করোনার নতুন প্রজাতি যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়ছে সেই কারণে ওই দেশের সঙ্গে উড়ান পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমেরিকার তরফে। টুইট করে একথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
বিশ্বজুড়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা আগেই ছিল। আর তার মধ্যেই করোনার নতুন প্রজাতি আরও চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার, দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজেস বা এনআইসিডি (NICD) জানিয়েছে, ৩০ টিরও বেশি স্পাইক অভিযোজন-সহ করোনাভাইরাসের এক নতুন রূপভেদ (New Covid Variant) মিলেছে। এখনও পর্যন্ত খুব অল্প সংখ্যক মানুষের শরীরে এই প্রজাতি দেখা গিয়েছে। যদিও এই প্রজাতি চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে গবেষকদের কপালে। কারণ তাঁদের অনুমান, করোনাভাইরাসের যে টিকাগুলি (Coronavirus Vaccine) দেওয়া হচ্ছে, সেগুলি এই নয়া প্রজাতিকে ঠেকাতে পারবে না। আর যেহেতু এই প্রজাতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়ছে সেই কারণে ওই দেশের সঙ্গে উড়ান পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমেরিকার (America) তরফে। টুইট করে একথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (President Joe Biden)।
টুইটারে (Twitter) করোনার এই নতুন প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাইডেন। তিনি লেখেন, "করোনার এক নতুন প্রজাতিকে শনাক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization)। যা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে যতদিন এই প্রজাতি সম্পর্কে আমাদের কাছে উপযুক্ত তথ্য না আসে ততদিন দক্ষিণ আফ্রিকা সহ আরও সাতটি দেশের বিমান পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা জারির নির্দেশ দিচ্ছি।"
আরও একটি টুইটে তিনি লেখেন, "এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞান ও আমার বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যদের পরামর্শ মেনে চলব। এই সময় নিজের সুরক্ষাকে আরও মজবুত করে তুলতে টিকা গুরুত্বপূর্ণ। যদি টিকাকরণ সম্পন্ন হয়ে থাকে তাহলে অবিলম্বে বুস্টার ডোজ নিয়ে নিন। আর টিকাকরণ সম্পন্ন না হলে আজই টিকা নিন।"
করোনাকে শেষ করার জন্য টিকাকরণের উপরই সবথেকে বেশি জোর দিয়েছেন বাইডেন। তিনি লেখেন, "বিশ্বজুড়ে টিকাকরণ সম্পন্ন না হলে করোনাকে কখনওই শেষ করা যাবে না। এই খবর আমাদের সেই বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন দেশকে বাকি দেশের তুলনায় সর্বাধিক করোনার টিকা সরবরাহ করেছে আমেরিকা।"
আরও পড়ুন- দরকার বুস্টার শট, করোনার নতুন রূপ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ সৌম্যা স্বামীনাথনের
দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি যে সাতটি দেশের উড়ানের উপর আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেগুলি হল, জিম্বাবোয়ে, নামিবিয়া, লেসোথো, এসোয়াতিনি, মোজাম্বিক, মালাওয়াই, বোতসোয়ানা।
উল্লেখ্য, করোনার এই নয়া রূপভেদটি হল বি.১.১.৫২৯ ভেরিয়েন্ট (B.1.1.529 Variant) বা বতসোয়ানা ভেরিয়েন্ট (Botswana variant)। বতসোয়ানাতেই (Botswana) প্রথমে এই ভেরিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল বলে এই নাম দেওয়া হয়েছে। তারপর দক্ষিণ আফ্রিকা এবং হংকং-এও (Hong Kong) এই প্রজাতির দেখা মিলেছে। এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট ২২ টি ক্ষেত্রে বতসোয়ানা ভেরিয়েন্ট রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে এনআইসিডির কাছে করোনার এই প্রজাতি সম্পর্কে বিশেষ কোনও তথ্য একেবারেই নেই। ফলে এই প্রজাতি সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে তার উপর কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।