সাতে সাত, বোঝা গেল কে কার বাপ - বিশ্বমঞ্চে বিরাট বিবৃতি


বৃষ্টিতে নষ্ট ১০ ওভারের খেলা। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে জয়ী ভারত। সপ্তম বিশ্বকাপ পাক-মোকাবিলায় জয় এল ৮৯ রানে। ম্যাচের সেরা রোহিত শর্মা।

amartya lahiri | Published : Jun 16, 2019 6:58 PM IST / Updated: Jun 17 2019, 12:21 PM IST

প্রথমেই বলে রাখা যাক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রবিবার সপ্তম বিশ্বকাপ মোকাবিলাতেও জিতে ভারত শুধু তার এই ম্যাচে জয়ের ধারা বজায়ই রাখল না, সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের বাকি দলগুলিকেও বড় বিবৃতি দিয়ে রাখল। অন্যতম প্রধান ব্যাটসম্যান শিখর ধাওয়ান ও অন্যতম প্রধান বোলার ভুবনেশ্বর কুমারকে ছাড়াই ডার্কওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৮৯ রানে জিতল।  

এদিন ভারত-পাক ম্যাচের উত্তেজনাতে পুরোপুরি জল না ঢালতে পারলেও বরুণদেব ১০ ওভার কেড়ে নিলেন ম্যাচ থেকে। প্রথমে ভারতের ইনিংসের ৪৭তম ওভার ও পাকিস্তান ইনিংসের ৩৫তম ওভারে দুবার বেশ জোরে বৃষ্টি এল। খেলা বন্ধ থাকল। ফলে ডার্কওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ভারতের ৫০ ওভারে ৩৩৭ রানের লক্ষ্যমাত্রাটা নেমে এসেছিল ৪০ ওভারে ৩০২ রানে। পাক ইনিংস চলাকালীন বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হয়েছিল যখন তন তাদের রান ছিল ৩৫ ওভারে ১৬৬/৬। অর্থাৎ খেলা চালু হওয়ার পর তাদের সামনে লক্ষ্য ছিল ৫ ওভারে ১৩৬! পাকিস্তান করতে পারল ২১২/৬।

আরও পড়ুন - বড় পরাজয়, তাও নাছোড়বান্দা পাক বিদেশমন্ত্রী! যেচে অপদস্থ হতে চাইলেন

এদিন শুরু থেকে কখনই পাকিস্তান ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে পায়নি। শিখর ধাওয়ানের অনুপস্থিতিতে রোহিত শর্মা এদিন শুরুর আগ্রাসী ব্য়াটিং করেছেন। আমির ছাড়া বাকি পাকিস্তানবোলাররা সেভাবে জায়গায় বল রাখতে পারেননি। হাসান আলির বলে রোহিতের ব্যাট থেকে এদিন একটি দুর্দান্ত আপার কাট বের হয়। কভার এলাকা দিয়ে হওয়া ওভার বাউন্ডারিটি ২০০৩ সালে শোয়েব আখতারের বলে সচিন তেন্ডুলকারের মারা আপার কাটে ছয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১১৩ বলে ১৪০ রান করে যান তিনি। ১৪টি চার ও ৩টি ছয় মেরেছেন।

তাঁকে শুরুতে দারুণ সঙ্গত দিয়েছেন কেএল রাহুলও। ৫৭ রান করে রোহিতের সঙ্গে প্রথম উইকেটে ২৪ ওভারে ১৩৬ রান তুলেছেন। তিনি আউট হওয়ার পর রোহিকতের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন ভারত অধিনায়ক। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতেও তাঁরা ৯৮ রান জুড়েছেন। রোহিত আউট হওয়ার পর কোহলি মারতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু আউট না হলেও নিজেই আউট মনে করে মাঠ ছাড়েন তিনি। রিভিউ নেননি। পরে দেখা গিয়েছে বল তাঁর ব্যাটেই লাগেনি। এদিন তিনি ৭১ রান করেন। হার্দিক (২৬) ও ধোনি (১) বড় রান পাননি। ব্যাট চলেনি বিশ্বকাপে এদিনই অভিষেককারী বিজয় শঙ্কর (১৫*)-এর ও।

আরও পড়ুন - সচিন পড়লেন পিছনে, ম্যাঞ্চেস্টার মহারণেই বিশ্বরেকর্ড কিং কোহলির

ব্যাটে রান না পেলেও থ্রিডি ক্রিকেটার বাকি দুটি বিভাগে কিন্তু লেটার নম্বরে পাশ করলেন। এদিন ভারতকে প্রথম ব্রেক থ্রু দেন তিনিই। শুরুতে বৃষ্টিভেজা পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে দারুণ বল করছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার ও  ষশপ্রীত বুমরা। কিন্তু ২.৪ ওভার বল করার পরই হ্য়ামস্ট্রিং পেশিতে টান ধরায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন যুবি। আর অসমাপ্ত ওভার বল করতে এসে প্রথম বলেই ইমাম উল হককে ফিরিয়ে দেন বিজয় শঙ্কর।

ম্যাচের শুরুতে তাঁর সম্পর্কতে বিরাট বলেছিলেন, শঙ্কর প্রয়োজনে তিন-চার ওভার করে দিতে পারবেন। এদিন ৫.২ ওভার বল করে ২২ রান দিয়ে ইমামের পাশাপাশি পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ (১২)-এর গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দখল করলেন। সেই সঙ্গে দারুণ ফর্মে থাকা মহ্মদ হাফিজ (৯)-এর ক্যাচও নিলেন। বিশ্বকাপ অভিষেকটা তাঁর স্মরণীয় হয়ে থাকল।

একটা সময়ই পাকিস্তান ভারতের সমানে সমানে টক্কর দিতে পেরেছে, যখন বর্তমান পাক দলের ব্য়াটিং দুই স্তম্ভ, ফখর জামান (৬২) ও বাবর আজম (৪৮) ব্য়াট করছিলেন। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে জুটিতে তাঁরা ১০৪ রান যোগ করেন। ঠিক যখন মনে হচ্ছে ম্য়াচ পাকিস্তানের দিকে ঢলে যাচ্ছে তখনই বিরাট তাঁদের সামনে ছেড়ে দেন কুল-চা'কে। যা একেবারেই হজম হল না পাক ব্যাটসম্যানদের।

ফের একবার কুলদীপের হাতে উইকেট খোয়ালেন বাবর আজম। এশিয়া কাপের পর কুলদীপ তাঁর বিরুদ্ধে ২-০তে এগিয়ে গেলেন। ফখর জামানও কুলদীপের শিকার। চাহাল কিন্তু আজ ততটা কার্যকর হতে পারেননি। শেষের দিকে ইমাদ ওয়াসিম (৪৬), ও শাদাব খান (২০) চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শঙ্করের বলে ৩৫তম ওভারে সরফরাজের আউট হওয়ার পরই পাকিস্তানও ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল। আর ডার্কওয়ার্থ ও লুইস সাহেব পাক কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দেন।

আরও পড়ুন - বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচ, প্রথম বলেই অনন্য নজির শঙ্করের

শিখর ও ভুবিকে ছাড়াই ভারতের এই মসৃণ জয়ের পর বাকি দলগুলি কিন্তু বিরাট বাহিনীকে বাড়তি সমীহ করতে বাধ্য হবে। এমনকী যে ইংরেজরা নিজেদের লোক ছাড়া কারোর প্রশংসা করতেই চান না সেই ইংরেজদের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভন পর্যন্ত এই ম্যাচের পর ভারতকেই এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা দল হিসেবে মেনে নিয়েছেন।

Share this article
click me!