৭৭ বছরে কিসের আবার রাজনীতি ? পুজো প্ল্যানে ট্রাভেলে রয়েছে গোপালপুর। এশিয়ানেটের প্রতিনিধি ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পুজোর আড্ডায় আর কি বললেন বঙ্গ বিজেপির সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব তথা মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় ?
বঙ্গবিজেপির সঙ্গে তার রাজনৈতিক সমীকরণ বহুবার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চর্চার বিষয় হয়েছে। কিন্তু বরাবর বিজেপি সম্পর্কে তার মতামত কোথাও ছিল স্পষ্ট।
একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য তাকে রাজনীতিতে খুব প্রাসঙ্গিক করে রেখেছে এখনো। যদিও বয়সের ভারে তিনি নিজেই দাবি করেন যে সক্রিয় রাজনীতি থেকে তিনি পুরোপুরি বিদায় নিয়েছেন এখন। তবুও এই পুজোর কটা দিন কি সত্যিই রাজনীতি ভুলে থাকতে পারেন তিনি ? কেমন কাটে মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় এর দূর্গা পুজো ? জানতে ফোন করেছিলাম আমি। " তথাগত রায়ের দূর্গা পুজো ' - এই বিষয় নিয়ে স্টোরি করবো শুনে প্রথমে তিনি হেসেছিলেন একটু, তারপর একটু হালকা মেজাজেই মজার ছলে বললেন "এই বয়সে আমার আবার পুজো ! " কিন্তু আমার পীড়াপীড়িতে শেষমেশ অকপট আলাপচারিতায় রাজি হলেন তিনি। বললেন স্কুলজীবনের প্যান্ডেল হপিং এর গল্প। কথায় কথায় বলেও ফেললেন এই বছর পুজোয় ট্রাভেল প্ল্যান আছে গোপালপুরের। কিন্তু স্ত্রী এর অসুস্থতা সামলে কতটা যেতে পারবেন সে নিয়েও যথেষ্ট সন্দিহান তিনি। ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে টেলিফোনিক পুজোর আড্ডায় তথাগত রায়।
ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ের, প্রতিনিধি, এশিয়ানেট নিউজ বাংলা-
১। পুজোর কটা দিন কি রাজনীতিকে ভুলে থাকা যায়?
উত্তর - দেখুন আমি রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম। আমাদের দলে একটি নিয়ম আছে যে এমনিই ৭৫ বছর বয়সের পর আর এক্টিভ রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা যায় না। তাই আমি এখন এক্টিভ রাজনীতির বাইরেই থাকি। তাই যে রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে বড়ো হয়েছি সেটা ভোলা বা না ভোলার সাথে পুজোর খুব একটা সম্পর্ক নেই।এখন আমার রাজনীতি মানে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট করা এইটাই।
২। পুজোর সময় কখনও ঘুরতে গিয়েছেন
উত্তর -হ্যাঁ পুজোর সময় আমি মাঝেই মাঝেই যাই বেড়াতে। এবছরও ওড়িশার গোপালপুর যাবার প্ল্যান আছে কিন্তু আমার স্ত্রী অসুস্থ জানিনা কতদূর কি হয়ে উঠবে।
৩। এমন একটা পুজো যেখানে নিশ্চিন্তে ভুরিভোজ আর ঘুম দিয়েই দিন কেটে গিয়েছে
উত্তর - হ্যাঁ ,মেঘালয়ের রাজ্যপাল যখন ছিলাম তখন ব্যস্ততা তো থাকতোই কিন্তু তার আগের ৫ বছর এমন পুজো তো ছিলই যেখানে শুধু ভুরিভোজ আর ঘুম ছিল কিন্তু শুধু ভুরিভোজ বা ঘুম দিয়ে তো আর সারাক্ষন কাটানো যায় না তাই বাকি সময়গুলো বই পড়েছি, লেখালিখি করেছি
৪। মণ্ডপে মণ্ডপে যান প্রতিমা দেখতে
উত্তর- যখন ছোট ছিলাম তখন যেতাম , স্কুলে পড়াকালীন প্রচুর মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে ঠাকুর দেখেছি। কিন্তু এখন শুধু পাড়ার পুজোয় যাই। এছাড়াও আমাদের পাশেও একটা বাড়ির পুজো হয় তারা নিমন্ত্রণ করেন তাদের ওখানে যাই।
৫। পুজোর দিনগুলো কোন রুটিনে দিনটা শুরু করেন
উত্তর- দেখুন আমার যা বয়স তাতে আমার কাছে ষষ্ঠী যা ,সপ্তমী যা , অষ্টমী যা, একাদশীও তা। পুজোয় সেইভাবে কোনো রুটিন আলাদা করে নেই। রোজ যেভাবে কাটাই আমার পুজোর দিনগুলোও ঠিক সেভাবেই কাটে। তবে আমাদের পাড়া সমাজসেবী সংঘের পুজোয় যাই অঞ্জলি দিতে। আর এছাড়াও আরো তিনটে পাড়ার পুজো আছে সেখানে যাই।
৬। এমন কোনও পুজো জাস্ট রাজনৈতিক কারণে অন্যদিকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে
উত্তর - হ্যাঁ তা কেটেছে।আমি প্রায় ৩২ বছর রাজনীতি করছি। আগে মাঝে মাঝে পুজো উদ্বোধন করতে যেতাম আমি। তখন বেশ ব্যাস্ততাতেই কাটত। আর বিভিন্ন পরিকল্পনা করা থাকতো আগে থেকে। সেই পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে হতো তখন ব্যস্ততা থাকতো।
৭। পুজোর দিনে পুরনো দিনের বন্ধুদের সঙ্গে কি আড্ডাটা আজও হয়
উত্তর- না এখন পুজোয় যা ভিড় তাই বাইরে বেরোনোটা মুশকিল হয়ে যায়।তবে পুজোর দিনগুলোতে না বরং পুজো না থাকলে বেশি আড্ডা হয় বন্ধুদের সাথে।
৮। এবারের পুজো প্ল্যান কেমন
উত্তর- এবার পুজোর প্ল্যান তো বলেছি আপনাকে। ওডিশার গোপালপুর যাবার একটা পরিকল্পনা আছে এবার।
৯। এক কথায় যদি জানতে চাই পুজো মানে আপনার জীবনে কি
উত্তর - পুজোর আলাদা করে কোনো মানে নেই। তবে পুজো হলো আমার ধর্ম আমার পরম্পরার সাথে আমার নিবিড় যোগ। আর সাবেক থিম পুজোগুলো নিয়ে যে মাতামাতিটা তো হয় সেটা একটা হিড়িক। বাঙালিরা হুজুগে জাত তাই এইরকম হিড়িক পড়ে তবে পুজোর আসল মানে হলো মায়ের আরাধনা করা মাকে মনে রাখা।