ব্য়াটিং-বোলিং-ফিল্ডিং - তিন বিভাগেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে পিছনে ফেলে বিশ্বকাপে নেমেই দারুণ জয় পেল বাংলাদেশ। প্রথমে সাকিব-মুশফিকুরের ১৪২ রানের জুটিকে কেন্দ্র করে বাকি বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরাও দারুণ ব্য়াটিং করলেন। যার দৌলতে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। সেই রান তাড়া করতে নেমে প্রথম থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রানের বেশি তুলতে পারল না তারা। বাংলার বাঘরা প্রথম ম্যাচেই ২১ রানে জয়ী হল। ম্যাচের সেরা হলেন সাকিব আল হাসান।
এদিন বাংলাদেশের ৩৩০ রানের বড় লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা কখনই জেতার মতো খেলেনি। বস্তুত ম্য়াচের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কখনই তারা জেতার মতো অবস্থায় ছিল না। বাংলাদেশকে শুরুতে ব্য়াট করতে ডেকেছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। কারণ তাঁদে বোলিং-ই তাঁদের প্রধান শক্তি। কিন্তু এদিন হতাশই করেছেন তাঁদের বোলাররা।
বরং দুর্দান্ত পরিণত ব্যাটিং-এর নিদর্শন রাখলেন বাংলাদেশী ব্য়াটসম্যানরা। ২০১১ সালে এই দুই দলের শেষ বিশ্বকাপ সাক্ষাতে ২০১১ সালে বাংলাদেশ ৭৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। আর এদিন একেবারে প্রথম থেকে রাবাডা-তাহিরদের শাসন করলেন সাকিবরা।
শুরুটা করেছিলেন সৌম্য সরকার (৪২)। শেষ পর্যন্ত অর্ধশতরান হারালেও তাঁর হাত থেকে এদিন দুর্দান্ত কিছু শট দেখা গিয়েছে। তাঁর তৈরি ভিতের উপর দারুণভাবে ইনিংস গড়েন দুই অভিজ্ঞ বাংলাদেশী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান (৭৫) ও মুশফিকুর রহিম (৭৮)। নিজেদের মধ্যে তাঁরা ১৪২ রানের জুটি গড়েন, যা বাংলাদেশের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের জুটি। আর শেষ পাঁচ ওভারে মারকুটে ব্যাটিং করে একদিনের ক্রিকেটে দলের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসে পৌঁছে দেন মোসাদ্দেক হোসেন (২৬) ও মাহমুদুল্লা (৪৬)।
রাবাডা উইকেট পাননি। মরিস ২টি উইকেট পেলেও প্রচুর রান দিয়েছএন। কিছুটা ভালো বল করেন ফেহলুকাওইও এবং তাহির।
রান তাড়া করতে নেমে কখনই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না প্রোটিয়ারা। ডিকক ও মার্করাম বেশ গুটিয়েই রেখেছিলেন নিজেদের। দশম ওভারে হাস্যকর ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ডি কক (২৩)।
এরপর ইনিংস কিছুটা থিতু করেছিলেন মার্করাম ও অধিনায়ক ডু প্লেসিস। কিন্তু ২০তম ওভারে সাকিব লহাতে ধাক্কা দেন মার্করাম (৪৫)-কে বোল্ড করে। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি আসে ২৭তম ওভারে। মেহিদি হাসানের বলে বোল্ড হয়ে য়ান ডু প্লেসিস (৬২)। আচমকাই এগিয়ে এসে পাল্টা আক্রমণ করতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্পিনে ধোকা খেয়ে যান।
মিলার (৩৮), ডুসেন (৪১) কিছুটা চেষ্টা করলেও জুটি গড়তে পারেননি। শেষ ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার ১০৩ রান দরকার ছিল। টি২০-এর যুগে তা সম্ভব। কিন্তু, ডুমিনি (৪৫), ফেহলুকাওইও (৮), মরিস (১০)-রা ফিনিশারের ভূমিকা নিতে পারেননি।
বাংলদেশের বোলারদের মধ্যে অধিনায়ক মোর্তাজা ছাড়া বাকিরা প্রত্য়েকেই সফল। মুস্তৈাফিজ ৩ উইকেট নিয়েছেন। বিশ্বকাপে অভিষেক ম্যাচে সইফুদ্দিন একটু বেশি রান দিলেও তিনিও ২ উইকেট নিয়েছেন। আর আলাদা করে বলতে হবে অফস্পিনার মেহিদি হাসান (৪৪-১) ও সাকিব (৫০-১)-এর কথা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ৫০ ওভারে বাংলাদেশ ৩৩০/৬ (মুশফিকুর রহিম ৭৮; আন্দিল ফেহলুকাওইও ৫২-২), ৫০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩০৯/৮ (ফাফ ডু প্লেসিস ৬২, মুস্তাফিজুর রহমান ৬৭-৩), বাংলাদেশ জয়ী ২১ রানে।