
সেমি ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে গেলে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল বড় ব্যবধানে জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সুপার ১২-এর শেষ ম্য়াচে সেই কাজ সাফল্যের সঙ্গে করে দেখাল অ্য়ারন ফিঞ্চের দল। ম্যাচে টস জিতে কায়রন পোলার্ডের দলকে ব্যাটিংয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানান অজি অধিনায়ক। কিন্তু ভালো শুরু করেও বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্য়ানরা। শেষে অধিনায়ক পোলার্ডের ৪৪ রানের ইনিংসের সৌজন্যে ১৫৭ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অজিদরে হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেয় জস হ্যাজেলউড (Jos Hazzlewood)। কিন্তু রান তাড়া করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শের বিধ্বংসী ব্য়াটিংয়ের সামনে খড়কুটোর মত উড় গেল ক্যারেবিয়ানরা। ওয়ার্নার করেন ৮৯ ও মার্শ করেন ৫৩। ২২ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে ম্য়াচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
এদিন ওপেন করতে নেমে বিধ্বংসী ভাবেই ইনিংসের শুরু করেছিলেন দুই ক্যারেবিয়ান ওপেনার ক্রিস গেইল ও ইভিন লুইস। প্রথম দু ওভারের মধ্যেই ৩০ রানের পার্টনারশিপ করলেও বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেননি। ১৫ রান করে প্যাট কামিন্সের বলে বোল্ড হন গেইল। এদিন ফের ব্যর্থ হন নিকোলাস পুরান। ৪ রান করে জস হ্যাজেলউডের শিকার হন তিনি। খাতা না খুলেই হ্যাজেলউডের দ্বিতীয় শিকার হন রস্টন চেজ। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ক্যারেবিয়ান ব্যাটিং লাইনআপ। সেই সময় ইনিংসের রাশ কিছুটা ধরেন শিমরন হেটমায়ার ও ইভিন লুইস। ৩৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন দুজনে। দলের ৭০ রানে চতুর্থ উইকেট পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২৯ রান করে অ্য়াডাম জাম্পার বলে আউট হন তিনি। এরপর হেটমায়ারও আউট হন ২৭ রান করে। নিজের তৃতীয় উইকেট নেন হ্যাজেলউড। ৯১ রানে ৫ উইকেট পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
এরপর অধিনায়ক কায়রন পোলার্ড একাই দলের ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কেরিয়ারের শেষ ম্য়াচে পোলার্ডকে কিছুটা সঙ্গ দেওয়ার চেষ্ট করলেও, তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১২৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট পড়ে ওয়েস্ট ইন্জিজের। ১০ তরে হ্য়াজেলউডের চতুর্থ শিকার হন তিনি। অপরদিক থেকে নিজের ইনিমসের চালিয়ে যান কায়রন পোলার্ড। ৩১ বলে ৪৪ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলার পর দলের ১৪৩ রানে মাথায় আউট হন পোলার্ড। শেষে ৭ বলে ১৮ রানের অপরাজিত ঝোড়ো ইনিংস খেলেন আন্দ্রে রাসেল। সব মিলিয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অজিদের হয়ে ৪টি উইকেট নেন জস হ্যাজেলউড ও একটি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জাম্পা। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ১৫৮ রান।
যেহেতু রান তাড়া করে শুধু জিতলেই চলবে না, সেমি ফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্যে বাড়িয়ে রাখতে হবে রান রেট। সেই কারণে ইনিংসের শুরু থেকেই বিধ্বংসী মেজাজে ব্য়াটিংশুরু করেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে এদিন ব্য়াট হাতে ছন্দে ছিলেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ৯ রান করেই আকিল হোসেনের শিকার হন তিনি। ৩৩ রানে প্রথম উইকেট পড়ে অস্ট্রেলিয়ার। এরপর আর ম্য়াচ ঘুড়ে দাঁড়ানোর জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে কোনও সুযোগই দেননি দুই অজি তারকা ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। একের পর এক আক্রমণাত্মক শট খেলে কায়রন পোলার্ডের যাবতী অস্ত্রকে ভোতা করে দেয়। পাওার প্লে বিধ্বংসী ব্য়াটিং করে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ করেন দুই তারকা। পাওয়ার প্লের পরও ব্য়াটিং তান্ডব বজায় রাখেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ জুটি। নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করে ফেলেন ডেভিড ওয়ার্নার।
আরও পড়ুনঃT20 World Cup 2021- উষ্ণতার হাতছানি করবে পাগল, বিকিনিতে 'আগুন' ক্যারেবিয়ান তারকার স্ত্রী
আরও পড়ুনঃVirat Kohli Birthday- বিরাট কোহলির সেরা ৫টি ইনিংস, যা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে
দুই অজি ব্যাটসম্যানকে আটকানোর জন্য মোট ৭ জনকে বোলারকে ব্যবহার করেন কায়রন পোলার্ড। কিন্তু তারপরও কোনও কাজ আসেনি। ওয়ার্নারের পাশাপাশি নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন মিচেল মার্শ। অবশেষে স্কোর সমান করার পর ১৫৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে অস্ট্রেলিয়ার। ৩২ বলে৫৩ রান করে ক্রিস গেইলের বলে আউট হন মিচেল মার্শ। অবশেষে ১৬. ২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয় পেয়ে যায় অজিরা।শেষ পর্যন্ত ৫৬ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন অপরাজিত থাকেন ডেভিড ওয়ার্নার। এই জয়ের ফলে ৫ ম্য়াচে ৪ জয় নিয়ে +১,২১৬ রান রেট নিয়ে লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকল অজিরা। সেমি ফাইনালে উঠতে হলে ইংল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে ৮০ রানে ম্য়াচ জিততে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।