ফিরে আসুক একান্নবর্তী পরিবারের নিরাপদ ছাদ-পুজোর থিমে পারিবারিক বন্ধনের সুর ৬৬ পল্লীতে

এই পুজোয় ৬৬ পল্লীর ভাবনা ফের ফিরে আসুক এক থালায় খাওয়ার খুনসুটি, ফিরে আসুক জেঠতুতো, খুড়তুতো ভাইবোনেদের সাথে বেড়ে ওঠা। ফিরে আসুক একান্নবর্তী পরিবার। ৬৬ পল্লীর এই ভাবনার থিমেই এবার সেজে উঠছে পুজো মন্ডপ।

Parna Sengupta | Published : Sep 6, 2022 4:40 PM IST

বর্তমানে অধিকাংশ শিশুই বড়ো হয়ে ওঠে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে। ফলে জীবনের প্রাথমিক শিক্ষাগুলোই নড়বড়ে থেকে যায়। শিক্ষিত, শহুরে, মধ্যবিত্ত ভারতীয়দের বেশিরভাগই এখন একটিমাত্র সন্তানেই থেমে যেতে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করছেন, বিশেষত যেখানে মা-বাবা দু’জনেই চাকরি করেন। সেই পরিবারে দাদু ঠাকুমার ছায়া নেই, কাকু কাকিমার স্নেহ নেই, পিসি বা জেঠুর আবদার নেই। বাবা আর মায়ের মধ্যে পরিবার শেষ। 

ফলে কৈশোরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আমাদের সন্তানরা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছুটতে থাকা এই দুনিয়ার সঙ্গে একা যুঝতে গিয়ে খুব সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে। আর সেই ফাঁকেই ঢুকে পড়ছে ভার্চুয়াল দুনিয়ার হাজারো প্রলোভন। কেউ মেতে উঠছে মারণ অনলাইন গেমের নেশায়, কেউ আবার হতাশায় ভুগছে, পড়াশোনা এবং প্রত্যাশার প্রবল চাপ সহ্য করতে না পেরে অকালেই বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ।

তাই এই পুজোয় ৬৬ পল্লীর ভাবনা ফের ফিরে আসুক এক থালায় খাওয়ার খুনসুটি, ফিরে আসুক জেঠতুতো, খুড়তুতো ভাইবোনেদের সাথে বেড়ে ওঠা। ফিরে আসুক একান্নবর্তী পরিবার। ৬৬ পল্লীর এই ভাবনার থিমেই এবার সেজে উঠছে পুজো মন্ডপ। ভাবনা ও সৃজনে রয়েছেন পূর্ণেন্দু দে। আলোকসজ্জায় রয়েছেন পিনাকী গুহ। এবারের থিমের নাম এক-অন্ন-বর্তী।

নিত্যনতুন ছকভাঙা ভাবনা সামনে এনে প্রতিবছর দর্শকদের চমকে দেয় ৬৬ পল্লী। এবারও চমক দিতে প্রস্তুত পুজো উদ্যোক্তারা। গতবার মহিলাদের পৌরোহিত্যের মধ্যে যেমন চমক ছিল।‌ তেমনই এবারও থাকবে বেশ কিছু চমক। এশিয়ানেট বাংলার সঙ্গে কথা বলেন কমিটির অন্যতম সক্রিয় সদস্য প্রদুম্ন মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন মন্ডপের কথা শুধু বললে হয়ত ৬৬ পল্লীর পুজোর গল্প অসম্পূর্ণ থাকবে। কারণ শুধু পুজো নয়, সামাজিক নানা কাজে হাত বাড়িয়েছেন তাঁরা। 

পাঁচ হাজার মহিলাকে আত্মসুরক্ষার প্রশিক্ষণ দেবেন তাঁরা। এই প্রকল্পের নাম দুর্গতিনাশিনী। গত দুবছর করোনা আবহে অল্পেই সারতে হয়েছিল আয়োজন। মানতে হয়েছিল কড়া বিধিনিষেধ। মণ্ডপে ঢোকা নিষেধ ছিল দর্শনার্থীদের। তবে এবার করোনা প্রকোপ একেবারে নির্মূল না হলেও তা নিয়ন্ত্রণে। তাই আয়োজনে কোনও রকম খামতি রাখতে চান না পুজো উদ্যোক্তরা। 

গত তিন বছরের শুধু হারানোর যন্ত্রণা ভুলে ২০২২ সালের দুর্গোৎসব মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে উঠুক, চাইছেন পুজো উদ্যোক্তারা। তবে অবশ্যই বিধি মেনে, সাবধানতা অবলম্বন করে। তবে সর্বাঙ্গীণ সার্থক হবে মায়ের আরাধনা। সেই লক্ষ্যেই পুজো প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ৬৬ পল্লী পুজো কমিটি। 

ইউনেস্কোর থেকে পশ্চিমবঙ্গের দূর্গাপুজো এবার হেরিটেজ তকমা পেয়েছে । এই সম্মান বাংলার গর্ব। সেই সম্মানকে কুর্নিশ জানিয়ে এবার ৬৬ পল্লীর পুজোয় প্রতিমা ও মণ্ডপ সজ্জায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান পুজো উদ্যোক্তারা। 

Read more Articles on
Share this article
click me!