দাপুটে জমিদারের পুজো আজ সার্বজনীন, সাবেকি প্রতিমায় আজও মেতে ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর

পুজোর চারদিনের ধুমধাম করে নিষ্ঠা সহকারে সাবেকি প্রতিমার পুজো করা হয়।সারা ভালুকা বাজার এলাকার লোকজন এই পুজোয় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করেন।অষ্টমীর দিন এলাকার সমস্ত মহিলা এক হয়ে মায়ের পূজা দেন। আগে যাত্রাপালা হলেও এখন আর অর্থের অভাবে যাত্রাপালা করা সম্ভব হয় না। জনসেবা ও বস্ত্র বিতরণ হয়ে থাকে।

হরিমোহন মিশ্রের জমিদারির মধ্যেই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভালুকা বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা পুজো সার্বজনীন রূপ নিয়েছে। এক সময় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মিশ্র জমিদারদের জমিদারি বিস্তৃত ছিল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ভালুকা সহ বিহারের আজিমগঞ্জ, বারসই, মনিহারি সহ বেশ কয়েকটি এলাকায়। মিশ্র জমিদারির বর্তমান সদস্যরা জানালেন হরিমোহন মিশ্র দাপুটে জমিদারের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন ধর্মপ্রিয়। সে সময় তাদের জমিদারীর মধ্যে ভালুকা ছিল প্রধান অংশ অন্যদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর ছিল সদর। প্রায় একশ সাতাশ বছর আগে তখন এলাকায় ইংরেজ শাসন। সে সময় তাঁর জমিদারির ভালুকার ফুলহর নদীর তীরে প্রায় ২০০ বিঘা জমির উপর তৈরি করেছিলেন দুর্গা মন্দির। 

সাতদিন ধরে চলত দুর্গাপুজো কে ঘিরে উৎসব অনুষ্ঠান। আমন্ত্রিত হতেন ইংরেজ সাহেবরাও। চলতো গান বাজনা। কলকাতা থেকে আনা হতো যাত্রা পার্টি। হাতির পিঠে করে জমিদার বাড়ির সদস্যরা যেতেন পুজো দিতে। চলতো নরনারায়ন সেবা ও বস্ত্র বিতরণ। আমন্ত্রিত হতো সারা জমিদারের প্রজারা। ১৯৬৪ সালের ফুলহরের ভাঙ্গনে তলিয়ে যায় জমিদার হরিমোহন মিশ্রের তৈরি করা দুর্গা মন্দির। তারপরেই ভালুকা বাজারে এই পুজো স্থানান্তরিত হয়ে যায়। ১৩০১ বঙ্গাব্দে জমিদার হরিমোহন এই দুর্গাপূজা প্রতিষ্ঠা করেন। আজও এই পুজো সার্বজনীন হয়ে গেল সাবেকি প্রতিমা এখনো বজায় রয়েছে বলে জানা যায়। 

Latest Videos

এই বাড়িরই সন্তান রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী সৌরীন্দ্র মোহন মিশ্র। জমিদার বাড়ির সদস্যরা আরও জানালেন বর্তমানে এই পুজো এখন ভালুকা বাজারের বাসিন্দারাই আয়োজন করে থাকে। আগে জমিদারি স্টেট থেকে একটা খরচ দেওয়া হতো। কিন্তু এখন সেটা আর দেওয়া হয় না। ১৯৫৩ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরে এলাকার বাসিন্দারা উদ্যোগে এই পুজো করে আসছে। যদিও এই মিশ্র বংশের আদি পুজো পিপলার বড় চালি।

বর্তমান পুজোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে সভাপতি রাজেশ চৌধুরী জানান এলাকার জমিদাররা প্রতিষ্ঠা করলেও কালের নিয়মে এই পুজো এখন এলাকায় সার্বজনীন হয়ে গিয়েছে। এলাকাবাসীরা চাঁদা তুলে এই পুজোর আয়োজন করে থাকে। এবার ১২৯ তম পুজো।পুজোর চারদিনের ধুমধাম করে নিষ্ঠা সহকারে সাবেকি প্রতিমার পুজো করা হয়।সারা ভালুকা বাজার এলাকার লোকজন এই পুজোয় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করেন।অষ্টমীর দিন এলাকার সমস্ত মহিলা এক হয়ে মায়ের পূজা দেন। আগে যাত্রাপালা হলেও এখন আর অর্থের অভাবে যাত্রাপালা করা সম্ভব হয় না। জনসেবা ও বস্ত্র বিতরণ হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন-
বাঈজি নাচ থেকে বলড্যান্স, নবাব সিরাজের অর্থ পেয়ে শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় এসেছিল ইংরেজরেজদের বৈভবের ছাপ
১৭৫৭ সালের কাঠামোতেই এখনও গড়ে ওঠে শোভাবাজার রাজবাড়ির বড় তরফের দুর্গা প্রতিমা, জেনে নিন সেই পুজোর ইতিহাস
স্বৈরাচারী রাজার বিনাশের পর কীভাবে শুরু হয়েছিল সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের বাড়ির দুর্গাপুজো?

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

খাদান নিয়ে Dev কে বিশ্রী আক্রমণ রাজের, দেবের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা দিলেন Aritra Dutta Banik
'তৃণমূলের দুয়ারে সরকার এখন দুয়ারে জঙ্গি', তীব্র আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর | Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari: 'কত বড় জিহাদি, রামনবমীর মিছিলে ঢিল মেরে দেখাও', হুঙ্কার শুভেন্দুর
'যেসব মুসলমানরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তাঁদেরই পূর্বপুরুষেরা হিন্দু ছিল' বিস্ফোরক অর্জুন
পুলিশের তৎপরতায় বানচাল ডাকাতির প্ল্যান! গ্রেফতার ২ অপরাধী, চাঞ্চল্য Birbhum-এ