আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ২ বছর আগেই অবসর নিয়েছিলেন সুরেশ রায়না (Suresh Raina)। এবার সবব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিজের অবসরের (Retirement) কথা ঘোষণা করলেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) প্রাক্তন বাঁ হাতি তারকা ব্যাটসম্যান।
ওয়ান ডে ক্রিকেট সচিন তেন্ডুলকরের অন্যতম সেরা ইনিংস বলতেই সকলের স্মৃতি মণিকোঠায় অবশ্যই উঠে আসে ১৯৯৮ সালে শারজার নাম। সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে সচিনের সেঞ্চুরির জন্য ট্রফি জিতেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। কিন্তু তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থেকে গিয়েছে শেন ওয়ার্ন,মাইকেল কাসপ্রোইচ, ফ্লেমিং সহ আরও একাধিক অজি বোলারকে নিয়ে সেই দুই ইনিংসে কার্যত ছেলে খেলা করেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। গ্রুপ পর্যায়ের শেষ ম্যাচ চলাকালীন সচিন বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাট করছেন। সেই সময় শারজার মরু ঝড় ওঠে। তখন সব ক্রিকেটার মাঠে শুয়ে পড়েছিলেন কিন্তু সটান দাঁড়িয়েছিলেন ছোটে নবাব। সেদিন সচিনের ব্যাটিং ঝড়ের কাছে হার মেনেছিল মরু ঝড়ও। এই দৃশ্যগুলি সকলেরই জনা। কিন্তু অনেকেই জানেন না ৯৮-এর সচিনের মরু ঝড় দেখতে স্কুল পালিয়ছিল এক বর্তমান ক্রিকেট তারকা। পরে বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলে সচিন তেন্ডুলকরের সতীর্থ হওয়ার সৌভাগ্যও হয়েছিল তার। তিনি সুরেশ রায়না।
এক সাক্ষাৎকারে রায়না জানিয়েছিলেন,সেই সময় তাদের বাড়িতে টিভি থাকলেও, কেবিল কানেকশন ছিল না। তাই প্রিয় তারকার ঐতিহাসিক ইনিংস যাতে মিস না হয়ে যায় তার জন্য স্কুলের শেষ দু’টি পিরিয়ডের আগে স্কুল থেকে পালিয়েছিলেন তিনি এবং তাঁর সহপাঠী অমিত। ম্যাচ দেখার পরিকল্পনা সাজানো ছিল সুনীল নামে আরেক বন্ধুর বাড়িতে। সাদা-কালো টেলিভিশন হলেও তাতে গুরুত্বপূর্ণ কেবল সংযোগ ছিল। সেখানে বসেই শারজায় সচিনের মরু ঝড়ের মজা নিয়েছিলেন সুরেশ রায়না এবং তাঁর বন্ধুরা।'যেই প্রিয় নায়কের খেলা দেখার জন্য স্কুল পালিয়েছিলেন,সেই নায়কের সঙ্গেই বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে নস্টালজিক হয়ে পড়েন রায়না। রায়না আরও জানিয়েছেন,শারজার টুর্নামেন্টটা যখন চলছিল আমরা স্কুলের শেষ দুটো পিরিয়ড ছেড়ে পালাতাম। সচিন পাজি ওই সময় ওপেন করতে নামতেন। আমরা শুধুমাত্র সচিন পাজি’র ব্যাট দেখার জন্যই প্রতীক্ষা করতাম, কখনও কখনও দ্রাবিড় ভাইয়ের। সচিন আউট হলেই আমরা ম্যাচ দেখা বন্ধ করে দিতাম।’ শারজায় সচিনের সেই ইনিংস ওয়ান ডে ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ইনিংসগুলির মধ্যে অন্যতম বলে জানিয়েছেন সুরেশ রায়না।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ অগাস্ট এমএস ধোনির সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন সুরেশ রায়না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ২ বছর পর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করলেন তিনি। রায়না তার কেরিয়ারে ১৯টি টেস্ট ম্যাচ ও ২২৬টি ওয়ানডে খেলেন তিনি। ওয়ানডে-তে রায়না করেন ৫৬১৫ রান। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি অবশ্য সে ভাবে সফল নন। ১৯টি টেস্ট থেকে তাঁর সংগ্রহ ৭৬৮ রান। জাতীয় দলের জার্সিতে ৭৮টি টি-২০ ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি এবং ৫টি হাফসেঞ্চুরি-সহ ১,৬০৫ রান করেছেন তিনি৷ আইপিএলে ৫৫২৮টি ম্যাচে ১ শতরান ও ৩৯টি সেঞ্চুরি সহ ৫৫২৮ রান করেছেন সুরেশ রায়না।