হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের বন্ধুত্বতা, ২৫০ কিমি পথ পার করে কলকাতায় চিকিৎসারত মুমূর্ষূর কাছে গেল রক্ত

  • রক্তের প্রয়োজনে হাত বাড়াল বন্ধুত্বের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ
  • অতিমারির এই সঙ্কটকালে এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত 
  • পুরুলিয়া থেকে কলকাতায় পৌঁছল প্যাকেটবন্দি রক্ত
  • রক্তদাতা সন্তু বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে রোগীর পরিবার
     

Asianet News Bangla | Published : May 22, 2021 2:31 AM IST / Updated: May 22 2021, 08:30 AM IST

সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে- এই আপ্তবাক্য ফের প্রতিষ্ঠা পেল এই ঘোর অতিমারিতে। যার জেরে ২৫০ কিলোমিটার থেকে এক বিরল গ্রুপের রক্ত পৌঁছল কলকাতায় চিকিৎসারত রোগীর কাছে। এই রক্ত আপাতত সেই সঙ্কটাপন্ন রোগী-র কাছে যেন জীবনদায়ী হয়ে উঠেছে। অতিমারির এই কঠিন সময়ে পারস্পারিক সৌহার্দ যে বড় হয়ে উঠছে, একে অপরের প্রতি কর্তব্য পালন বড় হয়ে উঠছে তা প্রমাণ করে দেখালেন সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়। 

পুরুলিয়ার রেলকর্মী যুবক সন্তুর উদ্যোগ স্বাভাবিকভাবেই এখন মন কাড়ছে সকলের। কী ভাবে এক অসম্ভব-কে সম্ভব করে দেখালেন সন্তু। জানা গিয়েছে, অমিত নাথের বাবা কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই সঙ্কটে। এহেন পরিস্থিতিতে অমিতের বাবা-কে রক্ত দেওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু, ও নেগেটিভ রক্তের জোগানটা কোনওভাবেই সহজ হয়নি অমিত এবং তাঁর পরিবারের কাছে। 

অমিতের এক বান্ধবী শ্রাবণী চন্দ্র ও নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট শেয়ার করতে থাকেন। বন্ধু বলে পুরুলিয়া শহরেও একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রপ রয়েছে। যার অ্যাডমিন আবার হানিফ শেখ নামে এক যুবক। শ্রাবণী ওই গ্রুপেই হানিফের কাছে ও-নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান। 

"

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই মেসেজ দেখেই এরপর যোগাযোগ করেন সন্তু বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি নিজেও বন্ধু নামে ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য। সন্তু জানিয়ে দেন কলকাতায় গিয়ে তিনি রক্ত দিয়ে আসতে রাজি। কারণ তাঁর রক্ত ও-নেগেটিভ। অমিতের কাছে পৌঁছয় সন্তু-র বার্তা। তিনি এই অতিমারিতে সন্তুকে টেনে কলকাতায় আনতে রাজি ছিলেন না। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন হানিফের মাধ্যমে সন্তুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন অমিত। ঠিক হয় রঘুনাথপুরেই সরকারের সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতালে সন্তুর রক্ত সংগ্রহ করা হবে। কলকাতায় ভর্তি থাকা রোগীর ছেলে অমিত নাথ রঘুনাথপুর হাসপাতালে পৌঁছেও যান বৃহস্পতিবার সকালে। অমিতদের বাড়ি রঘুনাথটপুরেরই ঝারুখামার মোড় এলাকায়। 

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় হাসপাতালে সংগ্রহ করা হয় রক্ত। আইসপ্যাকে ভালো করে প্যাকেট করে দেওয়া হয় সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বেচ্ছায় দান করা ও-নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত। অতিমারির জেরে রক্ত সঙ্কট এখন চরমে উঠেছে। তারমধ্যে ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পও কোভিড ১৯-এর কারণে অনুষ্ঠিত করা যাচ্ছে না। ফলে রক্তের ভাড়ারে বিশালরকমের টান পড়েছে। অনেকেই আবার কোভিড ১৯-এর বিধি নিষেধ মেনে হাসপাতালে গিয়ে রক্তদান করছেন। কিন্তু, এি ধরনের বিষয় যথেষ্টই সময় সাপেক্ষ। সন্তু যেভাবে এই অতিমারিতে সংক্রমণের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে অমিত-কে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন তাতে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না অমিত। সন্তু-র দান করা রক্ত নিয়ে তিনি বৃহস্পতিবারই কলকাতায় পৌঁছে যান। যে হাসপাতালে অমিতের বাবা ভর্তি রয়েছেন সেখানে গিয়ে কর্তৃপক্ষের হাতে রক্তের প্যাকেটও তুলে দেন তিনি। 

Share this article
click me!