যোগিন্দর শর্মার (Joginder Sharma) একটি ওভারই ভারতের প্রথম আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ (ICC T20 World Cup 2007) জয় নিশ্চিত করেছিল। কী করেন, কোথায় থাকেন এখন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার?
২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে প্রথম আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের (ICC T20 World Cup 2007) ফাইনালে চলছে। মুখোমুখি ভারত (Team India) ও পাকিস্তান (Pakistan Cricket Team)। ফলে মাঠে ও মাঠের বাইরে তুমুল উত্তেজনা, তীব্র ক্রিকেট জ্বর। খেলা শেষ ওভারে, পাকিস্তানের দরকার ১৩। মহেন্দ্র সিং ধোনি সবাইকে চমকে দিয়ে বল তুলে দিয়েছিলেন এক অনভিজ্ঞ ক্রিকেটার, যোগিন্দর শর্মার (Joginder Sharma) হাতে। তাঁর ওভারের দ্বিতীয় বলেই সপাটে ছয় হাঁকিয়েছিলেন মিসবা-উল-হক (Misbah-Ul-Hoq)। কিন্তু, তার পরের বলেই হয়েছিল ইতিহাস।
যোগিন্দরের বলে, শ্রীসন্থের (S Srishanth) হাতে ক্যাচ দিয়ে মিসবার আউট হওয়ার সেই মুহূর্তটা বোধহয় ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা কোনওদিনই ভুলতে পারবেন না। তবে, সেই দলের প্রায় সকল ক্রিকেটার এখনও ক্রিকেটের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত, খবরেও থাকেন, টিভিতে-সোশ্যাল মিডিয়া দেখা যায়। শুধু, লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছেন যোগিন্দর। এখন কী করেন তিনি, কোথায় থাকেন?
তিনি কোনওদিনই ভারতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা করতে পারেননি। বিক্ষিপ্তভাবে দলে সুযোগ পেয়েছেন, আবার বাদ পড়েছেন। মাত্র চারটি ওয়ানডে এবং চারটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন। ২০০২-০৩ মরসুম থেকে হরিয়ানার হয়ে তিনি রঞ্জি খেলেছেন। ২০০৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত চেন্নাই সুপার কিংসের হয়েও আইপিএল-এও খেলেছেন। আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাশাপাশি তাঁর নামের পাশে দু-দুটি আইপিএল ট্রফিও রয়েছে। তবে, তারপরই তিনি পুরোপুরি ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। বর্তমানে তিনি হরিয়ানায় পুলিশের (Haryana Police) উচ্চপদস্থ অফিসার।
২০০৭ সালেই হরিয়ানা পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন যোগিন্দর শর্মা। পুলিশের দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গেই ক্রিকেট খেলতেন। এখন তিনি হরিয়ানার হিসার জেলায় ডেপুটি পুলিশ সুপারের দায়িত্বে আছেন। করোনাভাইরাস মহামারির ঠেকাতে যখন লকডাউন চলছিল, সেই সময় তিনি মানুষ যাতে বাড়ির ভিতরেই থাকে এবং মহামারি সংক্রান্ত সরকারের নির্দেশিকা মেনে চলে, তা নিশ্চিত করার কাজ করেছিলেন। আর সেই দায়িত্ব পালনের জন্য, দীর্ঘদিন বাড়িও যেতে পারতেন না। হিসার থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে রোহতকে থাকে তাঁর পরিবার। তিনি বাইরে বাইরে কাজ করেন, পাছে, তাঁর থেকে তাঁর পরিবারের সকলের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, সেই ভয় পেতেন।
হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি জানিয়েছিলেন, ডিএসপি হিসেবে তাঁর দিন শুরু হয়ে যায় সকাল ছটায়। রাত ৮টা অবধি বাইরেই থাকেন। তারপর বাড়ি ফিরলেও জরুরি ফোনকলের জন্য কার্যত ২৪ ঘন্টাই প্রস্তুত থাকেন তিনি। কোনও কাজে তাঁর ডাক পড়লে, সে যে সময়েই হোক না কেন, তিনি না বলতে পারেন না। যেমন, ১৪ বছর আগে ক্রিকেটার হিসাবে অধিনায়ক ধোনি তাঁকে শেষ ওভার করতে ডাকাতেও, না বলেননি।
আরও পড়ুন - 'আমার 'ব্যাট'টা খুুউব বড়, দুহাতে ধরতে হবে', মহিলা সাংবাদিককে বলেছিলেন গেইল, দেখুন
খেলা ছেড়ে দিলেও, খেলার সঙ্গে তাঁর সংযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়নি। অলিম্পিকের সময়, ভারতের সাফল্যে নিয়মিত টুইট করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। গত অগাস্ট মাসে টি২০ বিশ্বকাপ দলের দুই সতীর্থ গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) এবং এস শ্রীসন্থের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন যোগিন্দর। সেই ছবিও পোস্ট করেন। ২০২০ সালে তাঁকে জন্মদিনে ডিএসপি সাহাব বলে সম্বোধন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন যুবরাজ সিং (Yuvraj Singh)।