৯ টি চারের ব্যবধানে বিশ্বজয়ী ইংল্যান্ড! ১০২ ওভারেও আলাদা করা গেল না দুই দলকে

নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল ইংল্যান্ড। ৫০ ওভারের পর ম্যাচ টাই হয়ে যায়। তারপর সুপার ওভারের খেলাতেও দুই দলই ১৫ রান করে। এরপর চার-ছয় গণনায় এগিয়ে থাকায় জিতে যায় ইংল্যান্ড।

amartya lahiri | Published : Jul 14, 2019 6:55 PM IST / Updated: Jul 15 2019, 02:02 PM IST

চলতি বিশ্বকাপ সবচেয়ে আকর্ষণীয় হবে বলে আশা করা হয়েছিল। বৃষ্টি এসে একের পর এক ম্য়াচে থাবা বসিয়ে টুর্নামেন্টের জৌলুস অনেকটাই ফিকে হয়েছে। কিন্তু যাবতীয় টান টান উত্তেজনা বোধ তোলা ছিল ফাইনালের জন্যই। একদিনের ক্রিকেটের একেবারে সেরা বিজ্ঞাপন হয়ে থাকল একদিনের ক্রিকেটের সবচেয়ে মূল্যবান ম্য়াচটিই। রান বা উইকেটে নয়, মাত্র ৭টি বেশি চার, ছয় মারার দৌলতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হল ইংল্যান্ড।

সাধারণত প্রচন্ড স্নায়ুর চাপের জন্য এই ধরণের বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্য়াচ খুব একটা জমে না। কিন্তু এই বিশ্বকাপে ফাইনালের মতো এত জমজমাট কোনও ফাইনাল এর আগে দেখা যায়নি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে দুই দলের রান হল সমান সমান। তাই প্রথম বার বিশ্বকাপে দেখা গেল সুপার ওভার। সুপার ওভারেও আলাদা করা গেল না দুই দলকে। সেখানেও দুই দলই তুলল ঠিক ১৫ রান। কিন্তু ইনিংসে মোট ৭টি বেশি চার, ছয় মারার দৌলতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হল ইংল্যান্ড।

এদিন প্রথমার্ধে বেশ ঝিমোন ক্রিকেটই খেলা হয়েছে। দুর্দান্ত বল করেন ইংরেজ পেসাররা। হেনরি নিকোলস (৫৫) ও টম ল্যাথাম ছাড়া কেউ বড় রান পাননি। অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন আউট হওয়ার পরই খেলার মোড় ঘুরে গিয়েছিল। ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান তুলেছিল তারা। এই রানটা শক্তিশালী ইংরেজ ব্যাটিং লাইনআপ সহজেই তুলে দেবে এরকমটাই আশা করা হয়েছিল।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যে এত নাটক জমা ছিল তা কেউ সম্ভবত ভাবতে পারেননি। সম্ভবত ভেবেছিলেন একমাত্র কিউই ক্রিকেটাররা। টুর্নামেন্টে বারবার দেখা গিয়েছে, আগে যাই রান হোক, পরে তাদের বোলাররা সেই রানটা সফলভাবে  রক্ষা করেছে। এদিনও বল হাতে দলকে গোটা ম্য়াচে খেলায় রেখে দিয়েছিলেন কিউই বোলাররা। ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্ট দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন। মাঝের ওভারে এসে উইকেট তুললেন লকি ফার্গুসন ও জিমি নিশাম। আর ১০ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ইংরেজদের রান একেবারে শুষে নিয়েছিলেন গ্র্যান্ডহোম।

২৩ ওভারে ৮৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দারুণ সমস্যায় পড়েছিল ইংরেজ ব্য়াটসম্যানরা। সেই সময়ে আবার ভাবা হচ্ছিল ব্ল্য়াকক্যাপসরা সহজেই জিততে চলেছে। কিন্তু, এখান থেকে বেন স্টোকস (৮৪) ও জস বাটলার (৫৯) ১১০ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু বাটলার আউট হতেই ফের ম্য়াচ ঢলে পড়ে কিউইদের দিকে।

শেষ ওভারে, ১৫ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের জোতার জন্য। হাতে ছিল সেষ দুই উইকেট। অপরাজিত ছিলেন স্টোকস। শেষ ওভার বল করতে আসেন বোল্ট। প্রথম দুই বলে কোনও রান না হওয়ার পর তৃতীয় বলে ছয় মারেন স্টোকস। চতুর্থ বলে দৌড়ে দুইরান নেন, আবার নিউজিল্যান্ড ফিল্ডারের ছোড়া বল স্টোকস-এর ব্যাটে লেগে ওভার থ্রো-তে চার হয়ে যায়। শেষ দুই বলেই ১টি করে রান আসে এবং দুটি রান আউট হয়। ফলে ম্যাচ টাই হিসেবে শেষ হয়।

ফলে প্রথমবার বিশ্বকাপের খেলা গড়ায় সুপার ওভারে। ইংল্য়ান্ডের পক্ষে ব্য়াট করতে আসেন বাটলার ও স্টোকস। দুটি চার সহ তাঁরা দুজনে বোল্টের ওভারে ১৫ রান তোলেন।

কিউইরা সুপার ওভারে ব্যাট করতে পাঠায় জিমি নিশাম ও মার্টিন গাপ্টিলকে। প্রথম পাঁচ বলের মধ্যে একটি ছয়-সহ ১৪ রান তোলেন নিশাম। কিন্তু শেষ বলে স্ট্রাইকে আসেন গাপ্টিল। দুই রান নিতে গিয়ে প্রথম রান সম্পূর্ণ করলেও দ্বিতীয় রানের সময় তিনি রানআউট হন। ফলে দুই দলের বাউন্ডারি গণনা করা হয়। ইংল্যান্ড ৭টি বেশি চার-ছয় মারার দৌলতে জিতে যায়।

Share this article
click me!