জমি কামড়ে লড়ছে বিজেপি, ডিভিডেন্ট দিল তৃণমূলের ভুল আর বিক্ষুব্ধ বাম

  • অন্য দিকে গেরুয়াদের পাখির চোখ বাংলাতেও মিলে যেতে শুরু হয়েছে পুর্বাভাস।  
  • ধীরে ধীরে সার-মাটি দিয়ে তৈরি করা জমিতে ফুটছে পদ্মফুল। 
arka deb | Published : May 23, 2019 8:50 AM IST / Updated: May 23 2019, 03:49 PM IST

চলছে ভোটগণনা। সারা দেশে ইতিমধ্যেই নিষ্প্রভ হতে শুরু করেছে অন্যান্যদের বাতি। সিংহগর্জন উঠছে গেরুয়া শিবিরকে। বোঝাই যাচ্ছে মেক ইন ইন্ডিয়া, স্বচ্ছ ভারতের মতো লগ্নিতে সুদ পেয়েছেন মোদী। আর ডিভিডেন্ট দিচ্ছে বালাকোটও। 

বহু রাজ্যে এখনও খাতাই খুলতে পারেনি কংগ্রেস। অন্য দিকে গেরুয়াদের পাখির চোখ বাংলাতেও মিলে যেতে শুরু হয়েছে পূর্বাভাস।  ধীরে ধীরে সার-মাটি দিয়ে তৈরি করা সেই জমিতেই ফুটছে পদ্মফুল। 

Latest Videos

দেখে নেওয়া যাক এই মুহূর্তে বাংলায় ঠিক কেমন জায়গায় রয়েছে বিজেপি

এই জায়গাগুলি বাদ দিলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে মেদিনীপুরে। সেখানে লড়াই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বনাম তৃণমূলের প্রার্থী মানস ভূুঁইয়ার। বেশ কয়েক রাউন্ডে দিলীপ ঘোষ এগিয়ে থাকার পরে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়েছেন। 

এ তো গেল সংখ্যাতত্ত্ব যার নিরিখে বলাই যায় এই রাজ্যে তুলনারহিত ফল করবে বিজেপি। কিন্তু গোটা দেশের বিজেপি ঝড় এবং বাংলার বিজেপি ঝড়ের চরিত্র আলাদা। গোটা দেশ যখন মোদী করিশ্মাকে ভোট দিয়েছে। তখন বাংলায় বিজেপির উত্থানের নায়ক মোদী নন। 

নতুন সালের আগে বাংলায় একটি শব্দ জনপ্রিয় হতে শুরু করে- বিক্ষুব্ধ বাম। এরা পার্টিলাইনের ত্রুটি বিচ্যুতির সমালোচনা করেছে। শুদ্ধিকরণের চেষ্টাও ততদিনে মুখ ধুবড়ে পড়েছে। দেখা যায় লাল দুর্গে তৃণমূলের বীজ চারা হয়ে মাথা তুলছে।  এই বিক্ষুব্ধ সিপিএম এবং তাঁদের দ্বারা প্রভাবিত মানুষের ভোটটাই ২০১১ সালের সময় থেকে তৃণমূলের কাছে পয়মন্ত হয়েছিল। সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই হাতে ফায়দা কুড়িয়েছিলেন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের মত ঘটনাগুলির।

এবারও বাংলায় এই পটপরিবর্তনের নেপথ্যে রয়েছে এই বিক্ষুব্ধ সিপিএম থুড়ি বামেরা। তথ্য বলছে নিজেদের ভোট ব্যঙ্ক অনেক জায়গাতেই অক্ষুন্ন রাখতে পেরেছেন , এই লেখা যখন লেখা হচ্ছে তখন তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় ১ লক্ষের বেশি মার্জিনে জিতে গিয়েছেন নিজের কেন্দ্রে। কিন্তু তৃণমূলের বিরোধীতা করার স্বার্থে বামেরা ঝুলি উপু়ড় করে  ভোট দিয়েছেন রামের ধ্বজাধারীদের। 

