টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১ (T20 World Cup 20021) -এর ফাইনাল। নিউজিল্যান্ডকে (New Zealand) হারিয়ে প্রথমবার টি২০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া (Australia)। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৭২ রান করে নিউজিল্যান্ড। ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন কেন উইলিয়ামসন (Kane Williamson)। রান তাড়া করতে নেমে জোড়া অর্ধশতরান করেন ডেভিড ওয়ার্নার (David Warner) ও মিচেল মার্শ (Mitchell Marsh)। ৭ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেট ম্য়াচ জেতে অস্ট্রেলিয়া।
১৫ বছর ধরে যে স্বপ্ন অধরা ছিল অস্ট্রেলিয়া পুরুষ ক্রিকেট দলের, ২০২১ সালে এসে অবশেষ হল স্বপ্নপূরণ । ২০২১ টি২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2021) চ্য়াম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া (Champion australia)। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে (New Zealand) ৮ উইকেটে হারিয়ে একতরফা ম্যাচে সহজেই জয় পেল অ্যারন ফিঞ্চরা (Aaron Finch)। ম্য়াচে প্রথমে ব্যাট করে ১৭২ রান করে নিউজিল্যান্ড। বিপদের সময় দলের রাশ ধরে ৮৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (Kane Williamson)। রান তাড়া করতে নেমে ৭ বল বাকি থাকতেই ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্য়ে পৌছে যায় অস্ট্রেলিয়া (Australia)। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার দুরন্ত পারফরমেন্সে ৫ জন ক্রিকেটার নিজেদের সেরাটা উজার করে দিয়েছেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই ৫ ক্রিকেটীর্র ফাইনালে পারফরমেন্সের পরিসংখ্যান।
জশ হ্যাজেলউড-
টি২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া দলের বোলিং লাইনআপে সবথেকে সফল বোলারের নাম জশ হ্যাজেলউড। ম্যাচ একদিকে যখন দলের অন্যান্য বোলিররা উইকেট নিতে পারছেন না। কেন উইলিয়ামসন তাদের নিয়ে ছেলে খেলা করছেন, তখন অপরদিক থেকে নিজের সেরা পারফরমেন্সটা উজার করে দিয়েছেন হ্যাজেলউড। ম্য়াচে ৪ ওভার বল করে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। উইকেট তালিকা রয়েছে ডায়ার্ল মিচেল, কেন উইলিয়ামসন, গ্লেন ফিলিপসেরমত তারকার। একদিক থেকে হ্যাজেলউড আটোসাটো বোলিং ও উইকেট নিতে না পারলে আরও বড স্কোর করতে পারত কিউইরা।
অ্যাডাম জাম্পা-
এদিন ফাইনালে হ্যাজেলউড ছাড়া যে অজি বোলার কিছুটা ছাপ ছাড়তে পেরেছেন তিনি হলেন অ্য়াডাম জাম্পা। ফাইনালে ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে এক উইকেট নেন তিনি। যুগ্মভাবে ১৩টি উইকেট নিয়ে টের্ন্ট বোল্টের সঙ্গে টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১-এর সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হয়েছেন জাম্পা। পুরো প্রতিযোগিতায় দলের হয়ে দুরন্ত পারফর্ম করায় অধিনায়ক ফিঞ্চও ভূয়সী প্রশসংসা করেছেন জাম্পার।
ডেভিড ওয়ার্নার-
রান তাড়া করতে নেমে ১৫ রানে প্রথম উইকে হারাতে হয় ব্য়াগি গ্রিণদের। ৫ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে আউট হন অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এরপর সেমি ফাইনালের মতই ফাইনালেও অনবদ্য ব্য়াটিং করেন ডেভিড ওয়ার্নার। একের পর এক আক্রমণাত্মকশট খেলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন ওয়ার্নার। মিচেল মার্শের সঙ্গে ৯২ রানের পার্টনারশিপ করে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে আউট হন ওয়ার্নার। এরপর৩৮ বলে রান ৫৩ রান করে বোল্টের বলে আউট হন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে ততক্ষণে ট্রফি জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করে দিয়েছে ক্যাঙারুরা। অনবদ্য পারফর্মকারনে ম্য়ানঅব দ্যা সিরিজ নির্বাচিত হয়েছেন ওয়ার্নর।
মিচেল মার্শ-
সেমি ফাইনালে যে খানে শেষ করেছিলেন, বড় রান করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, সেই খামতি ফাইনালে মিটিয়ে নিলন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ। ওর্নারের সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়ে দলকে শুধু শক্ত ভিড গড়ে দেওয়াই নয়, নিজেও খেলেন মারকাটারি ইনিংস। শেষপর্যন্ত নট আউট থেকে দলের বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিৎ করেন মিচ মার্শ। শেষ পর্যন্ত ৫০ বলে ৭৭ রানের টি২০ বিশ্বকাপে ম্যাচ উইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিৎ করে মাঠ ছাড়েন। ৬টি চার ও ৪টি বিশাল ছক্কায় সাজানো তার ইনিংস। ম্যান অব দ্য ম্যাচও নির্বাচিত হয়েছেন মার্শ।
গ্লেন ম্য়াক্সওয়েল-
১০৭ রানে ২ উইকেট হারানের পর একটি সময় নিউজিল্যান্ড ভেবেছিল ওয়ার্নার আউট হয়ে গিয়েছে আর একটা-দুটো উইকেট পরপর ফেলতে পারলে ম্য়াচে ফেরা সম্ভব। তবে কিউইদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেতে দেননি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। পুরো বিশ্বকাপ অফ ফর্ম গেলেও ফাইনালে মিচেল মার্শের সঙ্গে দলকে জয়ের লক্ষ্যে নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ১৮ বলে ২৮ রানের গুরুত্বপূর্ণইনিংস খেলেন ম্য়াক্সওয়েল।
আইসিসি আয়োজিত ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ সর্বাধিক ৫ বার জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ১৫ বছর ধরে অজিদের অধরা ছিল টি২০ ক্রিকেটে বিশ্বজয়। ২০১০ সালে ফাইনালে উঠলেও, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গ। অবশেষে ২০২১ সালে এসে ক্রিকেটের সবথেকে ছোট ফর্ম্য়াটে বিশ্বজয় করল অস্ট্রেলিয়া। শেষে ট্রফি নিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর পাশাপাশি অজিদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মত।