রবিবার শারজায় টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১-এর (T20 World Cup 2021) ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে (Scotland) ৭২ রানে হারালো পাকিস্তান (Pakistan)। অপরাজিত থেকেই সেমিতে গেল বাবর আজমরা।
অপরাজিত। টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১-এর সুপার ১২ পর্বে, দ২ গ্রুপ মিলিয়ে একমাত্র দল হিসাবে সবকটি ম্য়াচ জিতে সেমিফাইনালে উঠল পাকিস্তান। সম্ভবত টি২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে কোনও দলই এই কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি। সকলেই যখন বলছেন, শারজায় টস জিতলে চোখ বুজে আগে বল করা উচিত। সেখানে, এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। প্রথমে ব্যাট করে তারা ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান তুলেছিল। জবাবে, রিচি বেরিংটনের চমৎকার অর্ধশতরানের ইনিংস সত্ত্বেও ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানেই থামল কাইল কোয়েৎজারের নেতৃত্বাধীন স্কটল্যান্ড।
এদিন খেলার ভবিষ্যৎ, ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই মোটামুটি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের সামনে ২০ ওভারে ১৯০ রান তুলে জেতা স্কটল্যান্ডের পক্ষে সম্ভব ছিল না। পাওয়ারপ্লের ওভারের শেষে স্কটল্যান্ড কোয়েৎজারের (৯) উইকেট হারিয়ে করেছিল মাত্র ২৪ রান। আর ১০ ওভারের মধ্যে রান আউট হয়ে গিয়েছিলেন ম্যাথু ক্রসও (৫)। ফলে ১০ ওভারের মাথায় স্কটল্যান্ডের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৪১।
এগারোতম ওভারে শাদাব খান পরপর দুটি উইকেট নিয়ে এসে স্কটল্যান্ডকে ৪ উইকেটে ৪৩-এ এনে দাঁড় করান। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই জর্জ মান্সিকে (১৭) আউট করেন শাদাব। পরের বলে কোনও রান হয়নি। তার পরের বলেই আউট হন এদিনই স্কটিশ প্রথম একাদশে আসা ডিলন বাজ (০)। তখন থেকেই পাকিস্তানের ক্রিকেটারের মুখের হাসি চওড়া হয়ে গিয়েছিল।
তবে তখনও রিচি বেরিংটনের ইনিংস বাকি ছিল। মাইকেল লিস্কের (১৪) সঙ্গে জুটিতে তিনি ৪৬ রান যোগ করেন। ১৫ ওভারের মাথায় স্কটল্যান্ডের রান ছিল ৪ উইকেটে ৮১। জেতার জন্য দরকার ছিল ৩০ বলে ১০৯। বেরিংটন ৪ টি চার এবং ১টি ছয়ের সাহায্যে ৩৭ বলে ৫৪ রান করলেন। কিন্তু, তা ৩০ বলে ১০৯ তোলার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
ইমাদ ওয়াসিম ছাড়া বাকি পাক বোলাররা প্রত্যেকেই উইকেট পেয়েছেন। শাহিন আফ্রিদি, হ্যারিস রউফ এবং হাসান আলি - তিন পাক জোরে বোলারই ১ টি করে উইকেট শিকার করেছেন। তবে পাক বোলারদের মধ্যে সেরা ছিলেন শাদাব খান। ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে তিনি ২টি উইকেট পান।
তবে এদিন পাকিস্তানকে ম্যাচ জেতালেন তাদের ব্যাটাররাই। বিশেষ করে শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাওয়া ৩৯ বছর বয়সী শোয়েব মালিক। মাত্র ১৮ বলে অর্ধশতরান করলেন তিনি। ভারতের কেএল রাহুলও স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৮ বলেই অর্ধশতরান করেছিলেন। এটাই টুর্নামেন্টের দ্রুততম অর্ধশতরান। জোরেই শারজায় ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান তুলল পাকিস্তান।
এদিন পাকিস্তানের শুরুটা দেখে মনে হয়নি, শারজায় তারা এত বড় রানের ইনিংস গড়তে পারবে। পাওয়ার প্লে-তে একটিও উইকেট যায়নি তাদের। তবে ৩৫-এর বেশি রানও ওঠেনি প্রথম ৬ ওভারে। আর পাওয়ার প্লে-র ঠিক পরের ওভারের মালিকের এই ইনিংসের জন্য, শেষ ৫ ওভারে এদিন পাকিস্তান ৭২ রান তোলে। অথচ, এদিন পাওয়ার প্লে-তে মাত্র ৩৫ রান তুলেছিল পাকিস্তান, ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৬০। রান পাননি রিজওয়ান (১৫) এবং ফখর জামান (৮)।
তবে ক্রিজের একদিক ধরে রেখে খেলেন বাবর আজম। তিনি এই নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে ৪টি অর্ধশতরান করলেন তিনি। এদিন করেন ৪৭ বলে ৬৬। তবে পাকিস্তানের রান তোলায় গতি আনেন মহম্মদ হাফিজ। ১৯ বলে ৩১ রান করেন তিনি। আর শেষ ৫ ওভারে দেখা গেল শোয়েব মালিকের ১৯ বেল অপরাজিত ৫৪ রানের ঝড়। চার মারেন ১ টি আর ছয় মাছেন ৬ টি। এদিন তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ৩০০!