থাকলে ওমিক্রন এলেও কিছুই হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন উদ্ধব।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে ফেরা যে ব্যক্তি কোভিড-১৯ ইতিবাচক হিসাবে সনাক্ত হয়েছেন, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পর আর কারও সংস্পর্শে আসেননি বলেই দাবি করেছেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা। তিনি বর্তমানে কল্যাণ-ডোম্বিভালি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আর্ট গ্যালারি আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কেডিএমসি স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক রয়েছে। করোনার নতুন রূপটির মোকাবিলা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত, এমনটাই দাবি করেছে সংস্থা।
কেন বিজ্ঞানীরা করোনার এই নতুন ভেরিয়েন্ট নিয়ে এতটা চিন্তিত? দেখা গিয়েছে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন, যার মাধ্যমে করোনাভাইরাস মানব কোষে আটতে যায়, সেই অংশে ভাইরাল ভেরিয়েন্টটির ব্যাপক অভিযোজন ঘটেছে, প্রায় ৩০ টি। এই স্পাইক প্রোটিনের উপরই ভাইরাসের সংক্রমণযোগ্যতা নির্ভর করে। অন্যদিকে, ভ্যাকসিনও তৈরি করা হয়েছে এই স্পাইক প্রোটিনকে নিরস্ত্র করার উপর ভিত্তি করেই। সেই স্পাইক প্রোটিন নয়া ভেরিয়েন্টে শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে বলেই ভয় পাচ্ছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা। এই ভেরিয়েন্টটি ডেল্টা ভেরিয়েন্টের থেকেও বেশি সংক্রমণ যোগ্য কি না, সেই বিষয়টি নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে, গত শুক্রবার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ওমিক্রন ভেরিয়েন্টকে ডব্লিউএইচও করোনাভাইরাসের 'উদ্বেগজজনক রূপভেদে'র তালিকাতেই রেখেছে।