T20 WC 2021, Aus vs Pak- 'হিরো থেকে জিরো' শাহিন আফ্রিদি, রুদ্ধশ্বাস ম্য়াচ জিতে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

আজ টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১ (T20 World Cup 2021) -এর দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে (Semi Final)অস্ট্রেলিয়া বনাম পাকিস্তান (Australia vs Pakistan) ম্য়াচ। বাবর আজমের (Babar Azam) দলকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌছল অ্য়ারন ফিঞ্চের (Aaron Finch)।  প্রথমে ব্যাট করে ১৭৬  রান  করে পাকিস্তান। রান তাড়াকরতে ৬ বল বাকি থাকতেই জয় পেয়ে যায় অজিরা।
 

Asianet News Bangla | Published : Nov 11, 2021 6:09 PM IST / Updated: Nov 12 2021, 12:26 AM IST

এ যেন ২০১০ টি ২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) পুনরাবৃত্তি। সেইবারও পাকিস্তানের জেতা ম্য়াচ কার্যত মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিলেন 'মিস্টার ক্রিকেট' মাইক  হাসি। বেদম প্রহার করেছিলেন তৎকালীন পাক তারকা স্পিনার সৈয়দ  আজমলকে। তার ঠিক ১১ বছর পর কার্যত হারা ম্য়াচ আরও একবার পাকিস্তানের (Pakistan)কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল ব্যাগি গ্রিণরা। এবার মাইক হাসির ভূমিকায় ম্যাথু ওয়েড (Matthew Wade)। ১৯তম  ওভারের পাক দলের প্রধান বোলার শাহিন আফ্রিদিকে (Shaheen Afridi)  পরপর তিনটি ছয় সহ এক ওভারে ২২ রান নিয়ে খেলা শেষ করে দেন  ম্যাথু ওয়েড। একটিও ম্যাচ না হেরে সেমি উঠে সেখান থেকে বিদায় নিতে হল পাক দলকে। টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১-(T20 World Cup 2021) এর  অন্যতম সেরা ম্য়াচ  দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ম্য়াচে প্রথমে ব্য়াট করে ২০ ওভারে ১৭৬ রান করে পাকিস্তান। অর্ধশতরান  করেন মহম্মদ রিজওয়ান (Mohammad Riwan) ও ফখর জামান (Fakhar Zaman)। রান তাড়া করতে নেমে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারালেও নার্ভ ধরে  রেখেছিলেন অজিরা। প্রথমে ডেভিড ওয়ার্নার (David Warner) ও পরে মার্কাস স্টয়নিস (Marcus Stoinis)ও ম্য়াথু ওয়েডের বিধ্বংসী ইনিংসের সৌজন্য়ে এক ওভার আগেই জয়ের লক্ষ্যে পৌছে গেল অস্ট্রেলিয়া (Australia)। ৫ উইকেটে ম্য়াচে জিতে ফাইনালে নিউজিল্য়ান্ডের মুখোমুখি হবে অজিরা।

এদিন টস হারলেও প্রথম ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন  পাকিস্তানের দুই ওপেনার মহম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম (Babar Azam)। একের পর এক আক্রমণাত্মক শট খেলতে থাকেন তারা। কামিন্স, স্টার্কদের বোলিং অনায়েসেই  খেলতে থাকেন  রিজওয়ান ও বাবর আজম। সপ্তম ওভারেই অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ করে ফেলে এই  জুটি। প্রথম উইকেটে ১০ ওভরে ৭১ রানের পার্টনারশিপ করার পর  আউট হন বাবর আজম। ৩৯ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে আউট হন  পাকিস্তান অধিনায়ক। বাবর ফিরলেও একই ছন্দে ইনিংস টেনে  নিয়ে যান রিজওয়ান ও ফখর জামান। প্রথমদিকে ফখর একটু স্লো খেলেন। তবে নিজের মারকাটারি ইনিংস চালিয়ে যান রিজওয়ান। অর্ধশতরানও পূরণ করেন তিনি।  তারপরও নিজের ইনিংস চালিয়ে যান রিজওয়ান। অবশেষে ১৪৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে পাকিস্তানের। ৬৭ রান করে মিচেল স্টার্কের বলে আউট মহম্মদ রিজওয়ান।

