দুই দফায় মিটেছে হুগলীর ভোটগ্রহণ
আর তারপরই জেলা প্রশাসন নামল করোনা ঠেকাতে
নেওয়া হল বেশ কিছু আগাম ব্যবস্থা
তবে জেলায় করোনা টিকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে
গোটা রাজ্যের মতোই হুগলি জেলাতেও ক্রমশ ঊর্ধমুখী করোনার গ্রাফ। দুই দফায় এই জেলার বিধানসভা আসনগুলিতে, ইতিমধ্যেই ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, জেলার শহর ও মফস্বল এলাকাগুলিতেই করোনার প্রকোপ বেশি। তুলনায় গ্রামীন এলাকায় সংক্রমণ অনেকটাই কম। শহর হোক বা গ্রাম - কোথাওই পরিস্থিতি এতটুকু তবে হালকা করে দেখছে না প্রশাসন। সোমবার, জেলাশাসক দীপপ প্রিয়া জানিয়েছেন, সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে মহামারি মোকাবিলার বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্য়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হল, কোভিড রোগীদের জন্য জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার সংখ্যা বাড়িয়ে ৬৩৯ করা হচ্ছে। এরমধ্যে জেনারেল বেড থাকবে ৪৯০টি। আর আইসিইউ বা এইচডিইউ বেড থাকবে ১৪৯টি। বর্তমানে এই জেলায় শুধুমাত্র ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতাল এবং চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল-এর একটি করে ওয়ার্ড কোভিড রোগীদের জন্য বরাদ্দ আছে। ব্যান্ডেলে শয্যা রয়েছে ১০১টি এবং চন্দননগরে ১৫টি। রবিবার বাড়তি হিসাবে সিঙ্গুরের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ৭০টি শয্যা করোনা রোগীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছিল। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আগাম এই সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
সফলভাবে ভোট সামলানোর পর এবার কোভিড চ্যালেঞ্জের মুখে জেলাশাসক দীপপ প্রিয়া
জেলাশাসক দীপপ প্রিয়া এদিন জানিয়েছেন, হুগলী জেলায় এখনও কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। তবুও ভবিষ্যতের কথা ভেবেই আগাম সমস্ত রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মহকুমাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের নিজ নিজ মহকুমায় কোভিড পরিস্থিতির দিকে ২৪ ঘন্টা নজর রাখতে। প্রতিটি ব্লকে ব্লকে সেফ হোম তৈরি রাখা হচ্ছে। সংক্রমণ রুখতে সরকারি অফিসগুলিতে হাজিরা কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। বিভিন্ন বাজার কমিটিগুলির সঙ্গে প্রশাসন এই বিষয়ে আলোচনা করছে। তবে, জেলাশাসকের আক্ষেপ, এতকিছুর পরও অনেক নাগরিকই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। বিশেষ করে অটো,টোটো,বাসের মতো গণপরিবহনগুলির যাত্রীদের একাংশের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। সচেতনতা বাড়াতে রাস্তায় রাস্তায় মাইকিং ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এদিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে করোনা বুলেটিন প্রকাশ করেছে, তার তথ্য অনুযায়ী, রবিবার এই জেলায় নতুন করোনা সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে ৩৫২টি। আর এই সময়কালে করোনায় মৃত্যু হয়েছে মোট ২ জনের। বর্তমানে জেলার মোট চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ১৯৫২ জন। এরই মধ্যে হুগলীতে করোনা টিকারও অভাব দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হুগলীতে এখন নতুন করে আর কাউকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে না। যাঁরা ইতিপূর্বেই একটি ডোজ নিয়েছেন, শুধুমাত্র তাঁদেরকেই টিকার দ্বিতীয় ডোজটি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতেও ঘাটতি চাপা দেওয়া যাচ্ছে না। টিকা-প্রার্থীদের লম্বা লাইন সামলাতে হিমশিম স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। এই বিষয়ে জেলাশাসক দীপপ প্রিয়া জানিয়েছেন, তাঁদের জেলায় এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন আসেনি।