জমায়েত এড়িয়ে চলা নয়, বরং ইসলাম ধর্মালম্বীদের দলবদ্ধভাবে নমাজ পড়তে হবে! লকডাউন চলাকালীন করোনা রোধে এমনই আজব দাওয়াই বাতলালেন খোদ তৃণমূল কাউন্সিলরই। বিতর্ক তুঙ্গে আসানসোলে।
আরও পড়ুন: করোনা রুখবে ধাতব রোবট, রাজ্য়ের গবেষকরা দিল সমাধান
করোনা আতঙ্কে অবরুদ্ধ গোটা রাজ্য। মঙ্গলবার থেকে আগামী ২১ দিন দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কারণ, সংক্রমণ ঠেকাতে 'সামাজিক দূরত্ব' বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সোজা বাংলায়, কারও সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না, এড়িয়ে চলতে হবে জমায়েতও। সকলকেই গৃহবন্দি থাকতে হবে। কিন্তু ঘটনা হল, লকডাউন জারি করেও রাস্তায় ভিড়কে বাগে আনা যাচ্ছে না। নানা অছিলায় এখনও বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছে অনেকেই। কেউ কেউ তো আবার মুখে মাস্ক পরার প্রয়োজন বোধ করছেন না। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে ঘরমুখো করতে রাস্তায় টহল দিচ্ছে পুলিশ। নিয়ম না মানলে কোথাও লাঠিচার্জ করা হচ্ছে, তো কোথাও আবার কান ধরে উঠবোস করানো হচ্ছে আইনভঙ্গকারীদের। বৃহস্পতিবার রাস্তায় নেমে 'সোশ্যাল ডিস্ট্যানিং' বুঝিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের একাধিক বাজারে রাস্তা দাগও কেটে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু হলে কী হবে! খোদ তৃণমূল কাউন্সিলরই যে উল্টো কথা বলছেন। করোনা প্রতিরোধে কার্যত মানুষকে রাস্তার নামার পরামর্শ দিচ্ছেন!
আসানসোল পুরনিগমের ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আখতার হোসেন। তাঁর মতে, করোনা এমন একটি বিপদ, যার থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র রাস্তা হল সমবেতভাবে নমাজ পড়া! সকাল-দুপুর-সন্ধ্যায় ইসলাম ধর্মালম্বী পুরুষেরা যদি রাস্তা, গলির মুখে কিংবা পাড়ায় বিপুল সংখ্যায় জমায়েত করে এবং মহিলারা নিজেদের বাড়িতে নমাজ পড়েন, তাহলেই নাকি করোনার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে! শুধু মুখের কথাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় মারফর এই বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন ওই তৃণমূল কাউন্সিলর।
আরও পড়ুন: লকডাউনে পুলিশের বেধড়ক মার ক্যানসার রোগীকে, রেহাই পেল না ওষুধ বিক্রেতা
দলের কাউন্সিলরের করোনা মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি আবার আসানসোল পুরনিগমের মেয়রও বটে। জিতেন্দ্র তিওয়ারির সাফ কথা, 'কাউন্সিলরের মন্তব্য দল ও পুরনিগমের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আমরা ওকে সতর্ক করেছি, এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলেছি।'