রিজওয়ান আউট হওয়ার পর ইনিংসের গতিবেগ বাড়ান ফখর জামান। একের পর এক বিগ হিট করতে থাকেন তিনি। অপরদিকে ১৫৮ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে পাকিস্তানের। খাতা না খুলেই প্যাট কামিন্সের বলে আউট আসিফ আলি।  ব্যাট হাতে এদিন সাফল্য পাননি শোয়েব মালিক। ১ রান স্টার্কের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। তবে অপরদিকে বিধ্বংসী ব্যাটিং চালিয়ে যান ফখর জামান। এক সময় ১৭ বলে ১৭ রানে ব্য়াট করছিলেন তিনি। শেষে নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন তিনি। ৩২ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ফখর জামান। শেষ পর্যন্ত ১৭৬ রানের লড়াকু স্কোর করে পাকিস্তান। স্টার্কের ২ উইকেটের পাশাপাশি একটি করে উইকেটে নেন কামিন্স ও জাম্পা। 

১৭৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। প্রথম ওভারেই খাতা না খুলে শাহিন আফ্রিদির বলে আউট হয়ে যান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ (Aaron Finch)। এরপর অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নেন ডেভিড ওয়ার্নার ও ম্যাথু ওয়েড। প্রথমেই উউকেট হারালেও  চাপ না নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যান  দুই তারকা। একের পর এক আক্রমণাত্মক শট খেলেন ওয়ার্নার ও মার্শ। পাওয়ার প্লে-রমধ্যে অর্ধশত রানের পার্টনারশিপ করে ফেলেন দুই  দুজনে। কিন্তু তারপর ৫২ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট পড়ে অস্ট্রেলিয়ার। ২৮ রান  করে শাদাব খানের প্রথম শিকার হন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন স্টিভ স্মিথ। তাকে নিয়ে ২৫ রানের পার্টনারশিপ করেন ওয়ার্নার। একধার থেকে  মারকাটারি ব্যাটিং চালিয়ে যান ওয়ার্নার। কিন্তু ৭৭ রানের মাথায় মাত্র ৫ রান করে শাদাব খানের দ্বিতীয়  শিকারহন স্টিভ স্মিথ। এরপর ভালো ব্যাটিং করলেও ১ রানের জন্য নিজের হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন ওয়ার্নার। দলের ৮৯ রানে ব্যক্তিগত ৪৯-এ শাদাব খানের বলে আউট হন তিনি। যদিও সেই আউট নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।  এরপর এদিন ফ্লপ হয় ম্য়াক্সওয়েলও। ৭ রান করে তিনিও শাদাব খানের চতুর্থ শিকার হন তিনি। 

এরপর দলের ইনিংসের রাশ ধরেন  মার্কাস স্টয়নিস ও ম্য়াথু ওয়েড। ধীরে  ধীরে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান  তারা। প্রয়োজন মত খারাপ বলে হিট করেন দুজনেই। একটা সময়ে শেষ ৫ ওভার প্রায় ১৩ রানদরকার ছিল প্রতি ওভার। সেখান  থেকেই ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন স্টয়নিস ও ওয়েড। শেষ ২ ওভারে অস্ট্রলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ছিল ২২ রান। বাবর আজম দলের সেরা অস্ত্র শাহিন আফ্রিদিকে বল তুলে দেন। যে আের তিন ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১৩। ১৯ তম ওভারের  প্রথম৩ বলে ৪ রান দিয়েছিলেন আফ্রিদি। তারমধ্যে ওয়েডের ক্যাচ মিস করেন হাসান আলি। তখনও কেউ বুঝে উঠতে পারেননি এই ক্যাচ মিস পাকিস্তানের ম্যাচ মিসে পরিণত হবে। ওভারের শেষ তিনটি বলে শাহিন  আফ্রিদিকে বিশাল তিনটি ছয় মেরে ম্য়াচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ৮১ রানের অপরাজিত পার্টনারশিপ করে দলকে ফাইনালে তোলেন।৩১ বলে ৪০ করে অপরাজিত থাকেন স্টয়নিস   ও ১৭ বলে ৪১ করে অপরাজিত থাকেন ওয়েড। বিশ্বজয়ের স্বপ্নভঙ্গ হওয়ায় মাটেই হতাশায় ভেঙে পড়েন পাক ক্রিকেটাররা। আগামি ১৪ নভেম্বর ফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।

Share this article
click me!