এই রাজ্যে বিধানসভায় বামেরা নিস্প্রভ হলেও তাঁদের যে জনসমর্থন রয়েছে তা বোঝা গিয়েছিল শেষ ব্রিগেডেও। যে বিপুল পরিমাণ মানুষ দেবলীনা হেমব্রেমের কথা শুনে উজ্জীবিত হয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন,তার প্রতিফলন ইভিএমে পড়লে বিজেপি রাজ্যে এতটা জায়গা পেত না।

অনেকে বলছেন তৃণমূলের ক্রমবর্ধমান নৈরাজ্য, পাড়ায় পাড়ায় সিন্ডিকেটের দাপাদাপি, এসএসসি কেলেঙ্কারি, সারদা কাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানাবিধ সক্রিয়তা দেখে, জেলায়-জেলায় পাড়ায় পাড়ায় মানুষ আসলে ভোট দিয়েছে তৃণমূলকে বার্তা দিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেনা পাওয়ানার রাজনীতি, ত্রিফলা-প্রাইমারি-নারদা এই সব ইস্যুগুলি অনুগত ভোটারকে টলাতে পারেনি। রাজ্যে যখন ১৯ টি আসনে হাড্ডাহাড্ডি  লড়াই দিচ্ছে বিজেপি তখন তৃণমূলের ভোটের শতাংশ কমেনি বরং বেড়েছে। কিন্তু পাইয়ে দেওয়া এই রাজনীতির বিরুদ্ধে 'সাবোতাজ'-এর ঢং-এ  বিজেপির জন্যে দরজা খুলে দিয়েছে বামেরাই। না হলে গণনার দিন বিকাশ ভট্টাচার্যের মতো প্রশ্নাতীত ভাবে যোগ্য প্রার্থীকে কেন ফিকে লাগে অনুপম হাজরার মতো বিতর্কিত, অপেক্ষাকৃত নতুন প্রার্থীর কাছে?

কেউ বলছেন এই ভোট অবৈধ কৌশল আর পেশিশক্তির বিরুদ্ধে গেল নতুনকে বাজিয়ে দেখার জন্যে। কেউ বলছে ব্রুটাস তুমিও, কেউ বলছে মীরজাফর, কারও কারও মত দীর্ঘমেয়াদি গ্লেমপ্যান।  তবে একথাও ঠিক বাম মনোভাবাপন্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি, মমতার ক্লাব-সিন্ডিকেট-কেডস-সাইকেল উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে যারা পড়েন না, চটছিলেন তাঁরা। এরাই ভেবেছেন প্রথম কর্তব্য মমতার সরকারের বিপদঘণ্টা নাড়িয়ে দেওয়া। এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছেন তাঁরা শিকড়ে টান দিতে। আর জেলায় জেলায় বিজেপির সংগঠিত প্রচার কৌশল তো ছিলই।

সারা দেশে গেরুয়াঝড় তাই আপাতত বাংলাতেও বইছে। তবে তা তাপপ্রবাহ না কালবৈশাখী তা বুঝতে অপেক্ষা করতে হবে। বামেদের রামভক্তির জেরে রাজ্যের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে কতটা স্বাভাবিক থাকে তাও সময় বলবে। দিল্লি বহুত দূর, বিধানসভা দূরে নয়।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

লজ্জা মমতার! জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য এই বাংলা!| Suvendu Adhikari #shorts #shortsvideo #suvenduadhikari
PM Modi Live : কুয়েতে Gulf Spic-এর ভারতীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা মোদীর, দেখুন সরাসরি
পুলিশের তৎপরতায় বানচাল ডাকাতির প্ল্যান! গ্রেফতার ২ অপরাধী, চাঞ্চল্য Birbhum-এ
Suvendu Adhikari: 'কত বড় জিহাদি, রামনবমীর মিছিলে ঢিল মেরে দেখাও', হুঙ্কার শুভেন্দুর
খাদান নিয়ে Dev কে বিশ্রী আক্রমণ রাজের, দেবের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা দিলেন Aritra Dutta Banik