স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি লিখে রাজীব কুমার জানালেন, তিনি ২৪ তারিখ পর্যন্ত ক্যাজুয়াল লিভ চাইছেন। গ্রেফতারি এড়াতে, পরামর্শ নেওয়ার জন্য এই দু'দিন তিনি কলকাতায় থাকতে চান। প্রসঙ্গত কলকাতায় নজিরবিহীন নৈরাজ্যের কারণে ৩২৪ ধারা জারি হওয়ার পরেই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজীব কুমারকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল। তাঁকে সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল।
এরই মধ্যে ১৭মে সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই-এর মামলায় রাজীব কুমারের ওপর থেকে রক্ষাকবচ তুলে নেয়। তিন মাস ধরে রাজীবকে গ্রেফতার করতে চাইছে সিবিআই। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা রাজীবের সহায় হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট,১৭ তারিখ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, এবার চাইলে সিবিআই রাজীবকে গ্রেফতার করতে পারে। ৭ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয় রাজীবকে।
এরপরেও রাজিব আবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে সময় ভিক্ষা করেন। জানান যে, কলকাতায় আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলার কারণে তিনি কোনও রকম আইনী সাহায্য পাচ্ছেন না। সুপ্রিম কোর্টে রাজীবের আর্জি ছিল, তাঁর জামিনের সময় বাড়ানো হোক। সেই আর্জিও সুপ্রিম কোর্ট শোনেনি।
রাজীবের প্রাপ্য ৭ দিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ মে। তার দু'দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিয়ে রাজিব দু'দিনের জন্য আইনি পরামর্শের কারণে কলকাতায় যাওয়ার অনুমতি চাইছেন।
স্বরাষ্ট্রন্ত্রকের বক্তব্য, রাজীবের এই চিঠিটি নির্বাচন কমিশনের বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।
সারদা মামলায় রাজীব কুমারকে প্রথম সমন পাঠানো হয় ২০১৭-র ১৬ অগস্ট। রাজীব সেই সময়ে জানিয়েছিলেন, ছট ও দুর্গাপুজোর ব্যবস্থা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তিনি হাজিরা দিতে পারবেন না। পুজোর পরে ২৩ নভেম্বর রাজীব কুমারকে ফের তলব করা হয়। কিন্তু সে বারও তিনি আসেননি। তখনই কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমারের লাউডন স্ট্রিটের বাড়িতে সিবিআই যায়। রাজীব কুমারের সিবিআই জেরা ঠেকাতে আসরে নামেন মুখ্যমন্ত্রী। তবু জেরা আটকানো যায়নি। শিলংয়ে পাঁচ দিনের টানা জেরা সামলাতে হয়েছে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারকে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। শেষে সর্বোচ্চ আদালত বলে, ২০ তারিখ পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না রাজীব কুমারকে।
কিন্তু হাল ছাড়েনি সিবিআই বরং আদাজল খেয়ে নেমে পড়েন অফিসাররা। তাঁদের মামলাতেই গত মঙ্গলবার রাজীব কুমারকে দেওয়া নিজেদের রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে নিয়েছে শীর্ষ আদালত। যার ফলে রাজীবকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে পারবে সিবিআই।