দেবী দুর্গা আদ্যাশক্তি, মহামায়া, শিবানী, ভবানী, দশভুজা, সিংহবাহনা ইত্যাদি নামেও অভিহিত হন। ব্রহ্মার ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত মহিষাসুর নামে এক দানব স্বর্গরাজ্য দখল করলে রাজ্যহারা দেবতারা বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন। বিষ্ণুর নির্দেশে সকল দেবতার তেজঃপুঞ্জ থেকে যে দেবীর জন্ম হয় দেবী দুর্গার। দেবতাদের শক্তিতে শক্তিময়ী এবং বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিতা হয়ে এ দেবী যুদ্ধে মহিষাসুরকে বধ করেন। তাই দেবীর এক নাম হয় মহিষমর্দিনী। ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি অবধি চলে মাতৃ আরাধনা। আর এই দশমী তিথির পরেই শুরু হয় আরেক দুর্গাপুজো। যা শুনতে সত্যিই অবাক করার মত। দশমী পুজোয় দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর হয় অপরাজিতা পুজো।
আরও পড়ুন- ষষ্ঠী তিথিতে কোন রাশির আর্থিক প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে, কে করবে খ্যাতি লাভ দেখে নিন
অপরাজিত হল দেবী দুর্গার আরেক রূপ। যা বিজয়া দশমীতে বিজয় লাভের সংকল্প নিয়ে হয় এই পুজো। পণ্ডিত রঘুনন্দনের লেখা তিথিতত্ব নাম গ্রন্থে তার উল্লেখ রয়েছে। কৌটিল্য়ের অর্থশাস্ত্রে অনুযায়ী, দশমী তিথির পরেই যুদ্ধ যাত্রার সঠিক সময় হিসেবে বেছে নিতেন। তাই সেই সময়ে যুদ্ধে অপরাজিত থাকার জন্য পুজো করা হত মা অপরাজিত-কে। যা দুর্গার আরেক রূপ। এই পুজর পরেই রাজা যুদ্ধ জয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হতেন।
আরও পড়ুন- হাতানাতে ফল পেতে, দুর্গাপুজোয় অর্ঘ্য দানে মেনে চলুন এই নিয়মগুলি
অনেক ক্ষেত্রেই সাদা অপরাজিতা গাছকে দেবীরূপে পুজো করা হত। অনেকে আবার ঘট স্থাপন করেও সারতেন পুজো। এই পুজোর উদ্দেশ্যেই আবার পুজোর দিনেই নতুন অপরাজিত গাছের চারা রোপণ করা হত। রাজ্য়ের মঙ্গল কামনায় যুদ্ধে বিজয় লাভের উদ্দেশ্যে দশমীতে বিসর্জনের পর সেই সময় থেকেই সূচণা হয় অপরাজিতা পুজার। বর্তমানে এই পুজোর জনপ্রিয়তা কমে এলেও, বহু বেনদি বাড়িতে এখনও রয়েছে এই পুজোর প্রচলন।