গঙ্গা নদীর পশ্চিম পাড়ের শহর আজিমগঞ্জ। এখানে রাজরাজেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন বঙ্গের সবচেয়ে বড় জমিদার রানি ভবানী। ফলে এই পুজোকে ঘিরে জাঁকজমকের কোনও খামতি ছিল না।
ভারতের দ্বিতীয় বারাণসী বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জ। সম্রাট ঔরঙ্গজেবের পৌত্র হাজি মহম্মদ আজিমুশশানের নাম অনুসারে এই শহরের নাম করণ হয় আজিমগঞ্জ। একদিকে ইতিহাস অন্যদিকে সংস্কৃতির পীঠস্থান হিসেবে আজও খ্যাতি আছে এই শহরের। আবার ধর্মীয় দিক থেকে বারাণসী বলা হয় এই আজিমগঞ্জকেই। অথচ অতীতে গঙ্গা পাড়ের এই শহরে মাত্র একটি দুর্গাপুজোর আয়োজন হত। যা বর্তমানে আজিমগঞ্জ বারদুয়ারী ২৪ প্রহর গোপাল দেবের আখড়ার বারোয়ারি দুর্গাপুজো হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
গঙ্গা নদীর পশ্চিম পাড়ের শহর আজিমগঞ্জ। এখানে রাজরাজেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন বঙ্গের সবচেয়ে বড় জমিদার রানি ভবানী। ফলে এই পুজোকে ঘিরে জাঁকজমকের কোনও খামতি ছিল না। রানি মায়ের অবর্তমানে তাঁর সুযোগ্য কন্যা তারা সুন্দরী ওই পুজার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু, তিনিও অকাল বৈধব্য হলে অচিরেই রাজরাজেশ্বরীর দুর্গাপুজো বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- ছেলেবেলায় পুজোর সময় খুব খারাপ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিলেন, আড্ডায় জানালেন শাশ্বত
এদিকে এলাকার একটি মাত্র দুর্গাপুজো তা কোনওভাবে বন্ধ হতে দেওয়া যায় না। এই কথা ভেবে কয়েক বছর পর ওই পুজো ফের চালু করেন এলাকার আরেক জমিদার গিরিজা প্রসাদ দত্ত। তিনিও রানি ভবানীর নিয়ম রীতি মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে দুর্গাপুজোর সবরকম ব্যবস্থা করেন। কিন্তু, গিরিজা প্রসাদ পরিচালিত পুজোতে মহারানির মত জাঁকজমক ছিল না। এমনকী, এই পুজোকে ঘিরে এলাকার কল্যাণে কোনও কাজও করতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন- রাগ-দুঃখ-ক্ষোভ-অভিমান থেকেই বারোয়ারি দুর্গাপুজোর জন্ম কলকাতায়
মহারানির পুজো মানে প্রতিবেশীদের নতুন জামা কাপড় তো বটেই ঘরে ঘরে খুশির আবহ বিলিয়ে দিতে তিনি। আয়োজনে কোনও খামতি রাখতেন না। রানি ভবানী নবাবকে সবচেয়ে বেশি কর দিতেন। স্বাভাবিকভাবে তাঁর পুজোকে ঘিরে প্রজাদের নিয়ে আনন্দ উল্লাস থাকবে এটিই স্বাভাবিক। যা কোনওভাবেই গিরিজার পক্ষে সম্ভব হওয়ার কথা নয়। এদিকে সর্বজনীন পুজো গিরিজা প্রসাদের হাত ধরে ব্যক্তিগত পুজোতে পরিণত হতে বসেছিল। একথা ভেবে তৎকালীন সমাজ ওই পুজোর স্থানান্তর করে নিয়ে আসে গোপাল দেবের আখড়াতে। বর্তমানে ওই পুজোতে জাঁকজমক না থাকলেও বারোয়ারি এই পুজোকে ঘিরে পাড়া প্রতিবেশীরা আনন্দ উচ্ছ্বাসের মেতে ওঠেন।
আরও পড়ুন- শান্তি এবং নির্বিঘ্নে পুজো সম্পন্ন করতে ৪০০ অস্থায়ী হোমগার্ড নিয়োগ পুরুলিয়ায়
এই বিষয়ে পুজা কমিটির সম্পাদক নিমাই দে বলেন, "এক সময় আট চালার পুজা হত এখানে, বর্তমানে মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। এবছর প্রতিমা নির্মাণ হচ্ছে ইটালিয়ান ভাস্কর্যের আদলে। তবে নবমীর দিন নরনারায়ণ সেবা হবে নিয়ম মেনেই।"