দিনের পর দিন বিভিন্ন দাবি যেমন সন্তানদের শিক্ষা, তাঁদের পেশার স্বীকৃতি, পেনশন এগুলি অসম্পূর্ণই থেকে গিয়েছে। সমাজ থেকে তাঁদের ব্রাত্য করে রাখার প্রবণতা এবং প্রতিশ্রুতি পেয়েও বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে গিয়েছেন তাঁরা।
দেশ জুড়ে লোকসভা ভোটের দামামা বাজছে। চায়ের দোকান থেকে অফিস কাছারি, কে কাকে ভোট দেবে এই নিয়ে চলছে তুমুল তর্জমা। কিন্তু সোনাগাছির যৌনকর্মীরা সবাই একই জায়গায় ভোট দিচ্ছেন। না কোনও রাজনৈতিক দলকে নয়। তাঁরা বেছে নিয়েছেন নোটা (নান অফ দি অ্যাবভ)-কে।
দিনের পর দিন বিভিন্ন দাবি যেমন সন্তানদের শিক্ষা, তাঁদের পেশার স্বীকৃতি, পেনশন এগুলি অসম্পূর্ণই থেকে গিয়েছে। সমাজ থেকে তাঁদের ব্রাত্য করে রাখার প্রবণতা এবং প্রতিশ্রুতি পেয়েও বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে যাওয়ার ফলেই কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোট দিতে চান না যৌনকর্মীরা। পরিষ্কার বক্তব্য যৌন কর্মী সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির।
২০১৬-য় বিধানসভা ভোটের সময়েও এই সোনাগাছি-সহ বাংলার অধিকাংশ যৌনকর্মীরা নোটা-কেই বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু এই ক্ষোভ তো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি। কিন্তু কেন বিজেপি-কেও ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে চাইছেন যৌনকর্মীরা।
মোদী সরকারের নোট বাতিল প্রক্রিয়ার ফলে যাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম যৌনকর্মীরা। যৌনকর্মীদের পুরো টাকার লেনদেনটাই ক্যাশ টাকার মাধ্যমে হয়। ফলে ৫০০ ও ১০০০-এর নোট রাতারাতি বাতিল হওয়ায় রীতিমতো জলে পড়েছিলেন যৌনকর্মীরা। তাই নোটা-কে শুধু সোনাগাছি-র যৌনকর্মীরাই নয়। অল ইন্ডিয়া নেটওয়ার্কঅফ সেক্স ওয়ার্কার এর সিদ্ধান্ত এটা। পশ্চিমবঙ্গ-সহ আরও ১৬টি রাজ্যের যৌনকমীর্রাই কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোট দিতে ইচ্ছুক নন। দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সরজিৎ জানা এমনই জানান।
দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির সেক্রেটারি কাজল বসু জানিয়েছেন, প্রত্যেকবারই প্রার্থীদের দাবির কথা জানান। কিন্তু সব সময়েই তা অসর্ম্পূণ থেকে যায়। এবারেও একই ঘটনা ঘটলে নোটা-তেই তাঁরা ভোট দেবেন।
সম্প্রতি দুর্বারের ৪৮টি শাখার মধ্যে মূল সাতটি এলাকা- খিদিরপুর, কালীঘাট, লোখার মাঠ, উল্টোডাঙা, চেতলা, বউবাজার, সোনাগাছি-র সদস্যরা এই মর্মে নিজেদের মধ্যে একটি মিটিং করে। তাঁদের একটাই সিদ্ধান্ত, তাঁরা আর মিথ্যে প্রতিশ্রুতির শিকার হতে চান না।